অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শহিদুল হক মুন্সি বললেন, আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই দেয়া হতে পারে তদন্ত প্রতিবেদন
স্টাফ রিপোর্টার ॥ চুনারুঘাট থানার ওসি মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম এর বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসীকে মামলার ভয় দেখিয়ে ২ লাখ টাকা চাঁদাবাজির অভিযোগ উঠার পর জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে গঠিত হয় তদন্ত কমিটি। ইতোমধ্যে তদন্ত কমিটি তাদের কার্যক্রম অনেকটাই এগিয়ে নিয়েছে। আগামী দু’এক দিনের মধ্যেই তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন তদন্ত কমিটির প্রধান হবিগঞ্জ সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ শহিদুল হক মুন্সি।
এর আগে চুনারুঘাট থানার ওসি মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম ও এক বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসীকে মামলার ভয় দেখিয়ে ২ লাখ টাকা চাঁদাবাজির অভিযোগ উঠে। বিএনপি নেতা উপজেলার গাজীপুর ইউনিয়নের ৫নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন। তবে চাঁদাবাজির অভিযোগ অস্বীকার করেছেন চুনারুঘাট থানার ওসি মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম। স্থানীয়দের দাবি, ঘটনা ধামাচাপা দিতে অভিযুক্ত বিএনপি নেতা দেলোয়ার হোসেন ওরফে কবিরকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠান ওসি।
প্রসঙ্গত, গত ২৬ নভেম্বর উপজেলার গোবরখলা গ্রামের বাসিন্দা ও যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী সুজাতুল হক ভূঁইয়া পরিবারের সদস্যদের নিয়ে আমেরিকা যান। বিষয়টি জানতে পারেন চুনারুঘাট থানার ওসি মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম। তিনি যুক্তরাষ্ট্র যাওয়ার আগের দিন সুজাতুলকে থানায় এসে তাঁর সাথে দেখা করতে বলেন। ওসি ফোনে বলেন, সুজাতুলের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ আছে। তিনি দেশের বাইরে যেতে পারবেন না। এসব শুনে সুজাতুল তাঁর এক আত্মীয়কে থানায় পাঠান। ওসি ওই আত্মীয়কে বলেন, সুজাতুল দেশে বালু ও আগর ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। তিনি তাঁদের খুশি না করে চুপিচুপি বিদেশ যেতে পারবেন না। এ কথা শুনে সুজাতুল ওসির সাথে যোগাযোগ করেন। তখন তিনি ওসির কাছে জানতে চান তাঁর ওপর কোনো মামলা আছে কি না? তখন ওসি বলেন, ‘মামলা নেই, তবে মামলা হতে কতক্ষণ। তখন ভয়ে সুজাতুল ওসির কথামতো ২ লাখ টাকা তাঁর ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের এক লোককে দিয়ে বিএনপি নেতা দেলোয়ার হোসেনের কাছে বুঝিয়ে দেন।
এদিকে সুজাতুল হক যুক্তরাষ্ট্র গিয়ে গত ২ ডিসেম্বর পুলিশের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার কাছে মৌখিকভাবে বিষয়টি নিয়ে অভিযোগ করেন। খবর পেয়ে হবিগঞ্জের পুলিশ সুপার রেজাউল হক খান চুনারুঘাট থানার ওসির কাছে ঘটনার বিষয়ে জানতে চান। তখন ওসি তাঁকে বলেন, দেলোয়ার তাঁর নাম ভাঙিয়ে এ টাকা নিয়ে থাকতে পারে। পরে পুলিশ সুপারের নির্দেশে গত মঙ্গলবার রাতে দেলোয়ারকে তাঁর বাড়ি থেকে আটক করে চুনারুঘাট থানা পুলিশ। পরে তাকে আদালতে সোপর্দ করা হয়।
এ ব্যাপারে সুজাতুল হক জানান, ঘটনাটি প্রকাশের পর ওসি আমাকে পুনরায় ফোন করে অভিযোগ না করার অনুরোধ করছেন। তিনি বলেন, আমি পুলিশের ঊর্ধ্বতন একজন কর্মকর্তাকে বিষয়টি মৌখিকভাবে জানিয়েছি। তিনি কি ব্যবস্থা নেন সেই অপেক্ষায় আছি।