ছোট ছোট ৬ ভাই-বোনের মধ্যে ১৫ বছর বয়সী আলমগীর ছিল সবার বড়। বাবা প্যারালাইসিসে পঙ্গু হয়ে বিছানায় শয্যাশায়ী থাকায় তার উপার্জনেই চলতো সংসার। খুনের শিকার হওয়ায় তার পরিবারে এখন অনিশ্চয়তার হাতছানি
এফ আর হারিছ, বাহুবল থেকে ॥ বাহুবলে ওয়াজ শুনে বাড়ি ফেরার পথে আলমগীর মিয়া (১৫) নামের এক কিশোরকে কুপিয়ে হত্যা করে প্রতিপক্ষ। মঙ্গলবার দিবাগত রাত সাড়ে ৯টার দিকে পুটিজুরী ইউনিয়নের বাংলাবাজার এলাকায় এ হত্যাকান্ডের ঘটনাটি ঘটে। নিহত আলমগীর পুটিজুরী ইউনিয়নের আহমদপুর গ্রামের আফতাই মিয়ার ছেলে। সে পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ছিলো।
তার পিতা আফতাই মিয়া দীর্ঘদিন যাবৎ প্যারালাইসিসে পঙ্গু হয়ে শয্যাশায়ী। উপার্জনক্ষম ছেলেকে হারিয়ে পাগলপ্রায় তার পিতামাতা। ৬ ভাই বোনের মধ্যে আলমগীর ছিল সবার বড়।
সূত্র জানা যায়, নবীগঞ্জ উপজেলার বড়চর গ্রামে ওয়াজ শুনে বাড়ি ফেরার পথে পুটিজুরী ইউনিয়নের বাংলাবাজার নামক স্থানে একটি ব্যাডমিন্টন টুর্ণামেন্টের ফাইনাল খেলা দেখার জন্য রওয়ানা দেয় আলমগীর মিয়া। পথে বাংলাবাজার তাহির মিয়ার দোকানের কাছে পৌঁছলে মোটরসাইকেল ও সিএনজি অটোরিক্সা নিয়ে আসা একদল দুর্বৃত্ত পিছন দিক থেকে তার সারা শরীরে এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করলে সে মাটিতে লুঠিয়ে পড়ে।
তাৎক্ষনিক তার সাথে থাকা বন্ধু পুটিজুরী ইউনিয়নের যাদবপুর গ্রামের জালাল উদ্দিনের পুত্র মুন্না সহ স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে বাহুবল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহত আলমগীরের বন্ধু মুন্না জানায়, দীর্ঘদিন পূর্বে তুচ্ছ বিষয় নিয়ে পুটিজুরী শরৎচন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয়ে তার সাথে স্থানীয় সম্ভুপুর গ্রামের সোহেল মিয়ার পুত্র আকাশের বাকবিতন্ডা হয়েছিল। পরে আবার মুগকান্দি গ্রামের মজনু শাহর ওরসেও আকাশের সাথে কথা কাটাকাটি হয়। গত মঙ্গলবারও বড়চরে ওয়াজ মাহফিলে তাদের মাঝে ঝগড়া হয়। এরই জের ধরে আকাশ ও তার লোকজন এ ঘটনা ঘটিয়ে থাকতে পারে বলে ধারণা করছেন আলমগীরের বন্ধু ও স্বজনরা।
তবে বাহুবল মডেল থানার ওসি মোঃ কামরুজ্জামান বলেন, ঘটনাটি পূর্ব বিরোধের জের ধরেই হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ পর্যন্ত কোনো মামলা হয়নি বা এখন পর্যন্ত কাউকে আটক করা হয়নি। তবে ঘটনার সাথে জড়িতদের গ্রেফতারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।