মুজিববর্ষ উপলক্ষে হবিগঞ্জের ৯ উপজেলায় মেডিকেল ক্যাম্প করার ঘোষণা দিলেন জেলা প্রশাসক
মঈন উদ্দিন আহমেদ ॥ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দর্শন ছিল জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠা করার মাধ্যমে অর্থনৈতিক মুক্তি অর্জন। ক্ষুধা, দারিদ্র ও বৈষম্যমুক্ত রাষ্ট্র বিনির্মাণে বঙ্গবন্ধু লড়াই-সংগ্রাম করে গেছেন। তিনি ছিলেন আপোষহীন। অন্যায়ের কাছে তিনি কখনো মাথা নত করেননি। আর সে কারণেই তিনি আমাদেরকে মহান স্বাধীনতা এনে দিতে পেরেছেন। জাতির পিতার দর্শন থেকে তরুণ প্রজন্মকে শিক্ষা গ্রহণ করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, আমাদের আগামী প্রজন্মকে যেমন মুক্তিযোদ্ধাদের ত্যাগ ও বীরত্বের কাহিনী জানাতে হবে, ঠিক তেমনই হানাদার ও তাদের দোসর রাজাকার, আল-বদর, আল শামসের হত্যা, নারী নির্যাতন, দমন, পীড়ন আর তাদের পৈশাচিকতা সম্পর্কেও অবহিত করতে হবে। যাতে করে তারা উভয়পক্ষের কথা জেনে সামগ্রিক মুক্তিযুদ্ধকে বুঝতে পারে। না হলে তারা মুক্তিযোদ্ধাদের আত্মত্যাগ আর বীরত্বের কথা ভুলে যাবে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম শতবর্ষ (মুজিববর্ষ) ও ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা এবং জাতীয় দিবস উদযাপন উপলক্ষে সময়াবদ্ধ কর্ম পরিকল্পনা প্রণয়ন এবং বাস্তবায়নে লক্ষে আয়োজিত প্রস্তুতিমূলক সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি এমপি অ্যাডভোকেট মোঃ আবু জাহির এসব কথা বলেন। বুধবার বেলা আড়াইটায় জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুল হাসানের সভাপতিত্বে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় বীর মুক্তিযোদ্ধা, জনপ্রতিনিধি, সরকারি কর্মকর্তা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, সাংবাদিকসহ বিভিন্ন পর্যায়ের লোকজন অংশ নেন।
সভায় জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুল হাসান বলেন, যথাযোগ্য মর্যাদায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম শতবর্ষ (মুজিববর্ষ) ও ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা এবং জাতীয় দিবস রাষ্ট্রীয়ভাবে পালনের নির্দেশনা রয়েছে। মুজিববর্ষ পালন উপলক্ষে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের দৃষ্টিনন্দন স্থানে ‘মুজিববর্ষ সমন্বয় কক্ষ’ স্থাপন করা হয়েছে। ১৭ মার্চ আনুষ্ঠানিকভাবে মুজিববর্ষ সমন্বয় কক্ষ উদ্বোধন করা হবে। এ কক্ষে বঙ্গবন্ধুর ১০০ দুর্লভ ছবি রাখা হবে। এর ভেতরে মুজিব কর্ণার রাখা হয়েছে। এতে বঙ্গবন্ধুর উপর লেখা এবং মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক বিভিন্ন বই রাখা হবে। তাতে বসার জন্য বেঞ্চও রাখা হবে যাতে স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীরা এখানে এসে বসে বই পড়তে পারে। বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানতে পারে।
তিনি আরও জানান, জাতির পিতার সান্নিধ্যে হবিগঞ্জের যারা কাজ করেছেন তাদের সম্মাননা প্রদান করা হবে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম শতবর্ষ স্মরণীয় করে রাখতে ১৭ মার্চ থেকে সারা দেশে বছর ব্যাপী অনুষ্ঠান মালা পালন করা হবে।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুল হাসান বলেন, জাতীয় পতাকা একটি দেশের আবেগ অনুভূতি ও সম্মানের জায়গা। তাই ২৬ মার্চসহ অন্যান্য দিবসে যেগুলোতে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করতে হয় ওইসব দিবসে সঠিক মাপ ও রঙের জাতীয় পতাকা উত্তোলন করতে হবে। তিনি জানান, মুজিববর্ষে ১৭ মার্চ সুর্যোদয়ের সাথে সাথে তোপধ্বনি, জাতীয় পতাকা উত্তোলন, জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ, কুচকাওয়াজসহ রয়েছে বর্ণাঢ্য আয়োজন। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে সকল শ্রেণি পেশার মানুষের অংশগ্রহণে বর্ণাঢ্য র‌্যালী। র‌্যালীটি নিমতলা কালেক্টরেট প্রাঙ্গণ থেকে বের হয়ে শহর প্রদক্ষিণ করবে। এতে সকলের অংশগ্রহণের আহবান জানান তিনি। এছাড়াও দিবসটি উপলক্ষে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে রয়েছে নানা প্রতিযোগিতা। আর প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের দেয়া হবে আকর্ষনীয় পুরস্কার। মুজিববর্ষ উপলক্ষে হবিগঞ্জের ৯টি উপজেলায় মেডিকেল ক্যাম্প করার ঘোষণা দেন জেলা প্রশাসক।