
শায়েস্তাগঞ্জে ওয়ার্ড বিএনপির প্রতিনিধি সভা
স্টাফ রিপোর্টার ॥ বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ও টানা ৩ বারের নির্বাচিত হবিগঞ্জ পৌরসভার পদত্যাগকারী মেয়র আলহাজ্ব জি কে গউছ বলেছেন- তৃণমূলই হচ্ছে বিএনপির প্রাণ। দেশী-বিদেশী চক্রান্তকারীরা বিভিন্ন সময়ে বিএনপির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেছে, তৃণমূলের নেতাকর্মীরা ঐক্যবদ্ধ থেকে সেই যড়যন্ত্র প্রতিহত করেছে। তৃণমূলের নেতাকর্মীরাই হলো বিএনপির চালিকা শক্তি। তৃণমূল সংগঠিত হলে বিএনপিকে কেউ রুখতে পারবে না।
তিনি শনিবার শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার ওয়ার্ড বিএনপির প্রতিনিধি সভায় এসব কথা বলেন। সকাল ১০টায় সভাটি শুরু হয়ে চলে সন্ধ্যা পৌনে ৭টা পর্যন্ত। পৌনে ৯ ঘন্টা ব্যাপী সভায় ৬৪জন বক্তার বক্তব্য শুনেছেন জি কে গউছ। তিনি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের হাত ধরে হবিগঞ্জে এই প্রথম ওয়ার্ড বিএনপির প্রতিনিধি সভার প্রচলন শুরু করলেন।
সভায় জি কে গউছ আরও বলেন- বিএনপি আর আওয়ামীলীগ এক জিনিস নয়। বিএনপি জনগণকে নিয়ে এই দেশে বসবাস করতে চায়। বিএনপির পালিয়ে যাওয়ার কোনো ইতিহাস নেই। আমরা আওয়ামীলীগের নির্যাতন সহ্য করেছি, অসংখ্য মিথ্যা মামলায় আসামী হয়েছি, জেল খেটেছি। আমরা জেল থেকে জনগণের ভালোবাসায় সিক্ত হয়ে আবারও জনগণের মধ্যে ফিরে এসেছি।
তিনি বলেন- আওয়ামীলীগ যে অন্যায় করেছে, মানুষের উপর যে জুলুম করেছে, সেই কাজ বিএনপি নেতাকর্মীদের করার সুযোগ নেই। বিএনপি করতে হলে মানুষের ভালোবাসা পাওয়ার জন্য যে কাজগুলো করার প্রয়োজন তা করতে হবে।
তিনি দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন- আমাদের প্রিয় নেতা তারেক রহমান বার বার বলেছেন এবং বলে যাচ্ছেন, দুর্নীতি অন্যায় আর বিএনপি এক সাথে চলবে না। দুর্নীতির সাথে নিজেকে জড়ালে আপনারা বিএনপি করতে পারবেন না, আপনি যে পর্যায়ের নেতাই হউন। আপনি গুলি খেয়েছেন, জেল খেটেছেন, এর মানে এই নয়, মানুষ কষ্ট পায় ত্যাক্ত-বিরক্ত হয় আপনি এমন কাজ করবেন, যা দল বরদাস্ত করবে না। কোনো ব্যক্তির অপকর্মের দায় বিএনপি নিবে না।
জি কে গউছ বলেন- আমি হবিগঞ্জ পৌরসভার দায়িত্ব নিয়েই মানুষের কল্যাণে কাজ করেছি। পৌর এলাকার কন্যাদায়গ্রস্থ পিতা-মাতার দায়িত্ব নিয়ে গণবিয়ের আয়োজন করেছি। অর্থের অভাবে যেসব শিক্ষার্থী পড়ালেখা করতে পারেনি তাদের দায়িত্ব নিয়েছি। বই দিয়েছি, ড্রেস দিয়েছি, ব্যাগ দিয়েছি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বেতনের ব্যবস্থা করেছি। পহেলা বৈশাখ বাঙালি জাতির ঐতিহ্য। তাই পৌরসভায় বৈশাখী অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছি। বাংলাদেশের ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে পিঠা উৎসবের আয়োজন করেছি। পবিত্র হজ্বযাত্রীদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছি। বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি বছর দুইবার সংবর্ধনা দিয়েছি। সম্মানীত খতিব, ইমাম ও মোয়াজ্জিন সাহেবদেরকে দুটি ঈদে পৌরসভার পক্ষ থেকে সম্মানী দেয়ার ব্যবস্থা করেছি। দূর্গাপুজায় প্রতিটি মন্ডপে প্রতি বছর ১০ হাজার করে টাকা দিয়েছি। বই মেলার আয়োজন করেছি। ইনশাআল্লাহ, জনগণের ভালোবাসায় আমি এমপি নির্বাচিত হলে প্রতিটি ইউনিয়নে উপজেলায় এসব অনুষ্ঠানের আয়োজন করার ব্যবস্থা করব।
শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সভাপতি আলহাজ্ব গোলাম কিবরিয়া চৌধুরী বেলালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় বক্তব্য রাখেন জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মিজানুর রহমান চৌধুরী, অ্যাডভোকেট হাজী নুরুল ইসলাম ও হাজী এনামুল হক, শায়েস্তাগঞ্জ পৌর বিএনপির সভাপতি ফরিদ আহমেদ অলি প্রমুখ।