ডেস্ক রিপোর্ট ।। রাজধানীর কাকরাইলে আবারো জাতীয় পার্টির (জাপা) কার্যালয়ে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। শুক্রবার সন্ধ্যায় এ হামলা চালানো হয়। হামলার জন্য গণ অধিকার পরিষদকে দায়ী করেছে জাপা। গণ অধিকার পরিষদ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছে, হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের সাথে তাদের কোনো সম্পৃক্ততা নেই।
প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্র জানায়, সন্ধ্যা সোয়া ৭ টার দিকে কাকরাইলে জাপা কার্যালয়ের সামনে দিয়ে গণ অধিকার পরিষদের একটি মিছিল যাচ্ছিল। সেই মিছিল থেকে কিছু নেতা-কর্মী জাতীয় পার্টির কার্যালয়ে হামলা চালায়। এ সময় তাঁরা কার্যালয়ের নিচতলায় ভাঙচুর করে এবং একপর্যায়ে আগুন ধরিয়ে দেয়।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্র আরও জানায়, হামলার আগে জাপার কয়েকজন নেতা-কর্মী তাঁদের কার্যালয়ে ছিলেন। গণ অধিকার পরিষদের মিছিল আসতে দেখে তাঁরা সরে যান। মিছিলটি যখন জাপা কার্যালয়ের সামনে আসে, সে সময় সেখানে পুলিশ মোতায়েন ছিল। কিন্তু সংখ্যায় কম থাকায় তারা মিছিলকারীদের বাঁধা দেয়নি। পরে অতিরিক্ত পুলিশ এসে জাপা কার্যালয়ের আগুন নেভাতে শুরু করে। হামলা ও ভাঙচুরের সময় জাতীয় পার্টির কার্যালয়ের সামনের সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এ সময় আশপাশের সড়কগুলোতে তীব্র যানজট দেখা দেয়।
এ বিষয়ে পুলিশের রমনা বিভাগের উপকমিশনার মো. মাসুদ আলম বলেন, হামলাকারীরা জাপা কার্যালয়ে হামলা-ভাঙচুর ও আগুন লাগিয়ে চলে যায়। পরে অতিরিক্ত পুলিশ এসে জলকামান ব্যবহার করে আগুন নেভায়। রাত ৮ টার দিকে রাস্তায় যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
রাত ৮ টার দিকে জাপার কার্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, আগুনে পাঁচতলা ভবনের নিচতলার বিভিন্ন আসবাব ও নথিপত্র পুড়ে গেছে। কার্যালয়ের সামনের দেয়ালে থাকা এরশাদের ছবি ও জাপার লোগো ভাঙচুর করা হয়েছে। রাস্তায় ফেলে রাখা হয়েছে দলের চেয়ারম্যান জি এম কাদেরের ছবি। হামলার প্রতিবাদে জাপা নেতা-কর্মীরা কার্যালয়ের সামনে মিছিল করছেন।
এর আগে গত ২৯ আগস্ট জাপা ও গণ অধিকার পরিষদের নেতা-কর্মীদের মাঝে সংঘর্ষ হয়। সেদিনও জাপার কার্যালয়ে হামলা ও ভাঙচুর করা হয়েছিল। ওই ঘটনার কিছু সময় পরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পিটুনিতে গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক গুরুতর আহত হন। তিনি এখনো হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
নুরুল হকের ওপর হামলার প্রতিবাদে ৩০ আগস্ট সন্ধ্যায় গণ অধিকার পরিষদ বিক্ষোভ মিছিল করে। তখন একদল বিক্ষোভকারী জাপার কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে হামলা ও ভাঙচুর করেন। বিক্ষোভকারীরা একপর্যায়ে কার্যালয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। পরে পুলিশ এসে হামলাকারীদের লাঠিপেটা করে সরিয়ে দেয়।
জাতীয় পার্টির কার্যালয়ে হামলার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন গণ অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদ খান। তিনি বলেন, জুলাই অভ্যুত্থানের পর অসংখ্য মানুষ জাপার ওপর ক্ষুব্ধ। অন্তর্বর্তী সরকার ফ্যাসিবাদের দোসর জাপাকে সুযোগ করে দিচ্ছে। বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা জাপা কার্যালয় ভাঙচুর করেছে। এই বিক্ষুব্ধ মানুষকে নিয়ন্ত্রণ করা গণ অধিকার পরিষদের পক্ষে সম্ভব নয়। এই হামলার সাথে গণ অধিকার পরিষদের কোনো সম্পর্ক নেই।