স্টাফ রিপোর্টার ॥ হবিগঞ্জে জামিনের ভুয়া নথি দেখিয়ে কারাগার থেকে বের হয়ে গেল মাদক মামলার ৪ আসামি। যা নিয়ে আদালতপাড়াসহ সর্বত্র চলছে আলোচনা সমালোচনা। বুধবার তারা কারাগার থেকে বের হয়ে যান বলে আসামি পক্ষের আইনজীবী ফয়সল বৃহস্পতিবার জানতে পারেন। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে একজনকে আটক করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
ভুয়া নথি দেখিয়ে কারাগার থেকে বেরিয়ে যাওয়া আসামিরা হলেন- সুনামগঞ্জ জেলার ছাতক উপজেলার শিমুলগঞ্জ গ্রামের রুয়েল মিয়া, একই উপজেলার আলী হোসেন, জগন্নাথপুর উপজেলার পাগলা গ্রামের আজাদ মিয়া ও শান্তিগঞ্জ উপজেলার কিরগাঁও গ্রামের সুয়েব মিয়া।
আদালত পুলিশের পরিদর্শক জানান- একটি চক্র ভুয়া নথি তৈরি করে সংশ্লিষ্ট হাকিমের স্বাক্ষর নকল করে এ ঘটনা ঘটিয়েছে বলে তারা জানতে পেরেছেন।
মামলার নথি থেকে জানা যায়, গত ৬ জানুয়ারি মাধবপুর উপজেলায় ৩৫ কেজি গাঁজাসহ র্যাবের হাতে ধরা পড়েন ৪ মাদক কারবারি। পরে মামলা দিয়ে তাদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়। ওই ৪ জনের আইনজীবী ফয়সল আদালতে বেশ কয়েকবার তাদের জামিন আবেদন করেন। কিন্তু বিজ্ঞ আদালত তাদের জামিন নামঞ্জুর করেন। সবশেষ গত ২৬ জানুয়ারিও তাদের পক্ষে জামিন আবেদন করা হলে তাও নাকচ হয়। বৃহস্পতিবার আদালতে গিয়ে আইনজীবী ফয়সল জানতে পারেন আসামিরা ভুয়া জামিননামা তৈরি করে সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তার অফিসের মাধ্যমে জেলা কারাগারে পাঠায়। পরে কারাগার থেকে তারা বের হয়ে পালিয়ে যায়।
এ বিষয়ে আসামীপক্ষের আইনজীবী ফয়সল বলেন- আসামিদের জন্য ম্যাজিস্ট্রেট ও জজ কোর্টে জামিন চেয়ে পাইনি। পরে আমি হাই কোর্টে কাগজপত্র পাঠাতে চাইলে তাদের স্বজনরা জানায়, কাগজপত্র পাঠানোর প্রয়োজন নেই। তাদের লোকজন জামিন নিয়ে বের হয়ে গেছেন।
আইনজীবী ফয়সলের ভাষ্য- বিষয়টি জানার পর আমি হতভম্ব হয়ে যাই। পরে খোঁজ নিয়ে দেখি, ভুয়া জামিননামা তৈরি করে জিআরও অফিসের মাধ্যমে তা কারাগারে পাঠানো হয়। পরে তারা সেখান থেকে বের হয়ে যান।
হবিগঞ্জ জেলা কারাগারের সুপার মো. মুজিবুর রহমান বলেন- প্রতিদিনকার নিয়মেই আদালত থেকে আমাদের কাছে জামিননামা আসে। সেই অনুযায়ী বন্দিরা ছাড়া পায়। তবে সেটি ভুয়া জামিননামা ছিল, এ বিষয়টি আমাদের জানা নেই।
হবিগঞ্জ আদালত পুলিশের পরিদর্শক নাজমুল হোসেন বলেন- বিষয়টি জানার পর খোঁজখবর নিয়ে দেখা গেছে, ৩ জনের একটি চক্র ভুয়া জামিননামা তৈরি করে সংশ্লিষ্ট হাকিমের স্বাক্ষর নকল করে কারাগার থেকে ৪ আসামিকে বের করে নিয়েছে। চক্রটির সন্ধান তারা পেয়েছেন। তবে তদন্তের স্বার্থে এখনই কিছু বলতে নারাজ পরিদর্শক নাজমুল হোসেন।
© স্বত্ব দৈনিক হবিগঞ্জের মুখ ২০১৯
ওয়েবসাইটটি তৈরী করেছে ThemesBazar.Com