চোরের স্ত্রীসহ ৪ জন আটক ॥ পালিয়ে বেড়াচ্ছেন দীপক বণিক
স্টাফ রিপোর্টার ॥ হবিগঞ্জ শহরের ইনাতাবাদে ডাঃ এসএস আল আমীন সুমনের বাসা থেকে চুরি হওয়া ১৫ ভরি ৮ আনা স্বর্ণ উদ্ধার করেছে সদর থানা পুলিশ। তাছাড়া পৃথক অভিযান চালিয়ে চুনারুঘাটের আমুরোড হবিগঞ্জের কুখ্যাত চোর জুয়েলের শ্বশুর বাড়ি থেকে চোরাই মোটর সাইকেল, টিভি, ল্যাপটপসহ বিভিন্ন মালামাল উদ্ধার করেছে ডিবি পুলিশ। উদ্ধারকৃত মালামালের মধ্যে পুলিশের চুরি হওয়া মালামালও রয়েছে। তাছাড়া চুনারুঘাট থেকে চোর জুয়েলের স্ত্রীসহ ২ জন এবং শহরের বগলা বাজারের দীপক বণিকের স্ত্রীকে আটক করেছে পুলিশ। বৃস্পতিবার রাত প্রায় ১০টায় সদর থানার ওসি মাসুক আলীর নেতৃত্বে এসআই জুয়েলসহ একদল পুলিশ শহরের বগলা বাজারের বিশিষ্ট স্বর্ণ ব্যবসায়ী দীপক বণিকের বাসায় অভিযান চালায়। অভিযানকালে দীপক বণিকের বাসা থেকে ডাঃ এসএস আল আমীন সুমনের বাসা থেকে চুরি হওয়া ১৫ ভরি ৮ আনা ৩ রতি স্বর্ণ উদ্ধার করা হয়। এ সময় দীপক বণিকের স্ত্রী পিয়াসাকে আটক করে পুলিশ। অভিযানকালে ২নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোঃ জাহির উদ্দিন, সাংবাদিক মোহাম্মদ নাহিজসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও ব্যবসায়ীরা উপস্থিত ছিলেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেন ওসি তদন্ত এসআই জুয়েল ও ডাঃ এসএস আল আমিন সুমন।
এদিকে পৃথক অভিযান চালিয়ে চুনারুঘাটের আমুরোড হবিগঞ্জের কুখ্যাত চোর জুয়েলের শ্বশুর বাড়ি থেকে চোরাই মোটর সাইকেল, এলইডি টিভি, বেশ কয়েকটি ল্যাপটপ, অসংখ্য থ্রি পিছ, শাড়ি, পুলিশের চুরি হওয়া মালামালসহ বিভিন্ন মালামাল উদ্ধার করেছে ডিবি পুলিশ। এ সময় জুয়েলের স্ত্রী এবং উজ্জল নামে দুই জনকে আটক করা হয়। উজ্জলের কাছে জুয়েল তার চোরাই মোটর সাইকেলটি গচ্ছিত রেখেছিল। এ তথ্য নিশ্চিত করেন ডিবি’র ওসি আলআমিন।
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি শহরের ইনাতাবাদ এলাকায় বিশিষ্ট দন্ত চিকিৎসক ডাঃ এসএস আল আমীন সুমনের বাসার লকার ভেঙ্গে ১৬ ভরি স্বর্ণালঙ্কার ও নগদ সাড়ে ৩ লাখ টাকা চুরি করে নিয়ে যায় অজ্ঞাত চোরেরা। ডাঃ সুমন ইনাতাবাদ এলাকায় সাবেক পৌর কমিশনার রফিকুল বারী মামুনের পাঁচতলা বাসার নিচতলায় থাকেন। গত শুক্রবার (৮ এপ্রিল) তিনি স্বপরিবারে চুনারুঘাটে শ্বশুর বাড়ি বেড়াতে যান। রবিবার দুপুরে বাসায় ফিরে দরজার তালা খুলে ভেতরে প্রবেশের চেষ্টা করলে দেখতে পান ভেতর থেকে দরজা আটকানো। পরে দরজার ছিটকিনি ভেঙ্গে ভেতরে প্রবেশ করে দেখেন ঘরের জিনিসপত্র তছনছ অবস্থায় যেখানে সেখানে পড়ে আছে। তাছাড়া বাসার আলমিরা, ওয়ারড্রব, লকার ভাঙ্গা। লকারে রাখা ১৬ ভরি স্বর্ণালঙ্কার ও নগদ সাড়ে ৩ লাখ টাকা নেই। তাৎক্ষণিক তিনি বিষয়টি সদর থানা পুলিশকে অবগত করেন। খবর পেয়ে সদর থানার ওসি মাসুক আলী ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। পরে চোর গ্রেফতারে অভিযানে নামে সদর থানা পুলিশ। এদিকে এ ঘটনায় অজ্ঞাতনামাদের আসামী করে সদর থানায় মামলা দায়ের করেন ডাঃ সুমন। মালা দায়েরের পর কিছু ক্লুর সূত্র ধরে পুলিশ চোরাই মামলামাল উদ্ধার ও চোরকে গ্রেফতারে অভিযানে নামে। মেবোইল নম্বর ও সিসি টিভির ফুটেজ যাচাই বাছাই করে পুলিশ অভিযান চালিয়ে শহরের কোর্ট স্টেশন এলাকার স্বর্ণ ব্যবসায়ী মাস্টার কোয়ার্টারের বাসিন্দা শম্ভুকে আটক করে। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে আটক শম্ভু স্বীকার করেন তিনি প্রায় ১৫ ভরি ৯ আনা স্বর্ণ ৭ লাখ ২৮ হাজার টাকায় বগলা বাজারের দীপক বণিকের কাছে বিক্রি করেছেন। পরে ওই টাকা যে তাকে স্বর্ণ দিয়েছিল তাকে দিয়ে দিয়েছেন। তাঁর স্বীকারোক্তিতে পুলিশ শহরের বগলা বাজারের স্বর্ণ ব্যবসায়ী দীপক বণিকের বাসায় গিয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। পুনরায় আবার পুলিশ দীপক বণিকের সন্ধানে তাঁর বাসায় গেলে তাকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। তিনি কৌশলে বাসা ছেড়ে আত্মগোপন করেন।