স্টাফ রিপোর্টার ॥ হবিগঞ্জ শহরে আওয়ামী লীগ-বিএনপি সংঘর্ষের ঘটনার জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মহিবুর রহমান মাহী’র দায়ের করা মামলায় হাইকোর্ট থেকে ৬ সপ্তাহের আগাম জামিন পেয়েছেন বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনের ৪৪ নেতাকর্মী। এর মাঝে আব্দুল্লাহ মিয়া (৪৫) নামের এক কর্মীকে আটক করেছে পুলিশ। সে বালিয়াকান্দি গ্রামের মৃত আপ্তাব উদ্দিনের পুত্র।
গতকাল বৃহস্পতিবার (৩১ আগস্ট) তাদেরকে আগাম দেন বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি এমডি আমিনুল ইসলাম এর দ্বৈত বেঞ্চ। আসামীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট শাহীন আহমেদ বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
জামিনপ্রাপ্ত উল্লেখযোগ্য আসামীরা হলেন- জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মিজানুর রহমান চৌধুরী, সদস্য মহিবুল ইসলাম শাহিন, শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সহ সভাপতি ও জেলা পরিষদের সদস্য প্রকৌশলী আব্দুল আজিজ, লাখাই উপজেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহ আলম গোলাপ, জেলা যুবদলের আহ্বায়ক জালাল আহমেদ, সদস্য সচিব সফিকুর রহমান সিতু, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব এমদাদুল হক ইমরান, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক জহিরুল হক শরীফ, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি শাহ রাজীব আহমেদ রিংগন, সিনিয়র সহ সভাপতি হাফিজুল ইসলাম হাফিজ, সাধারণ সম্পাদক জিল্লুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম মাহবুব, জেলা যুবদলের সাবেক সহ সভাপতি মহসিন সিকদার, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট গুলজার খান, মোঃ আরব আলী ও শ্যামল আহমেদ, জেলা কৃষকদলের যুগ্ম আহ্বায়ক আবু ছালেক, হবিগঞ্জ পৌর যুবদলের আহ্বায়ক মুর্শেদ আলম সাজন, যুগ্ম আহ্বায়ক শেখ মামুন, সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম রকি, বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সমবায় বিষয়ক সম্পাদক আলহাজ্ব জি কে গউছের ছোট ভাই জি কে গাফফার ও গোলাম মাওলা, যুবদল নেতা ইকবাল হোসেন রুকন, আসিফুল ইসলাম ইমন, ছাত্রদল নেতা মোজাক্কির হোসেন ইমন।
হাইকোর্টে আসামীদের পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমান, অ্যাডভোকেট আমিনুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট সুফিয়া আক্তার হেলেন।
প্রসঙ্গত, বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি ও সুচিকিৎসার দাবিতে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে ১৯ আগস্ট বিকেলে হবিগঞ্জ জেলা বিএনপির পদযাত্রা কর্মসূচি বের হলে দলের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়। দুই ঘণ্টা চলতে থাকা এ ঘটনায় বিএনপির কয়েকশ নেতা-কর্মী আহত হন। পরদিন ২০ আগস্ট বিকেলে শহরে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সভা করেন জেলা আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা। প্রতিবাদ সভা শেষে মিছিলকারীরা শহরের শায়েস্তানগর এলাকা হয়ে দলীয় কার্যালয়ে ফেরার পথে বিএনপির কার্যালয়ে সামনে উভয়পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। এ সময় উভয়পক্ষের মধ্যে প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে সংঘর্ষ চলে। পুলিশ রাবার বুলেট ও কাঁদানে গ্যাসের শেল ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এতে উভয় পক্ষের শতাধিক নেতা-কর্মী আহত হন।
এ ঘটনার পর জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মহিবুর রহমান মাহী বাদী হয়ে ৮৭ জনের নাম উল্লেখ করে আরও দেড় শতাধিক অজ্ঞাত নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।