হবিগঞ্জে সংবাদ সম্মেলনে ব্যবসায়ীর দাবি
স্টাফ রিপোর্টার ॥ নবীগঞ্জের কালিয়ারভাঙ্গা ইউনিয়নে আক্তার হোসেন রুবেল নামে এক ব্যবসায়ী ও খামারীকে আওয়ামী লীগ নেতা পরিচয় দিয়ে দাদন ব্যবসাসহ কয়েকটি অভিযোগ এনে সম্প্রতি একটি মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এর সূত্রে কয়েকটি গণমাধ্যমে খবরও প্রকাশিত হয়। কিন্তু মানববন্ধনে যারা এসব অভিযোগ করেছেন, সেগুলো ষড়যন্ত্রমূলকভাবে সম্পূর্ণ মিথ্যা, কাল্পনিক ও উদ্ভট বলে দাবি করেছেন ওই ব্যবসায়ী। তিনি গতকাল বুধবার বিকেল ৪টায় হবিগঞ্জ প্রেসক্লাব মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য দ্বারা উত্থাপিত অভিযোগুলো অস্বীকার করেছেন। তিনি এই ইউনিয়নের রাণীগাও গ্রামের মৃত আকাদ্দছ আলীর ছেলে এবং মিলনগঞ্জ বাজার ও ছিদ্দেকপুরে মায়িশা ভেরাইটিজ স্টোর ও সায়মন ফিশারিজের কর্ণধার।
লিখিত বক্তব্যে আক্তার হোসেন রুবেল বলেন- মানববন্ধনে আমাকে আওয়ামী লীগের নেতা হিসেবে পরিচয় দিয়ে বক্তব্য দেয়া হয়েছে। কিন্তু আমি কখনো কোন রাজনৈতিক দলের সাথে সম্পৃক্ত নই। কখনো কোন রাজনৈতিক কর্মকা-ে অংশ নেইনি। আমি একজন ধান, চাল, সার, ডিজেল, বীজের মৌসুমী ব্যবসায়ী। পাশাপাশি আমার কয়েকটি মৎস্য খামার রয়েছে। দাদন ব্যবসায়ী হিসেবে আমাকে জড়িয়ে ওই মানববন্ধনে যে বক্তব্য দেয়া হয় এবং এর ভিত্তিতে সংবাদমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়। আদতে আমি বৈধভাবে আমার ব্যবসা ও খামার পরিচালনা করে পরিবার নিয়ে নিরীহভাবে জীবনযাপন করছি। আমার গ্রামের মৃত আব্দুন নূরের ছেলে রুহুল আমিন বাবু ও আব্দুল হক স্বপনের সাথে আমার দীর্ঘদিন ধরে ভূমিসংক্রান্ত বিরোধ চলছে। তারা আমার ক্রয়কৃত ভূমি জোরপূর্বকভাবে রেজিস্ট্রি করতে চান। আমার ফিসারি এলাকায় ৬৫ কেরের মধ্যখানে তাদের কিছু জমি আছে। সেই জমি আমি ছেড়ে দিয়েছি। এরপরও তারা ক্ষান্ত হননি। স্থানীয় আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা আমার ফিসারির পুকুরের পাড় কেটে ফেলেছে। যে কারণে আমার ফিসারির ব্যাপক ক্ষতি হয়। গত শুক্রবার (১৩ সেপ্টেম্বর) রুহুল আমিন বাবু ও তার লোকজন গ্রামের মানুষদের শিরনির দাওয়াত দিয়ে একত্রিত করে একটি মানববন্ধনের আয়োজন করেন। মানববন্ধনে তাদের নিজস্ব লোক মৃত মফিজ উল্লার ছেলে আয়েদ আলী অংশ নেন। তিনি তার বক্তব্যে বলেন- তার জমি আমি জোরপূর্বক দখল করে ভোগ করছি। প্রকৃতপক্ষে আয়েদ আলীর ভাই রফিক মিয়ার কাছ থেকে আমি ওই জমি ক্রয়সূত্রে মালিক। তার দেয়া বক্তব্য সম্পূর্ণ মিথ্যা।
মানববন্ধনে তাজিম উল্লা নামে এক ব্যক্তির অভিযোগ প্রসঙ্গে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়- এই ব্যক্তি ৫শ’ হাল জমির রাখালি ধান আমি দেইনি বলে অভিযোগ করেছেন। কিন্তু আশপাশের কয়েকটি গ্রাম মিলেও এত জমি নেই। প্রকৃতপক্ষে দুই বছর পূর্বে আমার ফিসারির নালা বিক্রি করি। তাজিম উল্লার কাছে সেই বিক্রির ৯ হাজার টাকা আমি এখনো পাই। সেই টাকা না দেয়ার জন্য এই ব্যক্তি আমার বিরুদ্ধে এরকম উদ্ভট অভিযোগ তুলেছেন। বানিয়াচং উপজেলার বেতকান্দি গ্রামের আনোয়ার মিয়া ভূয়া দলিল তৈরি করে আমার দাদা আবিদুল্লাহর এসএ রেকর্ডকৃত জমি ভোগদখল করে আসছেন। এনিয়ে আদালতে মামলা হয়। পরবর্তীতে গ্রামের সালিসানদের মাধ্যমে বিষয়টি নিষ্পত্তি হয়। এরপরও সে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অপবাদ দিয়েছে।
ব্যাংকের চেক জমার বিষয়টি অস্বীকার করে বলা হয়- জোরপূর্বক তার জমি দখলের অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। চানপুর গ্রামের আশরাফুল বেগম আমার কাছে তার চেক রয়েছে মর্মে যে বক্তব্য দিয়েছেন, তা একেবারে ডাহা মিথ্যা ও কাল্পনিক। আসলে এই নারীর ভাই ও চাচাত ভাইদের মধ্যে বাড়ির রাস্তা নিয়ে বিরোধ চলছে। যা নিয়ে একটি মামলা (যার নং- সিআর ৫৭১/২২ (নবী) বিচারাধীন রয়েছে। এই মামলায় আমাকে প্রতিহিংসামূলকভাবে আসামী করা হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসী রুহুল আমিন বাবু ও আব্দুল হক স্বপন মিলে আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে কয়েকজনকে প্রলোভন দেখিয়ে মানববন্ধনে কয়েকটি কাল্পনিক ও মিথ্যা অভিযোগ তুলেছেন।
সংবাদ সম্মেলনে আক্তার হোসেন রুবেলে সাথে আরো কয়েকজন উপস্থিত ছিলেন। তারা হলেন- সাবেক ইউপি সদস্য এনামুল হক, লিজদার লেবু মিয়া, নুরুল হক, আব্দুল সোবান, এলাকাবাসী কাসেম মিয়া, হেলাল মিয়া, জহিরুল ইসলাম, রিপন মিয়া, মিন্টু আলম, শাহ আলম ও শামীম মিয়া।