সরকার পরিবর্তনের সাথে সাথে বালু খেকোরা তাদের রাজনৈতিক রূপ পরিবর্তন করেছে

এম,এ আহমদ আজাদ, নবীগঞ্জ থেকে ॥ নবীগঞ্জ উপজেলার কুশিয়ারা নদী থেকে বালু উত্তোলন করতে ড্রেজারসহ সরঞ্জামাদি এনে রেখেছে একটি চক্র। এলাকাবাসীর অভিযোগ অবৈধভাবে কুশিয়ারা নদীর তীরে ৫টি জায়গায় ড্রেজার মেশিন ও পাইপ লাইন বসানো হয়েছে। বিগত সরকারের আমলেও আওয়ামীলীগের নেতাদের মাধ্যমে এসব জায়গায় অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করা হয়। সরকার পরিবর্তনের সাথে সাথে নতুন করে আবারও একটি চক্র বালু উত্তোলনের প্রস্তুতি নিয়েছে।
সরজমিনে সুত্র জানায়, নবীগঞ্জ উপজেলার কুশিয়ারা নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ তীরবর্তী ১৫/২০ কিলোমিটার এলাকা রয়েছে। এসব এলাকায় সরকার পরিবর্তনের সাথে বালু খেকোরা তাদের রাজনৈতিক রূপ পরিবর্তন করেছে। আগে যারা বালু উত্তোলন করেছে তাদের শুধু পরিচালক পরিবর্তন হয়েছে। নতুন করে পাইপ লাইন ও ড্রেজার মেশিন বসিয়েছে, ছাত্রলীগের এমরান এন্টারপ্রাইজ তারা নাম পরিবর্তন করে হয়েছে এ আর এন্টারপ্রাইজ, সোনার বাংলা এন্টারপ্রাইজ, মেসার্স মা এন্টারপ্রাইজ, রনি এন্টারপ্রাইজ, ওয়াহিদ এন্টারপ্রাইজ, আলী এন্টারপ্রাইজ নামে কয়েকটি প্রতিষ্ঠান পাইপ লাইন ও ড্রেজার মেশিন বসিয়েছে বালু উত্তোলনের জন্য। ওয়াহিদ এন্টারপ্রাইজ, এরআর এমরান এন্টারপ্রাইজ ও আলী এন্টারপ্রাইজের প্রোপাইটারগণের বক্তব্য হলো আমরা কয়েকদিনের মধ্যে বালু তোলার অনুমতি পাবো তাই অগ্রীম প্রস্তুতি নিয়েছি।
দীর্ঘদিন ধরে নবীগঞ্জের দীঘলবাক ইউনিয়নের কুশিয়ারা নদীর ভাঙ্গন অব্যাহত রয়েছে। ইতিমধ্যে কয়েক শত ঘরবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এমতাবস্থায় গত কয়েকদিন ধরে কসবা, দুর্গাপুর, পাহাড়পুর, পারকুল নতুন বস্তি, শেরপুর বাজারের কুশিয়ারা নদীর পশ্চিম তীরে ৫টি স্থানে বালুখেকো চক্র বালু উত্তোলন করতে বিশাল ড্রেজার পাইপলাইন স্থাপন করেছে। ভয়ংকর নদীভাঙ্গনের মাঝেও যদি ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন করা হয় তাহলে নদী তীরবর্তী দীঘলবাক, আউশকান্দি ইউনিয়নের ২৫টি গ্রাম, বিবিয়ানা পাওয়ার প্লান্ট, কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, মসজিদ, মন্দির নদীভাঙনে বিলীন হয়ে যাবে।
বালু যাতে উত্তোলন না করা হয় সেজন্য ব্যবস্থা গ্রহণে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন এলাকাবাসী।
এ ব্যাপারে দীঘলবাক ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ছালিক মিয়া জানান, কয়েকদিন ধরে একটা বালু খেকো চক্র বালু উত্তেলনের জন্য কুশিয়ারা নদীর তীরে বড় ড্রেজার ও অন্যান্য সরঞ্জাম রেখেছে। ইতিমধ্যে বালু উত্তোলনের জন্য সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। স্থাপন করা হয়েছে পাইপ লাইন। এলাকার অস্তিত্ব রক্ষার্থে তিনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সু-দৃষ্টি কামনা করেছেন।
আউশকান্দি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোঃ দিলাওয়ার হোসেন বলেন, শেরপুর এলাকায় একটি বিশেষ চক্র অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের জন্য ড্রেজার মেশিন ও পাইপ লাইন বসানোর কাজ সম্পন্ন করেছে। আমরা এসব অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধ করার জন্য দাবি জানাচ্ছি। আর না হয় এলাকায় নদী ভাঙ্গন তীব্র আকার ধারণ করবে ও সরকার হারাবে বড় অংকের রয়েলিটি।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অনুপম দাশ জানান, কুশিয়ারা নদী থেকে বালু উত্তোলনের জন্য নবীগঞ্জের কোথাও অনুমতি নেই। কোনভাবেই কুশিয়ারা নদী থেকে বালু উত্তোলন করতে দেয়া হবে না। বালু উত্তোলন করলে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হবে।