রায়হান উদ্দিন সুমন, বানিয়াচং থেকে ॥ বানিয়াচংয়ে হঠাৎ করেই হাটবাজার থেকে উধাও হয়ে গেছে পেঁয়াজ। সৃষ্টি করা হচ্ছে পেঁয়াজের কৃত্রিম সংকট। বেশি লাভের আশায় গুদামজাত করা হচ্ছে ক্রেতারা এমন অভিযোগই আনছেন ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে। করোনা ভাইরাসের আতঙ্ককে পুঁজি করে এক শ্রেণির অসাধু ব্যবাসায়ীরা পেঁয়াজের দাম বাড়িয়ে এই নীতিহীন কাজ করছেন বলে অভিযোগ ক্রেতাদের। ফলে পেঁয়াজ কিনতে আসা ক্রেতারা না পেয়ে ব্যর্থ মনোরথে ফিরে যাচ্ছেন।
জানা যায়, করোনা ভাইরাসে অজুহাত দেখিয়ে কয়েকদিন আগ থেকেই বাজারের ব্যবসায়ীরা নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের সাথে পেঁয়াজ নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বেশি মূল্যে বিক্রি করছেন এমন অভিযোগে বানিয়াচংয়ের প্রতিটি হাটবাজারে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মামুন খন্দকার। গত বৃহস্পতিবার কিছু অসাধু ব্যবসায়ীদের জরিমানাও করেন তিনি। ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করার পরপরই কিছু ব্যবসায়ী প্রতি কেজি পেঁয়াজ ৮০ থেকে ৯০ টাকায় বিক্রি করেন। যা কয়েকদিন আগেও কেজি প্রতি ৪০ থেকে ৪৫টাকায় বিক্রি করা হয়েছিল। সরেজমিনে শুক্রবার সকালে কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখায় যায়, দোকানে পেঁয়াজ নাই। পেঁয়াজ আছে কি-না জিজ্ঞাস করলে তারা জানান দোকানে পেঁয়াজ নাই। গতকাল তো দেখলাম অনেক পেঁয়াজ ছিল সেগুলো কই? প্রশ্নের জবাবে তারা জানান, সব বিক্রি হয়ে গেছে। আর দাম বাড়তি থাকায় আমরাও আর পেঁয়াজ আমদানি করছি না। পেঁয়াজ কিনতে আসা ক্রেতা সজিবুর রহমান জানান, ব্যবাসায়ীরা পেঁয়াজ থাকা সত্ত্বেও তা বিক্রি করছেন না। সব তাদের গুদামে লুকিয়ে রেখেছেন। বেশি দামে পরে বিক্রি করবে।
বানিয়াচং বড়বাজারে পেঁয়াজ কিনতে আসা গৃহিনী সুফিয়া খাতুনের সাথে কথা হলে তিনি জানান, কয়েকটা দোকানে গেলাম সবাই বলছে পেঁয়াজ নাই। থাকলেও নাকি দাম বেশি বলে জানান ব্যবাসয়ীরা। তবে তিনি দোকানের নাম বলতে পারেননি। শিক্ষক সামসুদ্দিন আহমেদ জানান, ভ্রাম্যমান আদালত যখন পরিচালনা করা হয় তখন দাম কমই থাকে। আবার তারা চলে যাওয়ার পরে দাম আগের জায়গায় চলে আসে। তবে এই বিষয়ে স্থানীয় বাজার কমিটির নেতৃবৃন্দ যদি আরো কার্যকর পদক্ষেপ নেন তাহলে কিছুটা কাজে আসতে পারে। এক কথায় সুষ্ঠু তদারকি করতে হবে ব্যাবসায়ী নেতৃবৃন্দকে।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মামুন খন্দকার জানান, বানিয়াচংয়ের কোনো হাটবাজারে দ্রব্যমূল্যের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করা যাবে না। যে সব ব্যবসায়ী পেঁয়াজ বিক্রি না করে গুদামজাত করছেন তাদেরকে খোঁজে বের করে ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে আইনের আওতায় আনা হবে। তিনি আরো জানান, বাজারে খাদ্যদ্রব্যের কোন সংকট নেই।