বৃন্দাবন দাসের মা মহামায়া দাস বলেছিলেন আমার ছেলের নামে কলেজের নামকরণ করা হলে এর মাঝেই আমি বেঁচে থাকবো
মঈন উদ্দিন আহমেদ ॥ হবিগঞ্জ শহরের প্রবীণ ব্যক্তিত্ব বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ অধ্যক্ষ নিখিল ভট্টাচার্য্য আরো জানান, নদীয়া চাঁদ চৌধুরী বিথঙ্গল যাওয়ার পর আখড়ার মোহন্তের কাছে বৃন্দাবন দাসের পরিবার সম্পর্কে জানতে চান। তখন মোহন্ত আখড়ার পশ্চিম পাশের বাড়িটি বৃন্দাবন দাসের বলে দেখিয়ে দেন। সকালে নদীয়া চাঁদ চৌধুরী বৃন্দাবন দাসের সাথে দেখা করতে তার বাড়িতে যান। এ সময় তিনি বৃন্দাবন দাসের বাড়িতে যেতে বানিয়াচং ৯ আনী ও ৭ আনী জমিদারকে খবর পাঠান। খবর পেয়ে জমিদাররা তার কাছে এলে তিনি তাদের প্রণাম করে তার সাথে যেতে অনুরোধ করেন। এর জবাবে তারা জানান, বৃন্দাবন দাস ভীষন কঠিন লোক। তিনি এক আনা পয়সাও দিতে রাজি হবেন না। তবে নদীয়া চাঁদ চৌধুরীকে পুকড়ার উকিল সাহেব বলেছিলেন বৃন্দাবন দাস খুব মাতৃভক্ত লোক। তাই তিনি বৃন্দাবন দাসের বাড়িতে গিয়ে তার মায়ের নামে কলেজ করার প্রস্তাব দেন। প্রথমে বৃন্দাবন দাস এ প্রস্তাবে রাজি হননি। পরে তিনি মাকে জিজ্ঞেস করার কথা বলে ঘরের ভেতরে যান। বৃন্দাবন দাসের মা ছিলেন মহামায়া দাস। বৃন্দাবন দাস ছিলেন মায়ের একমাত্র সন্তান। তাই সন্তানের এ প্রস্তাবে তিনি সম্মতি দেন। মহামায়া দাস বৃন্দাবন দাসকে বলেন, শিক্ষার জন্য অর্থ দেয়া মহা পূণ্যের কাজ। মায়ের এ কথা শুনে বৃন্দাবন দাস মাকে ভক্তি করে এসে কলেজ প্রতিষ্ঠায় টাকা দিতে রাজি হন। তিনি এসে জানান, কলেজ প্রতিষ্ঠার জন্য তিনি টাকা দেবেন, তবে কলেজের নাম হবে তার মায়ের নামে। বৃন্দাবন দাসের কথা শুনে তার মা মহামায়া দাস বলেন, আমার নামে নয় কলেজের নাম হবে আমার ছেলের নামে। আমার ছেলের নাম বৃন্দাবন আমি রেখেছিলাম। তাই এই নামে কলেজের নামকরণ করা হলে এর মাঝেই আমি বেঁচে থাকবো।
© স্বত্ব দৈনিক হবিগঞ্জের মুখ ২০১৯
ওয়েবসাইটটি তৈরী করেছে ThemesBazar.Com