হবিগঞ্জ পল্লী বিদ্যুত সমিতির এলাকা পরিচালক নির্বাচনে অনিয়ম-দুর্নীতি
স্টাফ রিপোর্টার ॥ হবিগঞ্জ পল্লী বিদ্যুত সমিতির এলাকা পরিচালক পদের নির্বাচনে অনিয়ম, দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতির অভিযোগ পাওয়া গেছে।
অভিযোগে জানা যায়, পল্লী বিদ্যুত সমিতির পরিচালক হতে গেলে কোনো ধরণের রাজনীতি বা মামলায় অভিযুক্ত কিংবা টাকা তছরুপের সাথে জড়িত থাকলে কোনো ব্যক্তি এলাকা পরিচালক হতে পারবেন না। অথচ ২০১৯ সালের হবিগঞ্জ পল্লী বিদ্যুত সমিতির নির্বাচনে ৪নং মাধবপুর এলাকা পরিচালক হিসেবে মোঃ শাহ আলম সংশ্লিষ্টদের ম্যানেজ করে পরিচালক পদে নির্বাচিত হন। তখনকার সময়ে তার বিরুদ্ধে বিএনপি-জামায়াতের রাজনীতির সাথে জড়িত থাকার অভিযোগ করা হয়। অভিযোগ রয়েছে- শাহ আলমের পিতা নুরুল ইসলাম একজন রাজাকার ছিলেন। যা মাধবপুর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার নুরুল ইসলাম ও ডেপুটি কমান্ডার আব্দুল মালেক স্বাক্ষরিত পত্রে প্রমাণিত হয়েছিলো। মুক্তিযুদ্ধের সময় শাহ আলমের পিতা নুরুল ইসলাম ওরপে নুর মানবতাবিরোধী অপরাধের সাথে যুক্ত ছিলেন। ২০১৫ সালে ২ নভেম্বর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে রাজাকারের একটি তালিকা করা হয়। ওই তালিকায় শাহ আলমের পিতার নাম ২৮ নম্বরে ছিলো। তাছাড়া প্রশাসন কর্তৃক তদন্তে শাহ আলম ও তার পরিবারের লোকজনের সাথে বিএনপি-জামায়াতের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে এবং মাধবপুর উপজেলার ইটাখলা গ্রামের যুদ্ধাপরাধী ও তার পরিবারের সাথে শাহ আলমের সম্পর্ক রয়েছে প্রমাণিত হওয়ার পরও রহস্যজনক কারণে পল্লী বিদ্যুত সমিতির নির্বাচনের নিয়ম কানুন ভঙ্গ করে তাকে ৪নং এলাকা পরিচালক নির্বাচিত করে একটি স্বার্থান্বেষী মহল।
অভিযোগ রয়েছে, পল্লী বিদ্যুত সমিতির পরিচালক নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে বিভিন্ন অনিয়ম-দুর্নীতির সাথে জড়িয়ে পড়েন শাহ আলম। তার বিরুদ্ধে বাংলাদেশ বিদ্যুতায়ন বোর্ডসহ বিভিন্ন দপ্তরে একাধিক অভিযোগ করেন ঝারু মিয়া। বিদ্যুত লাইন নির্মাণ, রাইস মিল ও শিল্প প্রতিষ্ঠানে বিদ্যুত সংযোগ দেয়ার নামে টাকা তছরুপের অভিযোগ আনা হয় শাহ আলমের বিরুদ্ধে। যা বাংলাদেশ বিদ্যুতায়ন বোর্ডে অভিযোগ রয়েছে। এ ছাড়া আদালতেও তার বিরুদ্ধে মামলা করেন ঝারু মিয়া।
উল্লেখিত অভিযোগ থাকার পরও তা গোপন করে ২০১৯ সালের মতো ২০২৪ সালে আসন্ন হবিগঞ্জ পল্লী বিদ্যুত সমিতির এলাকা পরিচালক পদে নির্বাচিত হতে জোর তদবির চালিয়ে যাচ্ছেন শাহ আলম।
জানা গেছে, মাধবপুর ৪নং এলাকা পরিচালক হতে ৪ প্রার্থী মনোনয়নপত্র ক্রয় করলেও শাহ্ আলম অন্য ৩ প্রার্থীকে হুমকি, ধামকি কিংবা কৌশলে ম্যানেজ করে মনোনয়নপত্র দাখিল করা থেকে বিরত রাখেন। শুধু উল্লেখিত ৩ জনই নয়, মাধবপুরের অনেক যোগ্য ব্যক্তি এলাকা পরিচালক হওয়ার ইচ্ছাপোষণ করলেও পল্লী বিদ্যুত সমিতির লোকজনের যোগাসাজশে তাদেরকে মনোনয়নপত্র ক্রয় করা থেকে বিরত রাখেন।
২০১৯ সালের নির্বাচনেও তিনি একই কায়দায় অন্যান্য প্রার্থীদের ম্যানেজ করে এককভাবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেন এবং এলাকা পরিচালক নির্বাচিত হন। এ নিয়ে জনমনে প্রশ্ন উঠে।
এ বিষয়ে ৪নং এলাকা পরিচালক পদে মনোনয়ন প্রত্যাশী শাহ আলম তার বিরুদ্ধে আনিত সকল অভিযোগ অস্বীকার করেন।
স্বজনপ্রীতির ব্যাপারে হবিগঞ্জ পল্লী বিদ্যুতের জিএম সুজিত কুমার বিশ^াসের নিকট জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ বিষয়টি নির্বাচন কমিশনার জানেন।
নির্বাচন কমিশনার রাজিব জানান, তার বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট কোনো রিপোর্ট পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।