দুই স্কুলে শিক্ষকতা করে সুবিধা ভোগ করছেন তার স্ত্রী ফাতেমা
স্টাফ রিপোর্টার ॥ হবিগঞ্জ শহরতলীর বড় বহুলায় অবস্থিত এডভোকেট আবু জাহির উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আসাদুজ্জামান আসাদের বিরুদ্ধে প্রকল্পের টাকা আত্মসাতসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। শুধু তাই নয়, তার স্ত্রী ফাতেমা আক্তার দুই স্কুলে শিক্ষকতা করে সুবিধা ভোগ করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় বিভিন্ন দপ্তরসহ সেনাবাহিনীর কাছে অভিযোগ করেছেন এলাকাবাসী।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, এডভোকেট আবু জাহির উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আসাদুজ্জামান আসাদের স্ত্রী ফাতেমা আক্তার স্বামীর ক্ষমতাবলে একই সময়ে দুই প্রতিষ্ঠানে চাকরি করছেন এবং বেতন ভাতাদিসহ বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা ভোগ করছেন। তিনি শহরের রাজনগর এলাকাস্থ বিয়াম ল্যাবরেটরি স্কুলের শিক্ষিকা ও এডভোকেট আবু জাহির উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা (গণিত ও সাধারণ বিজ্ঞান) পদে দীর্ঘ ৯ বছর যাবত চাকুরী করে আসছেন। জনতা ব্যাংকের সঞ্চয়ী হিসাব নম্বর ০১০০১০২৩১২২০৬ এ এডভোকেট আবু জাহির উচ্চ বিদ্যালয়ের বেতন সুবিধা নিচ্ছেন। এ নিয়ে সচেতন মহলে ব্যাপক প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে।
জানা যায়, শিক্ষিকা ফাতেমা আক্তার এডভোকেট আবু জাহির উচ্চ বিদ্যালয়ে ম্যানেজিং কমিটিতে শিক্ষকদের প্রতিনিধি না করে স্কুলের কম্পিউটার ল্যাব অপারেটর মোঃ জানে আলম ও খন্ডকালীন শিক্ষক রেখা আক্তারকে শিক্ষক প্রতিনিধির দায়িত্ব দেন। ওই দুইজনকে নিয়ে স্কুলের বিভিন্ন প্রকল্পের টাকা উত্তোলন করে স্কুলের কাজে ব্যবহার না করে আত্মসাত করেন। চাকুরী দেয়ার নামে বিভিন্ন জনের কাছ থেকে হাতিয়ে নিয়েছেন বিপুল অংকের টাকা। এছাড়াও শিক্ষার্থীদের জন্য বরাদ্দ ট্যাব বিতরণ না করে আত্মসাত করেছেন তিনি। প্রধান শিক্ষক আসাদুজ্জামান বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত মোস্তাক হত্যা মামলার আসামী হওয়ার পর পালিয়ে আত্মগোপনে থাকলেও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষকা অফিসারের মাধ্যমে তিনি ছুটিতে রয়েছেন এবং স্বপদে বহাল রয়েছেন। এ নিয়ে স্থানীয়দের মাঝে দেখা দিয়েছে প্রতিক্রিয়া।
স্থানীয়দের অভিযোগ, এডভোকেট আবু জাহির উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিসেবে দীর্ঘদিন ধরে দায়িত্ব পালন করছেন আসাদুজ্জামান আসাদ। এ সুযোগে তিনি ২০২৩-২০২৪ অর্থ বছরে ‘এডভোকেট আবু জাহির উচ্চ বিদ্যালয় এর উন্নয়ন’ প্রকল্পে ১ম পর্যায়ে (কাবিটা) ৩ লাখ টাকা বরাদ্দ আনেন। বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটি থাকা সত্ত্বেও তিনি নিজেই ওই প্রকল্পের সভাপতি হিসেবে টাকা উত্তোলন করেন এবং প্রকল্প বাস্তবায়ন না করে টাকা আত্মসাত করেন। এছাড়া একই অর্থবছরে ‘এডভোকেট আবু জাহির উচ্চ বিদ্যালয় এর গর্ত ভরাট ও গাইড ওয়াল নির্মাণ প্রকল্পে ৫ লাখ টাকা বরাদ্দ আসে। ১ম পর্যায়ে ওই (কাবিটা) প্রকল্পের সভাপতি মোঃ আঃ গনি’র মাধ্যমে টাকা উত্তোলন করে যোগসাজসে তিনি ওই টাকা আত্মসাত করেন। শুধু তাই নয়, বিদ্যালয়ে নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। শুধু তাই নয়, বিদ্যালয়ের পার্শ^বর্তী সরকারি পুকুর ক্ষমতার বলে নিজের দখলে নেন আসাদুজ্জামান। পরে তিনি এককভাবে বহুলা গ্রামের বাবর আলীর ছেলে জাহির মিয়ার কাছে ৩ বছর চুক্তিতে ১ লাখ ২০ হাজার টাকায় ওই পুকুর লিজ দেন।
© স্বত্ব দৈনিক হবিগঞ্জের মুখ ২০১৯
ওয়েবসাইটটি তৈরী করেছে ThemesBazar.Com