চুনারুঘাট প্রতিনিধি ॥ হবিগঞ্জের চুনারুঘাটে মুখে বিষ ঢেলে স্ত্রীকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। হবিগঞ্জ ২৫০ শয্যা জেলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বুধবার বিকেলে জমিলা খাতুন (৩০) নামে ওই নারী মারা গেছেন। তিনি চুনারুঘাট উপজেলার পাইকপাড়া ইউনিয়নের দৌলতখা আবাদ গ্রামের ফজলু মিয়ার স্ত্রী।
জমিলা খাতুনের ভাই তাহির মিয়া জানান, জমিলাকে হত্যা করে মুখে বিষ ঢেলে আত্মহত্যা বলে প্রচার করেছে স্বামী ফজলু মিয়া ও তার পরিবার। লাশ উদ্ধারের পর জমিলার পরিবার বুধবার রাতে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন সম্পন্ন করে। তিনি তার বোন জমিলাকে হত্যার বিচার দাবি করেন।
নিহত জমিলার পরিবার সূত্রে জানা যায়, প্রায় ১২ বছর পূর্বে দৌলতখা আবাদ গ্রামের মৃত ছইব উল্ল্যার মেয়ে জমিলার সাথে একই এলাকার সিরাজ মিয়ার ছেলে ফজলুর বিয়ে হয়। দাম্পত্য জীবনে সোহান মিয়া (১১) ও মিম (৭) নামে দুটি সন্তান রয়েছে তাদের। তাদের সংসার কিছু দিন সুখে শান্তিতে অতিবাহিত হলেও যৌতুকের জন্য জমিলাকে মারপিট করতো ফজলু মিয়া। সম্প্রতি ফজলু মিয়া যৌতুকের টাকা দাবি করে জমিলার কাছে। টাকা না দেওয়ায় তাঁর ওপর নির্যাতন শুরু করে। বিভিন্ন সময়ে জমিলাকে মারপিট করে স্বামী ফজলু মিয়া। গত বুধবার সকালে যৌতুকের টাকা নিয়ে জমিলার সাথে ফজলুর বাকবিতন্ডা হয়। একপর্যায়ে সে জমিলাকে বেধড়ক মারপিট করে। বড় ভাই চান মিয়ার দাবী তার বোনকে নির্যাতন করে মুখে বিষ ঢেলে আত্মহত্যা বলে প্রচার করা হয়। পরে স্থানীয়রা বিষাক্রান্ত অবস্থায় জমিলাকে হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। খবর পেয়ে হবিগঞ্জ সদর থানা পুলিশ লাশের সুরতহাল শেষে ময়নাতদন্তের পর মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে। এদিকে চুনারুঘাট থানার উপপরিদর্শক (এসআই) রফিকুল ইসলাম সদর থানার বার্তা পেয়ে বৃহস্পতিবার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। তিনি জানান, বুধবার সকালে গরুর ঘাস কাটা নিয়ে জমিলাকে মারধোর করেন স্বামী ফজলু মিয়া। পরে জমিলা অভিমান করে বিষপান করলে স্থানীয়রা উদ্ধার করে হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে তিনি মারা যান।
চুনারুঘাট থানার ওসি হিল্লোল রায় জানান, পুলিশ বিষয়টি তদন্ত করছে। এ ঘটনায় পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা করা হলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।