শায়েস্তাগঞ্জের ইতিহাস ঐতিহ্য ৩

মঈন উদ্দিন আহমেদ ॥ সৈয়দ দাউদের পুত্র বন্দেগী সৈয়দ শাহ মহিব উল্লা। মহিব উল্লা’র ভাই সৈয়দ হাছান উল্লা ওরফে সৈয়দ নাছির প্রকাশ ছাওয়াল পীর বা জিন্দা শিশু পীর। সৈয়দ মহিব উল্লা’র ৬ পুত্র সৈয়দ আশরাফ উল্লা, সৈয়দ মশরফ উল্লা, সৈয়দ সরফ উল্লা, সৈয়দ ফজল উল্লা, সৈয়দ নাজির উল্লা ও সৈয়দ এনাম উল্লা। সৈয়দ আশরাফ উল্লার পুত্র সৈয়দ শাহ আরব। তার দুই কন্যা সন্তান ছিলেন। তারা হলেন- সৈয়দা মইরমুন্নেছা ও সৈয়দা খাইরুন্নেছা ওরফে ধন বিবি। সৈয়দা ধন বিবির নাতি সাবেক চেয়ারম্যান সৈয়দ ওবেদুর রহমান গাজী মিয়া। আর সৈয়দ ওবেদুর রহমান গাজী মিয়ার নাতি শায়েস্তাগঞ্জের সাবেক চেয়ারম্যান সৈয়দ অলিউর রহমান, সৈয়দ মহিবুর রহমান, সৈয়দ হাবিবুর রহমান পারভেজ, সৈয়দ শফিকুর রহমান, সৈয়দ আনিসুর রহমান, সৈয়দ আজিজুর রহমান, সৈয়দ মশিউর রহমান গং।
শায়েস্তাগঞ্জ দাউদনগরের বাসিন্দা বিশিষ্ট ব্যবসায়ী সৈয়দ হাবিবুর রহমান পারভেজ জানান- বন্দেগী শাহ সৈয়দ দাউদ খুব বেশি ইবাদত বন্দেগী করতেন। বেশিরভাগ সময় তিনি রাতের বেলা ইবাদত করতেন। সকালে ফজরের নামাজ শেষে বের হতেন। তার ছিল অলৌকিক ক্ষমতা। দৃষ্টি শক্তি ছিল অত্যন্ত তেজস্বী। তিনি ইবাদত শেষে ঘর থেকে বের হয়ে যদি গাছের দিকে তাকাতেন তাহলে তার দৃষ্টি শক্তির তেজস্ক্রিয়তায় ওই গাছ ঝলসে যেত। তাই তার মাধ্যমে সমাজের ক্ষতি হয়ে যেতে পারে এমনটা অনুভব করে তিনি মাটির মটকায় পানি ভরে রাখলেন। রাতে ইবাদত শেষে ফজরের নামাজ আদায় করে তিনি বাইরে বের হওয়ার পূর্বে মাটির মটকায় রাখা পানির দিকে তাকালেন যাতে তার দৃষ্টি পানিতে পড়ে তেজস্বীক ক্ষমতা কমে গিয়ে শান্ত হয়ে যায়। কিন্তু তাতেও কাজ হয়নি। দেখা যায় তিনি মটকায় রাখা পানির দিকে তাকালে মটকা ভেঙ্গে যায়। পরে তিনি ইবাদত খানার পাশে পুকুর খনন করেন। ইবাদত শেষে বের হয়ে প্রথমেই তিনি পুকুরের পানির প্রতি তাকাতেন। এতে তার দৃষ্টি শান্ত হয়ে এলে তিনি বাইরে বের হতেন। জনশ্রুতি রয়েছে ওই পুকুরে তিনি দুষ্ট জীনদের বন্দী করে রাখতেন যাতে তারা মানুষের ক্ষতি করতে না পারে। যা গজার মাছে রূপ দিয়ে আজও বিদ্যমান রয়েছে। তখনকার সময়ে আশপাশ এলাকায় কোন টিউবওয়েল ছিল না। সকলেই ওই পুকুরের পানি নিত্য প্রয়োজনীয় কাজে ব্যবহার করতেন। জনশ্রুতি আছে ওই পুকুরের পানিতে অনেকের রোগ ব্যাধি ভাল হয়ে যেত। তাই বিভিন্ন স্থান থেকে লোকজন মাজার জিয়ারতে আসেন এবং যাবার সময় রোগ শোক থেকে মুক্তি পেতে বোতলে করে ওই পুকুরের পানি নিয়ে যান।