স্টাফ রিপোর্টার ॥ নবীগঞ্জে এমপির ডিও তালিকার নাম বাদ দিয়ে গভীর নলকূপ স্থাপনের অভিযোগ উঠেছে। এনিয়ে নবীগঞ্জ উপজেলা সহকারী জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী মোহাম্মদ জাকারিয়া ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক দাবীদার হাবিবুর রহমান হাবিবের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। উপজেলার সদর ইউনিয়নের দত্তগ্রামের শাহ হোসাইন আহমদ গত ২২ জানুয়ারি জেলা প্রশাসক ও জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী বরাবরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগে সাবেক সংসদ সদস্য আমাতুল কিবরিয়া কেয়া চৌধুরীর ডিও সংযুক্ত করা হয়।
অভিযোগ সূত্রে প্রকাশ- হবিগঞ্জ-১ (নবীগঞ্জ-বাহুবল) নির্বাচনী এলাকার সাবেক সংসদ সদস্য একটি ডিও লেটারের মাধ্যমে উপজেলার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ উন্মুক্ত স্থানে অসহায় জনগণ যাতে সুপেয় পানি সুবিধা পায় এ প্রেক্ষিতে ১০টি গভীর নলকূপ (টিউবওয়েল) স্থাপনের তালিকা প্রদান করেন। ওই তালিকা থেকে ৫টি নাম বাদ দিয়ে নবীগঞ্জ পৌর এলাকার রাজাবাদ গ্রামের সমন্বয়ক দাবিদার হাবিবুর রহমান হাবিব নিজেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক দাবী করে উপজেলা জনস্বাস্থ্য অফিসে ৫টি গভীর নলকূপ দেয়ার দাবী জানান। জনস্বাস্থ্য অফিসের কর্মকর্তা মোঃ জাকারিয়াকে ম্যানেজ করে এমপি প্রেরিত নামের তালিকা বাতিল করে হাবিব এর দেয়া ৫ জনের নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়। অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়- টিউবওয়েল দেয়ার নামে হাবিব ৫ জনের কাছ থেকে ৫০/৬০ হাজার টাকা করে হাতিয়ে নিয়েছেন। এছাড়াও স্বঘোষিত সমন্বয়ক হাবিবের সাথে তদবির বাণিজ্যে নবীগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগ কর্মী হাবিবুর রহমান হাবিব ও হাবিবুর রহমান তারেক এর সংশ্লিষ্টতা রয়েছে। উপজেলা সহকারী জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী জাকারিয়ার নেতৃত্বে গভীর নলকূপ বাণিজ্যের সিন্ডিকেট রয়েছে মর্মে তদন্তের দাবি করা হয়। ওই চক্রটি মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে বিক্রি করছে গভীর নলকূপ। উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের লোকজনের নিকট থেকে নগদ টাকা দিয়ে টিউবওয়েলের ক্রেতা খুঁজে চক্রটি। লিখিত অভিযোগে উপজেলা জনস্বাস্থ্য অফিস এর গভীর নলকূপ স্থাপনে দুর্নীতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানানো হয়।
এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে হাবিবুর রহমান হাবিব বলেন- ডিপ টিউবওয়েল বিতরণে আমার কোন হস্তক্ষেপের সুযোগ নেই। উপজেলা প্রকৌশলী সরেজমিনে গিয়েছেন। তিনি তার বিরুদ্ধে উঠা অভিযোগ ষড়যন্ত্রমূলক বলে দাবি করেন।
এ প্রসঙ্গে উপজেলা সহকারী জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী মোহাম্মদ জাকারিয়া বলেন- সাবেক এমপির দেয়া তালিকার স্থানে কাউকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। তিনি বলেন, সাবেক এমপির ডিওতে দেয়া নবীগঞ্জ মাছের বাজার উন্মুক্ত স্থান, পানিউমদা ইউনিয়নের বিজয় রবি দাস এর আবেদনকৃত খাগাউড়া সুরি লাল রবি দাসের বাড়ির উন্মুক্ত স্থান, কালিয়ারভাঙ্গা ইউনিয়নের শাহপুর আব্দুল কাইয়ুমের বাড়ির পাশে উন্মুক্ত স্থান, পশ্চিম বড় ভাকৈর ইউনিয়নের নিতেশ রঞ্জন দাশ এর আবেদনকৃত চরগাঁও ভূমিহীন পাড়ার মধ্যবর্তী স্থানে আবেদনকারীদের খুঁজে পাওয়া যায়নি। এ প্রেক্ষিতে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নির্দেশনায় ডিওর বিপরীতে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। অভিযোগের বিষয়ে জানতে হবিগঞ্জ জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী তাহমিনা তানভীনকে কল দিলেও তিনি কল রিসিভ করেননি।