স্টাফ রিপোর্টার ॥ ২০১৫ সালে পুলিশের দায়েরকরা একটি মামলায় আদালতে হাজিরা দিয়েছেন কারাবন্দি বিএনপি নেতা আলহাজ্ব জি কে গউছ। সোমবার হবিগঞ্জের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তাকে হাজির করা হয়। এ সময় দলীয় নেতাকর্মী সহ হাজারো মানুষ জি কে গউছকে একনজর দেখতে আদালত প্রাঙ্গণে হাজির জন।
আসামীপক্ষের আইনজীবী আফজাল হোসেন জানান- ২০১৫ সালে হবিগঞ্জ কারাগারে বন্দি থাকা অবস্থায় বিএনপি নেতা জি কে গউছকে ছুরিকাঘাতের ঘটনায় একটি মামলা দায়ের করে হবিগঞ্জ সদর থানা পুলিশ। এই মামলায় সোমবার ধার্য্য তারিখ থাকায় জি কে গউছকে আদালতে হাজির করা হয়। আগামী ৮ অক্টোবর মামলার পরবর্তী তারিখ নির্ধারণ করেছেন বিজ্ঞ বিচারক।
সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এএমএস কিবরিয়া হত্যা মামলায় হবিগঞ্জ কারাগারে বন্দি থাকা অবস্থায় ২০১৫ সালের ১৮ জুলাই পবিত্র ঈদুল ফিতরের নামাজ শেষে নিজ কক্ষে ফেরার পথে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সমবায় বিষয়ক সম্পাদক ও টানা ৩ বারের নির্বাচিত হবিগঞ্জ পৌরসভার পদত্যাগকারী মেয়র আলহাজ্ব জি কে গউছকে হত্যার উদ্দেশ্যে ছুরিকাঘাত করে একাধিক খুনের মামলার আসামী যুবলীগ কর্মী ইলিয়াছ মিয়া ওরফে ছোটন। এ ঘটনায় হবিগঞ্জ কারাগারের জেলার মোঃ শামীম ইকবাল বাদী হয়ে হামলাকারী ইলিয়াছকে একমাত্র আসামী করে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্ত শেষে ২০১৬ সালের ১৬ নভেম্বর আদালতে চার্জশিট দেন তদন্তকারী কর্মকর্তা সদর মডেল থানার এসআই সাহিদ মিয়া। আদালত ১০ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে গত ২০ জুলাই হবিগঞ্জের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ আবদুল আলীম রায় ঘোষণা করেন। রায়ে ইলিয়াছকে দেড় বছরের কারাদন্ডের আদেশ দেন। ইলিয়াছ শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার দাউদনগর গ্রামের সালেহ আহাম্মদ কনার পুত্র।
অপরদিকে একই ঘটনায় হবিগঞ্জ সদর থানার এসআই সানা উল্লা বাদী হয়ে পৃথক আরেকটি মামলা দায়ের করেন। এই মামলায় জি কে গউছকে আসামী করা হয়। মামলাটি দীর্ঘ ৮ বছর যাবত তদন্তাধীন রয়েছে। দীর্ঘ দিন পর এই মামলায় জি কে গউছকে গ্রেফতার দেখাতে আদালতে আবেদন করেন মামলার আইও (সদর থানার ওসি তদন্ত) বদিউজ্জামান। গত ৫ সেপ্টেম্বর শুনানী শেষে আদালত জি কে গউছকে এই মামলায় শ্যোন এরেস্ট দেখাতে আদেশ দেন। একই সাথে তাকে ডিভিশন-১ (প্রথম শ্রেণির বন্দির মর্যাদা) দিতে কারা কর্তৃপক্ষকে আদেশ দেন।
এর আগে গত ২৯ আগস্ট রাতে হাইকোর্ট এলাকা থেকে ডিবি পুলিশ জি কে গউছকে আটক করে। ৩০ আগস্ট ৫৪ ধারায় গ্রেফতার দেখিয়ে ঢাকা সিএমএম কোর্টে হাজির করা হয়। একই সাথে ২০১৫ সালের ১৮ জুলাই পবিত্র ঈদের দিন হবিগঞ্জ কারাগারে বন্দি থাকা অবস্থায় জি কে গউছকে ছুরিকাঘাতের ঘটনায় দায়েরকৃত একটি মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন ডিবির কোতয়ালী জোনাল টিমের উপপরিদর্শক আফতাবুল ইসলাম। শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মামুনুর রশিদের আদালত ২ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। রিমান্ড শেষে গত ২ সেপ্টেম্বর একই আদালতে হাজির করে আবারও ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়। কিন্তু আদালত রিমান্ড নামঞ্জুর করে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে প্রেরণের আদেশ দেন। গত ৪ সেপ্টেম্বর জি কে গউছকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে হবিগঞ্জ কারাগারে নিয়ে আসা হয়।