শামছুন্নাহার একমাত্র নারী যিনি দুটি ইউনিয়নে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন
আবুল কালাম আজাদ, চুনারুঘাট থেকে ॥ বংলাদেশের প্রথম নারী ইউপি চেয়ারম্যান, হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার মিরাশী ইউনিয়ন ও দেওরগাছ ইউনিয়নের ৩ বারের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব শামছুন্নাহার চৌধুরী (৬২) আর নেই। তিনি বৃহস্পতিবার রাত আড়াইটায় বারডেম হাসপাতালে ইন্তেকাল করেছেন (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। মৃত্যুকালে তিনি ২ ছেলে, ৫ মেয়ে, স্বামীসহ আত্মীয় স্বজন রেখে গেছেন। তিনি চুনারুঘাট উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মোঃ আবু তাহের এর সহধর্মিনী। শুক্রবার বাদ আছর হাজী আলীম উল্লাহ আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।
এতে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান সৈয়দ লিয়াকত হাসান, সাবেক পৌর মেয়র নাজিম উদ্দিন শামছু, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আবু তাহের, সাবেক পৌর মেয়র সাইফুল আলম রুবেল, আওয়ামীলীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট আকবর হোসেন জিতু, উপজেলা জামায়াতের সাধারণ সম্পাদক ছায়েব আলী, পৌর জামায়াতের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলমসহ বিএনপি, আওয়ামীলীগ, জাপা, জামায়াতসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ অংশ নেন।
আলহাজ্ব শামছুন্নাহার চৌধুরীর প্রথম স্বামী মিরাশী ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী চুনু হত্যার পর তিনি মাত্র ২৮ বছর বয়সে ১৯৮৮ সালে প্রথম মিরাশী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। তখন তিনি দেশের প্রথম নারী ইউপি চেয়ারম্যান ছিলেন। প্রয়াত সিরাজুল ইসলাম আওয়ামী লীগ করতেন। নির্বাচিত হওয়ার পর তিনিও আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে আসেন। পরবর্তীতে তিনি পৌর শহরের চন্দনা গ্রামের মো: আবু তাহেরকে বিয়ে করেন। আবু তাহের উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন এবং তিনি দেওরগাছ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ছিলেন। পরবর্তীতে দেওরগাছ ইউনিয়নে ২০১১ সালে তিনি প্রথম ইউপি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। দ্বিতীয় মেয়াদে ২০১৬ সালে পুনরায় একই ইউনিয়নে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। ১৯৯৩ সালে তিনি হবিগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। হবিগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের মহিলা লীগের সহ-সভাপতি ও চুনারুঘাট উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি ছিলেন। তিনি জেলার শ্রেষ্ঠ ইউপি চেয়ারম্যান, নারী জাগরণে জয়িতা, সমাজ সেবায় অবদানে মাদার তেরেসা, অতিশ দীপংকারসহ বিভিন্ন জাতীয় ও স্থানীয় অনেক পুরস্কার পান। চেয়ারম্যানের পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক দায়িত্ব পালন করেছেন। কাজ করেছেন নারী উন্নয়নে।
আলহাজ্ব শামছুন্নাহার গত ৩ বছর ধরেই ক্যান্সারে আক্রান্ত ছিলেন। সর্বশেষ প্রায় দেড়মাস ভারতের চেন্নাইয়ে চিকিৎসাধীন ছিলেন। মৃত্যুর ৫দিন আগে তিনি দেশে আসেন এবং বারডেম হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। সেখানেই বৃহস্পতিবার রাতে ইন্তেকাল করেন।
তার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন চুনারুঘাটের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ। প্রয়াত শামছুন্নাহারের ৪ মেয়ে লন্ডন এবং এক ছেলে লন্ডনে বসবাস করছেন। বাকি এক ছেলে ও এক মেয়ে দেশে লেখাপড়া করছেন। তার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান সৈয়দ লিয়াকত হাসান, সাবেক মেয়র নাজিম উদ্দিন শামছু, চুনারুঘাট প্রেসক্লাবের সভাপতি ফারুক উদ্দিন চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক সাজিদুর রহমান, চুনারুঘাট রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি নুরুল আমিন, সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ, বিভিন্ন ইউপি চেয়ারম্যানসহ বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
© স্বত্ব দৈনিক হবিগঞ্জের মুখ ২০১৯
ওয়েবসাইটটি তৈরী করেছে ThemesBazar.Com