৯০-এর গণআন্দোলনের ছাত্রনেতাদের মতবিনিময়
বাংলাদেশের স্বাধীনতা-পরবর্তী ইতিহাসে সবচেয়ে দীর্ঘস্থায়ী ও দুর্বার গতিশীল আন্দোলন ছিল ৯০-এর স্বৈরাচার বিরোধী গণ-আন্দোলন। ১৯৮২ সালে এরশাদের ক্ষমতা দখলের পর থেকে ৯০-এর ডিসেম্বর পর্যন্ত এমন একদিনও যায়নি আমরা ছাত্রসমাজ হবিগঞ্জে মিছিল-সমাবেশ করিনি। আমরা তখন একটা কথাই বলতাম, এই আন্দোলন মানুষের ভাগ্য বদলের লক্ষ্যে, এই আন্দোলন গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে। মানুষে মানুষে সাম্য প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে তাই স্বৈরাচারকে উৎখাত করতে হবে। আজ এই মতবিনিময় সভায় বসে আমাদের মনে হচ্ছে, আমরা সেই উত্তাল আন্দোলনের দিনগুলোতে ফিরে গিয়েছি। আমাদের সেই সময়ের আন্তরিকতা ও সহযোদ্ধা-মনোভাবকে কাজে লাগিয়ে দেশের স্বার্থে বর্তমানেও কিছু ভূমিকা রাখতে চাই।
গত ১৯ এপ্রিল শুক্রবার সন্ধ্যায় হবিগঞ্জ শহরের শায়েস্তানগরে প্রবাসে মুক্তিযুদ্ধকালীন সংগঠক সামছউদ্দিন আহমেদ এমবিই’র বাসভবনে ৯০-এর গণআন্দোলনের ছাত্রনেতা ও কর্মীদের মিলনমেলায় আগত বক্তারা এসব কথা বলেন। স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের অন্যতম প্রধান ছাত্রনেতা সৈয়দ মোস্তাফিজুর রহমানের আহ্বানে ওইদিন সন্ধ্যায় এক সৌজন্য সাক্ষাৎ ও মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়। সভায় সে সময়কার বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মীরা বক্তব্য রাখেন ও স্মৃতিচারণে অংশ নেন। সৈয়দ মোস্তাফিজুর রহমানের স্বাগত বক্তব্যের পর আলোচনায় অংশ নেন সাবেক ছাত্রনেতা দেওয়ান মিনহাজ গাজী, নুরুল হুদা চৌধুরী শিবলী, মোহাম্মদ তাছাদ্দুক হোসেন বাহার, পীযূষ চক্রবর্তী, মোঃ তাজউদ্দিন আহম্মদ সুফি, ফয়সল আহমেদ, মোঃ নূরুজ্জামান তরফদার, জিয়াউল হাসান তরফদার মাহীন, প্রবাল কুমার মোদক, অনুপ কুমার দেব মনা, সৈয়দ কামরুল ইসলাম সেলিম, মোঃ শাহাদাত হোসেন সাদত, আব্দুল হান্নান মাহমুদ গাজী, মোঃ গোলাম রব্বানী, জামিল মোহাম্মদ, মোঃ নাজিম উদ্দিন সামছু, ফারুক আহমেদ, শাহ আব্দুল কাইয়ুম, শাহীন জুলফিকার, মাইকেল সরকার, চৌধুরী মোঃ জাফর ইকবাল, নিলাদ্রী শেখর পুরকায়স্থ টিটু, মোতাচ্ছিরুল ইসলাম, মোসাদ্দেক আজাদ, মোঃ আবু বকর সিদ্দিক, মোঃ তাজুল ইসলাম, তোফাজ্জল সোহেল, হারুন সিদ্দিকী, কাওছার হোসেন নিয়াজী, আসাদ আল আমিন চৌধুরী, সৈয়দ ফরহাদ প্রমুখ।
সমাপনী বক্তব্যে সাবেক ছাত্রনেতা সৈয়দ মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, সময়ের দ্রুততার কারণে আমরা সকল সংগঠনের ও জেলার বিভিন্ন স্থানের নেতাকর্মীদের আমন্ত্রণ জানাতে পারিনি। এ জন্য আমি আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করছি। পরবর্তী সভাগুলোতে আশা করছি সেটা করা সম্ভব হবে। একটি গণতান্ত্রিক ও সুশাসনমূলক সমাজ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে আমাদের যে দায়-দায়িত্বটুকু রয়েছে, নিজ নিজ অবস্থান থেকে সেটা পালন করতে হবে। সভায় ৯০-এর স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে সক্রিয় রাজনৈতিক দল ও ছাত্র সংগঠনের নেতৃবৃন্দ যারা প্রয়াত হয়েছেন, তাদের স্মরণে শোক প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়। প্রেস বিজ্ঞপ্তি