অপপ্রচারে নবদম্পতির জীবন দুর্বিসহ হয়ে উঠেছে

সুমন আহমেদ বিজয়/নিতেশ দেব, লাখাই থেকে ॥ দেশে এসে বিয়ে করে স্ত্রীকে নিয়ে হোম কোয়ারেন্টিনে ঠাঁই নিয়েছেন ফ্রান্স প্রবাসী মাসুক মিয়া। তার হোম কোয়ারেন্টিনে অবস্থানকে কেন্দ্র করে কিছু সংখ্যক মানুষ ও কিছু মিডিয়ার অপপ্রচারে তার ও তার পরিবারের লোকজনের জীবন দুর্বিসহ হয়ে উঠেছে।
সূত্র জানায়, সপ্তাহখানেক পূর্বে দেশে এসেছেন লাখাই উপজেলার করাব গ্রামের বাসিন্দা, ফ্রান্স প্রবাসী মাসুক মিয়া। দেশে এসে তিনি বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। গতকাল মঙ্গলবার ছিল তার বিবাহোত্তর ওয়ালিমা অনুষ্ঠান। সরকারের নির্দেশনা ছিল প্রবাসীদেরকে দেশে এসে ১৪ দিন হোম কোয়ারেন্টিনে থাকতে হবে। কিন্তু তিনি হোম কোয়ারেন্টিনে না থেকে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। তাকে হোম কোয়ারেন্টিনে থাকার জন্য সরকারের কোন মহল থেকে বলা হয়নি। তাই তিনি এ বিষয়টি এড়িয়ে যান। এদিকে গতকাল বিষয়টি জানতে পেরে লাখাই উপজেলা প্রশাসন পদক্ষেপ গ্রহণ করে। ওয়ালিমা অনুষ্ঠানের শেষ পর্যায়ে প্রশাসনের পক্ষ থেকে তার বাড়িতে গিয়ে বিয়ের পরবর্তী অনুষ্ঠানাদি বন্ধ করতে বলা হয়। তখন প্রবাসী মাসুক মিয়ার বিয়ের গেইট ভেঙ্গে নেয়া হয়। এরপর প্রশাসনের নির্দেশ অনুযায়ী নবদম্পতি নিজ গৃহে আইসোলেশনে চলে যান।
লাখাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সঞ্চিতা কর্মকার বলেন, করাব গ্রামের আলাই মিয়ার ছেলে মাসুক মিয়া গত ১১ মার্চ ফ্রান্স থেকে দেশে ফেরেন। ২৬ তারিখ পর্যন্ত তার বাধ্যতামূলক কোয়ারেন্টিনে থাকার কথা। কিন্তু তিনি গত সোমবার বিয়ে করে ফেলেন একই উপজেলার জিরুন্ডা গ্রামে। কিন্তু সোমবার রাতেই উপজেলা প্রশাসন বিষয়টি জানতে পারে। এরপর মঙ্গলবার সকালে করাব গ্রামে গিয়ে স্ত্রী সহ মাসুক মিয়ার বাধ্যতামূলকভাবে হোম কোয়ারেন্টিনে থাকার নির্দেশ দেই। নির্দেশ না মানলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে জানাই। একইসঙ্গে ওয়ালিমা অনুষ্ঠানও বাতিল করি।
ইউএনও বলেন, মাসুক মিয়া ও তার স্ত্রী সঠিকভাবে হোম কোয়ারেন্টিনে থাকছেন কি-না, তা কঠোরভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে এবং প্রতিদিন মেডিকেল টিম মাসুক মিয়া ও তার স্ত্রীর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করবেন।
প্রবাসী মাসুক মিয়ার ঘনিষ্ট একটি সূত্র জানায়, করোনা প্রতিরোধে সরকারের নির্দেশ ১৪ দিন হোম কোয়ারেন্টিনে থাকা। এর অর্থ এই নয় যে, তিনি করোনা আক্রান্ত। কিন্তু অতি উৎসাহী কিছু মানুষ প্রচার করছে মাসুক নাকি করোনা আক্রান্ত। কোন কোন মিডিয়াও অপপ্রচার করছে। এ পরিস্থিতিতে তিনি ও তার পরিবারের লোকজন সামাজিক ও মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে হয়ে পড়েছেন।