স্টাফ রিপোর্টার ॥ বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সমবায় বিষয়ক সম্পাদক ও টানা ৩ বারের নির্বাচিত হবিগঞ্জ পৌরসভার পদত্যাগকারী মেয়র আলহাজ্ব জি কে গউছকে হাসপাতাল থেকে বাসায় স্থানান্তর করা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার রাতে ডাক্তারের পরামর্শে তিনি ঢাকার গুলশানের বাসায় ফিরেন। তার ছেলে সদ্য লন্ডন ফেরত ব্যারিস্টার আলহাজ্ব মঞ্জুরুল কিবরিয়া প্রিতম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এর আগে গত বুধবার ঢাকার একটি প্রাইভেট হাসপাতালে জি কে গউছের নাকে সফল অস্ত্রোপচার হয়।
ব্যারিস্টার প্রিতম বলেন- ‘ডাক্তারের ধারণা ছিল না বাবা’র নাকের আঘাতটি এত বড় ছিল। কিন্তু অপারেশনের সময় নাক ওপেন করে ডাক্তারগণ অবাক হয়েছেন। নাকের একটি হাড় ভেঙ্গে অনেক গভীরে চলে গিয়েছিল, ওই নাকে শ্বাস-প্রশ্বাস বন্ধ ছিল, এতে বড় ধরনের কিছু হতে পারত। বাবা’র এই অপারেশনটি করতে ৩ জন প্রফেসরের ৩ ঘন্টা সময় লেগেছে। মহান আল্লাহর দয়ায় বাবা এখন অনেকটা সুস্থ। আগামী মঙ্গলবার সেলাই কাটা হবে।’ প্রিতম বলেন- ‘বাবা’র অপারেশনের সংবাদ পেয়ে প্রতিদিন দলীয় নেতাকর্মী ও অনেক আত্মীয় স্বজন হাসপাতালে ছুটে আসতে শুরু করেন। কোভিড-১৯ করোনার মধ্যে বাবা ও হাসপাতালের অন্য রোগীদের ঝুঁকি এড়াতে ডাক্তারের পরামর্শে শুক্রবার রাতে বাবাকে বাসায় নিয়ে এসেছি।’
তিনি বলেন- ‘আমি কৃতজ্ঞ, দেশ-বিদেশের অসংখ্য দলীয় নেতাকর্মী ও আত্মীয়-স্বজনসহ হবিগঞ্জবাসীর প্রতি। যারা বাবা’র অপারেশনের সংবাদ শোনে মহান আল্লাহর দরবারে দোয়া করেছেন, আশির্বাদ করেছেন এবং দোয়া মাহফিলের আয়োজন করেছেন। আমি বিনীতভাবে আপনাদের প্রতি আকুল আবেদন করে বলছি, এই করোনা মহামারিতে আমরা কেউই নিরাপদ নই। তাই সকলের সুস্থতার স্বার্থে দয়া করে বাবাকে দেখতে বাসায় ভিড় না করতে আমি সকলকে নিরুৎসাহিত করছি। বাবা অধীর আগ্রহে হবিগঞ্জ যাওয়ার জন্য অপেক্ষা করছেন। সুস্থ হলেই বাবা আপনাদের মধ্যে ফিরে যাবেন। সবাই বাবা’র জন্য দোয়া করবেন।’
ব্যারিস্টার প্রিতম জানান- ২০১৫ সালে একটি মিথ্যা মামলায় হবিগঞ্জ জেলা কারাগারে বন্দি ছিলেন জি কে গউছ। তিনি বন্দি থাকা অবস্থায় ১৮ জুলাই কারা অভ্যান্তরে পবিত্র ঈদুল ফিতরের নামাজ শেষে নিজ কক্ষে ফেরার পথে এক কয়েদি দ্বারা ছুরিকাহত হন। এ সময় তিনি উপুর হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। এতে তিনি নাকে আঘাত পান। ওই সময় থেকে তিনি নাকের সমস্যায় ভুগছিলেন। সম্প্রতি এই সমস্যা আরও তীব্র আকার ধারণ করলে ডাক্তারের পরামর্শে তিনি অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত নেন। গত বুধবার প্রফেসর ডাঃ কামরুল হাসান তরফদার, প্রফেসর ডাঃ আবু ইউসুফ ফকির ও প্রফেসর ডাঃ নাজমুল ইসলাম ঢাকার একটি প্রাইভেট হাসপাতালে জি কে গউছের সফল অস্ত্রোপচার করেন।
এ অবস্থায় জি কে গউছের পরিবারের পক্ষ থেকে হবিগঞ্জবাসীর দোয়া ও আশির্বাদ কামনা করেন তার বড় ছেলে ব্যারিস্টার মঞ্জুরুল কিবরিয়া প্রিতম ও ছোট ছেলে প্রকৌশলী আলহাজ্ব মাজহারুল কিবরিয়া পুলক।