স্টাফ রিপোর্টার ॥ হবিগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির ভাবমূর্তি ও গৌরবহানি কাযর্কলাপে জড়িত থাকার অভিযোগে এপিপি অ্যাডভোকেট আবুল কালাম ও অ্যাডভোকেট আবুল খায়ের আজাদকে শোকজ করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। শোকজের সন্তোষজনক জবাব না পেলে তাদের আইনজীবী সমিতি থেকে বহিস্কার করা হবে। সোমবার বিকেল ৪টায় সমিতির কার্যালয়ের এক বিশেষ জরুরী সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট মোঃ বদরু মিয়ার সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রুহুল হাসান শরীফের পরিচালনায় এ বিশেষ জরুরী সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় বক্তারা বলেন, এই দুই আইনজীবীর অসামাজিক কর্মকান্ডে সমিতির ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হয়েছে। তাদেরকে কেন বহিস্কার করা হবে না তা জানতে চান। এ প্রেক্ষিতে সমিতির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। এর অংশ হিসেবে প্রথমে তাদের শোকজ করা হয়েছে। পরবর্তীতে বহিস্কারের সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
এ ব্যাপারে হবিগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রুহুল হাসান শরীফ জানান, সমিতির সদস্য অ্যাডভোকেট আবুল কালাম আজাদের বিরুদ্ধে বন্ধের দিন আদালত ভবনের নিজ কার্যালয়ে মহিলা নিয়ে ফষ্টিনষ্টি করার অভিযোগে তাকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে এবং অ্যাডভোকেট আবুল খায়ের আজাদের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগে হবিগঞ্জ সদর মডেল থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে তা প্রমাণিত হয়েছে। আমাদের সমিতির ভাবমূর্তি ও গৌরবহানি করার জন্য তাদেরকে গঠনতন্ত্র অনুযায়ী শোকজ করা হয়েছে। শোকজের সন্তোষজনক জবাব না দিলে তাদেরকে সমিতি থেকে বহিস্কার করা হবে।
এ ব্যাপারে হবিগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট মোঃ বদরু মিয়া বদরু জানান, অভিযুক্ত দুই আইনজীবীর বিরুদ্ধে নারী কেলেংকারীর অভিযোগ রয়েছে। প্রাথমিকভাবে তা প্রমাণিত হয়েছে। সংগঠনের সদস্য হয়ে সংগঠনের ভাবমূর্তি নষ্ট করায় গঠনতন্ত্র অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। এর অংশ হিসেবে প্রথমে তাদের শোকজ করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। শোকজের সন্তোষজনক জবাব না দিতে পারলে তারা স্থায়ী অথবা অস্থায়ীভাবে বহিস্কার হতে পারেন। সেই সিদ্ধান্ত পরিবর্তীতে নেয়া হবে।
এদিকে নৈতিক স্খলনের অপরাধে অ্যাডভোকেট আবুল কালামকে গোপায়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক থেকে অব্যাহতি দিয়েছে সদর উপজেলা আওয়ামী লীগ। সোমবার সন্ধ্যায় হবিগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত উপজেলা আওয়ামী লীগের এক জরুরী সভায় এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। পাশপাশি সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ১নং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদককে ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করার জন্য সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
প্রসঙ্গত, শুক্রবার দুপুরে বোরকা পড়া এক মহিলাকে নিয়ে চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের তৃতীয় তলার একটি রুমে একান্ত সময় কাটান এপিপি আবুল কালাম। এ বিষয়টি কোর্ট পুলিশের নজরে আসলে তিনি বিষয়টি চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটকে অবগত করেন। খবর পেয়ে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ নুরুল হুদা চৌধুরী ঘটনাস্থলে আসার আগেই আবুল কালাম ওই মহিলাকে রিক্সায় তুলে দেন। বিজ্ঞ ম্যাজিস্ট্রেট আবুল কালামকে এ বিষয়ে জ্ঞিজাসাবাদ করলে ম্যাজিস্ট্রেটের সাথে তিনি অশোভ আচরণ করেন। এ সময় মোটর সাইকেল যোগে অ্যাডভোকেট আবুল কালাম দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন। পরবর্তীতে বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে বিজ্ঞ ম্যাজিস্ট্রেট বিষয়টি হবিগঞ্জ সদর মডেল থানা পুলিশকে অবগত করেন। পুলিশ শুক্রবার রাত ১০টায় হবিগঞ্জ শহরের মোহনপুর এলাকা থেকে অ্যাডভোকেট আবুল কালামকে গ্রেফতার করে। অপরদিকে অ্যাডভোকেট আবুল খায়ের আজাদ ওরফে উজ্জল শহরতলীর জালালাবাদ-নোয়াগাঁও এলাকার বাসিন্দা। তিনি হবিগঞ্জ বৃন্দাবন সরকারি কলেজের এক ছাত্রীর সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলেন। ওই সম্পর্কের সূত্র ধরে মেয়েটিকে বিয়ের আশ^াস দিয়ে ধর্ষণ করেন আবুল খায়ের আজাদ। পরবর্তীতে বিয়ে না করায় মেয়েটি তার বিরুদ্ধে হবিগঞ্জ সদর মডেল থানায় ধর্ষণ মামলা দায়ের করে।
নৈতিক স্খলনের অপরাধে অ্যাডভোকেট আবুল কালামকে গোপায়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পদ থেকে অব্যাহতি ॥ অ্যাডভোকেট আবুল খায়ের আজাদের বিরুদ্ধে কলেজছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ
© স্বত্ব দৈনিক হবিগঞ্জের মুখ ২০১৯
ওয়েবসাইটটি তৈরী করেছে ThemesBazar.Com