![](https://dailyhabiganjermukh.com/wp-content/uploads/2020/03/RIVER.jpg)
নদীভাঙ্গন এলাকা পরিদর্শন করলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক অমিতাভ পরাগ তালুকদার ও উপজেলা চেয়ারম্যান মর্তুজা হাসানসহ প্রশাসনের কর্মকর্তাগণ
এসএম সুরুজ আলী ॥ শুকনো মৌসুমে পানি কমে যাওয়ার ফলে ভাঙ্গনের কবলে পড়েছে আজমিরীগঞ্জের কালনী ও কুশিয়ারা নদীর তীর। নদী ভাঙনের কারণে বিলীন হয়ে গেছে আজমিরীগঞ্জ উপজেলার কাকাইলছেও ইউনিয়নের ১০টি গ্রামের অন্তত ২শ’ বাড়ি। নিঃস্ব হয়ে এসব পরিবারের বাসিন্দাদের অনেকেই অন্যের বাড়িতে আশ্রিত হয়েছেন। আবার কেউবা গেছেন নদী থেকে দূরে কোন জায়গায়।
হবিগঞ্জ জেলার প্রত্যন্ত ভাটি অঞ্চল আজমিরীগঞ্জ উপজেলার কাকাইলছেও ইউনিয়ন। এ ইউনিয়নের উপর দিয়ে বয়ে গেছে কালনী ও কুশিয়ারা নদী। চলতি শুকনো মৌসুমে নদীর পানি কমে যাওয়ায় ভাঙ্গতে শুরু করেছে নদীর তীর। প্রতিনিয়তই তীর ভেঙ্গে নদীগর্ভে চলে যাচ্ছে। বিলীন হচ্ছে বাড়িঘর। ইতোমধ্যে নদীর তীর ঘেঁষে প্রতিষ্ঠিত ইউনিয়নের সৌলরী, মণিপুর, বদরপুর, জয়নগর ঋষি হাটি, কাদিরপুর, নজরাকান্দা, সাহা নগরসহ ১০টি গ্রামের প্রায় ২শ’ বাড়িঘর নদীগর্ভে হারিয়ে গেছে।
এসব গ্রামের বাসিন্দাদের অনেকেই ভিটে মাটি হারিয়ে নিঃস্ব হয়েছেন। এদিকে নদীর এক তীর ভাঙ্গলেও অপর তীর কিশোরগঞ্জ জেলার ইটনা উপজেলা কাটিয়াকান্দা, গজারিয়া এলাকায় মাইলের পর মাইল চর পরে ভরাট হচ্ছে। এ ব্যাপারে সৌলরী গ্রামের আবুল ফজল জানান, প্রায় এক যুগ ধরে কালনী-কুশিয়ারা ও ভেড়ামোহনা নদীর পশ্চিম পাড় পার্শ^বর্তী কিশোরগঞ্জ জেলার ইটনা উপজেলার কাটিয়ারকান্দা গজারিয়া এলাকায় পলি পড়ে মাইলের পর মাইল নদী ভরাট হয়ে চর হচ্ছে। সেখানে এলাকার লোকজন চাষাবাদ করছেন। তিনি বলেন- সেদিকে চর পড়ে যাওয়ার ফলে খরস্রোতা নদীর পানি গতি বেড়ে আমাদের পূর্ব পাড়ের দিকে ধাক্কা দিচ্ছে। যার ফলে আমাদের বাড়ির দিকে নদীর পাড় ভেঙ্গে যাচ্ছে। বর্তমানে শুকনো মওসুমে নদীর পাড় ভাঙ্গছে। এ ভাবে নদীর পাড় ভাঙ্গার ফলে আমাদের বাড়ি ঘর ও বসতভিটে ভেঙ্গে যাচ্ছে। তিনি নদী ভাঙ্গন নিয়ন্ত্রণ করার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানান। একই গ্রামের মুহিত মিয়া জানান, নদী ভাঙ্গনে আমার বাড়ির সামনের বিছড়া ভেঙ্গে গেছে। এখন বসতভিটা ভাঙ্গতে শুরু করেছে। আর বসতভিটা ভাঙ্গলে আমরা যাবো কোথায়। মনিপুর গ্রামের হক মিয়া জানান, নদীতে আমার বসতবাড়ি ও ঘর বিলীন হয়ে গেছে। আমাদের গ্রামের মসজিদ মাদ্রাসা নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। তিনি নদী ভাঙ্গন থেকে রক্ষা করার জন্য প্রশাসনের কাছে জোর দাবি জানান। এ দিকে সম্প্রতি নদী ভাঙ্গন পরিদর্শন করেছেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক অমিতাভ পরাগ তালুকদার, উপজেলা চেয়ারম্যান মর্তুজা হাসান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মামুন খন্দকারসহ প্রশাসনের কর্মকর্তারা। এ সময় তারা নদী ভাঙ্গন রোধ করা হবে বলে এলাকাবাসীকে আশ্বস্ত করেন। এ সময় নদী ভাঙ্গন রোধে প্রকল্প গ্রহণের দাবি জানান উপজেলা চেয়ারম্যান মর্তুজা হাসান। এ ব্যাপারে হবিগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী এমএল সৈকত জানান, প্রকল্প গ্রহণ করে নদীর ২ হাজার ২শ মিটার এলাকা শীঘ্রই ভাঙ্গন রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ভাটি অঞ্চলের প্রাচীন এ গ্রামগুলোকে রক্ষায় অবিলম্বে নদী ভাঙ্গন রোধে কার্যকরি পদক্ষেপ নেয়া হবে বলে আশা করছেন এলাকাবাসী।