নবীগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার চম্পক কিশোর সাহা জানান, উপজেলায় ০৫ টি উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে ৩৯ জন স্বাস্থ্যকর্মী, ৩৮টি কমিউনিটি ক্লিনিকে ৩৮ জন সিএইচসিপি এবং ১৩ টি ইউনিয়নের ৩৮টি কমিউনিটি ক্লিনেকের মাধ্যমে মাঠ পর্যায়ে করোনা ভাইরাস সচেতনতায় কাজ করে যাচ্ছে
নবীগঞ্জ প্রতিনিধি :  করোনা পরিস্থিতিতে সাধারণ রোগীরা চিকিৎসা পাওয়া নিয়ে যখন দুশ্চিন্তায়। তখনই হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার স্বাস্থকর্মীরা স্বাস্থ্য সুরক্ষা সরঞ্জাম সহ শত সীমাবদ্ধতার মধ্যেও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন। উপজেলায় ১টি পৌরসভা ও ১৩টি ইউনিয়নের ১২৬টি ওয়ার্ডের বিভিন্ন গ্রামের বাড়ি বাড়ি গিয়ে স্বাস্থ্য সহকারীরা ও কমিউনিটি ক্লিনিকের সিএইচসিপিরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মানুষের নিয়মিত স্বাস্থ্য সেবা দিয়ে যাচ্ছেন।
এদিকে নবীগঞ্জ উপজেলায় ১ দিনে স্বাস্থ্য কর্মী সহ ৬ জন করোনা আক্রান্ত হওয়ায় উপজেলা জুড়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে যেমন বেড়েছে আতঙ্ক , তেমনি স্বাস্থ্য কর্মী আক্রান্ত হওয়ায় ডাক্তার, স্বাস্থ্য কর্মী ও সিএইচসিপিদের মধ্যেও রয়েছে একই ধরনের উদ্বেগ। কারণ রোগীদের চিকিৎসা সেবায় মাঠ পর্যায়ে নিয়োজিত স্বাস্থ্য কর্মীরা প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য সুরক্ষা সরঞ্জামের অভাবে রয়েছেন অরক্ষিত। এখন পর্যন্ত প্রতিটি গ্রামে আগত ঢাকা-নারায়নগঞ্জ ফেরত মানুষের হোম কোয়ারেন্টিন নিশ্চিত ও করোনা রোগী শনাক্ত করার জন্য বাড়ী বাড়ী গিয়ে তথ্য সংগ্রহ ও নমুনা সংগ্রহের কাজ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে করলেও তাদের জন্য নেই পর্যাপ্ত স্বাস্থ্য সুরক্ষার সরঞ্জাম। অপ্রতুল সুরক্ষা সরঞ্জাম দিয়ে কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।
লক্ষন বা উপর্সগ ছাড়া অনেক করোনা রোগী সনাক্ত হওয়ায় করোনা ভীতি বাড়ছে স্বাস্থ্য কর্মীদের মধ্যে। তথ্য সংগ্রহ ও চিকিৎসার পাশাপাশি তারা স্বাস্থ্য সুরক্ষা এবং মহামারি রোধে জীবাণুনাশক বিভিন্ন উপকরণ ও মাস্ক ব্যাবহারসহ সচেতনতামূলক বিভিন্ন পরামর্শ প্রতিনিয়ত দিয়ে যাচ্ছেন।
এব্যাপারে বিভিন্ন ইউনিয়নের স্বাস্থ্য সেবা গ্রহিতাদের সাথে আলাপকালে তারা বলেন, স্বাস্থ্যকর্মী ও কমিউনিটি ক্লিনিকের আপা/ভাইয়েরা বাড়িতে এসে সবকিছু পরামর্শ দিচ্ছে। উনারা যেভাবে কাজ করছে তাতে আমরা গ্রামের মানুষেরা খুবই উপকৃত হচ্ছি।
মান্দারকান্দি কমিউনিটি ক্লিনিকের সিএইচসিপি জয়ন্ত চক্রবর্ত্তী বলেন, হাসপাতালে না গিয়ে রোগীরা এখন কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোতে ছুটছেন। সুরক্ষা পোশাক না থাকায় ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় চিকিৎসা কার্যক্রম চালাতে হচ্ছে।
স্বাস্থ্য সহকারী এসোসিয়েশনের সাংগঠনিক সম্পাদক দীপংকর ভট্টাচার্য দেবুল বলেন,আমাদের সহকর্মীরা গ্রামের প্রতিটি বাড়িতে গিয়ে করোনা ভাইরাস সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করছি। স্বাস্থ্য কর্মীরা শত প্রতিকূল পরিবেশে জীবনের ঝুঁকি করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে কাজ করছে। স্বাস্থ্য কর্মীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা সরঞ্জাম দিয়ে সহযোগিতা করার জন্য সমাজের বৃত্তবানদের প্রতি তিনি আহবান জানান।
নবীগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার চম্পক কিশোর সাহা জানান, উপজেলায় ০৫ টি উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে ৩৯ জন স্বাস্থ্যকর্মী, ৩৮টি কমিউনিটি ক্লিনিকে ৩৮ জন সিএইচসিপি এবং ১৩ টি ইউনিয়নের ৩৮টি কমিউনিটি ক্লিনেকের মাধ্যমে মাঠ পর্যায়ে করোনা ভাইরাস সচেতনতায় কাজ করে যাচ্ছে।
এব্যপারে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পঃপঃ কর্মকর্তা ডাঃ আব্দুস সামাদ বলেন শত সীমাবদ্ধতার মধ্যে গ্রামের মানুষকে করোনা ভাইরাস সম্পর্কে সচেতন ও চিকিৎসা সেবা চালিয়ে যাওয়ার জন্য তিনি সকল স্বাস্থ্য সহকারী ও সিএইচসিপিদের ধন্যবাদ জানান।পাশাপাশি স্বাস্থ্যকর্মীদের সুরক্ষা সরঞ্জাম সহ সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস প্রদান করেন।