বিশেষ প্রতিবেদন…
মো. মামুন চৌধুরী ॥ বাহুবল উপজেলার পূর্ব দ্বিমুড়া গ্রামের ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের পাশে রেস্টুরেন্ট। এ খাবার রেস্টুরেন্টের পেছনে প্রায় ৩৩ শতক পরিত্যক্ত জমি আবাদ করেন মো. আজগর আলী। রেস্টুরেন্ট ব্যবসার পাশাপাশি তিনি ওই পরিমাণ জমিতে রোপণ করেন বরবটি বীজ। প্রায় ৪৫ দিনের মধ্যে গাছে গাছে বরবটি আসে। বরবটিগুলো বেশ লম্বা ও নজরকারা। আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে সিলেট অঞ্চলের কৃষি উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় ক্রিপার প্রদর্শনীতে বরবটি চাষে সফলতা পান মো. আজগর আলী। উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা শামীমুল হক শামীমের পরামর্শে মো. আজগর আলী ক্ষেত থেকে চাষকৃত বরবটি সংগ্রহ করে এ পর্যন্ত বিক্রি করেছেন ৬০ হাজার টাকা। চাষে ২০ হাজার টাকারমত খরচ হয়েছে। এখানে বাকি সময়ে আরও ৬০ হাজার টাকা বিক্রি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, ছেলেকে সাথে নিয়ে মো. আজগর আলী বরবটি ক্ষেতে কঠোর পরিশ্রম দিচ্ছেন। গাছ থেকে বরবটি সংগ্রহ করে প্রস্তুত করছেন বিক্রির জন্য। বরবটি চাষ করে সফলতা পাওয়ায় তিনি আনন্দিত।
মো. আজগর আলী জানান, ক্রিপার প্রদর্শনীতে সূর্য সীডের চায়না-২৪ জাতের বরবটি বীজ রোপণ করেন। এই মৌসুমে চাষে তার প্রায় ২০ হাজার টাকা খরচ হয়। গাছ থেকে বরবটি সংগ্রহ করে বিক্রির জন্য বাজারে নিয়ে যাচ্ছেন। পাইকারের কাছে প্রতিকেজি বরবটি ৬০ থেকে ৫৫ টাকায় বিক্রি করেন।
বর্তমানে গাছে গাছে বরবটি আছে। বরবটি বিক্রি করে প্রায় ৬০ হাজার টাকা এসেছে। সেপ্টেম্বর পুরো মাস পর্যন্ত বরবটি উৎপাদন অব্যাহত থাকার কথা। ওই সময় পর্যন্ত আরও ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকা বরবটি বিক্রি থেকে আসবে বলে তিনি আশা করছেন।
তিনি আরও জানান, উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা শামীমুল হক শামীমের সার্বিক পরামর্শে বরবটি চাষ করে সফল হয়েছেন। তার বরবটি চাষ দেখে এলাকার অন্য কৃষকদের মাঝেও আগ্রহ দেখা দিয়েছে। তারাও বর্ষাকালীন বরবটি চাষ শুরু করেছেন।
স্থানীয় কৃষক মো. তৌহিদ মিয়া বলেন, বর্ষাকালীন চায়না-২৪ জাতের বরবটি চাষ শুরু করেন মো. আজগর আলী। বরবটি চাষে তিনি সফল। পাইকাররা এ বরবটি প্রতিকেজি ৬০ থেকে ৫৫ টাকা দরে কিনে নিয়ে ৮০ থেকে ৯০ টাকায় বিক্রি করছেন। তাই আগামী মৌসুমে জমি আবাদ করে এ জাতের বরবটি চাষ করার ইচ্ছে রয়েছে।
উপজেলার দ্বিমুড়া কৃষি ব্লকের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা শামীমুল হক শামীম জানান, মো. আজগর আলী রেস্টুরেন্ট ব্যবসা করেন। আমি তাকে পরামর্শ দিয়েছি। তিনি আমার পরামর্শে পতিত জমি আবাদ করে বরবটি বীজ রোপণ করেন। বর্তমানে তার গাছে গাছে বরবটি রয়েছে।
তিনি আরও জানান, এখানকার উঁচু জমিতে কৃষকরা ধানসহ নানারকম সবজির আবাদ করেন। বর্তমানে আমার পরামর্শে একাধিক কৃষক চায়না-২৪ জাতের বরবটি আবাদ করেছেন। অনেকে আবার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। ভালো চাষের জন্য সবসময় পরামর্শ দিয়ে থাকি। ক্ষেতে ভালো ফলন হয়েছে। তারা দামও পাচ্ছেন ভালো।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাজ্জাদ হোসেন মজুমদার বলেন, বাহুবলে বরবটি চাষ তেমন একটা হতো না। বর্তমানে সেখানে ব্যাপকভাবে বরবটি চাষ করছেন কৃষকরা। ভালো ফলন হচ্ছে। কৃষকরা দামও পাচ্ছেন ভালো। ভবিষ্যতে বরবটি চাষ আরও বাড়বে বলে আশা করেন তিনি।