চুনারুঘাট প্রতিনিধি ॥ হবিগঞ্জের চুনারুঘাটে ইছালিয়া ছড়া ও মুরিছড়া থেকে অবৈধভাবে সিলিকা বালু উত্তোলন করে অনেকেই রাতারাতি কোটিপতি হয়ে গেছেন। এবার অবৈধভাবে বালু উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে অভিযানে নামার হুশিয়ারি দিয়েছে প্রশাসন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ইছালিয়া ও মুড়ি ছড়া সহ প্রায় ২০টি স্থানে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে বালু উত্তোলন করছে স্থানীয় কয়েকজন প্রভাবশালী নেতা। স্থানীয়রা জানান, দীর্ঘ ৯ বছর ধরে এ ছড়া থেকে সিলিকা বালু উত্তোলন করে অনেকেই রাতারাতি বনে গেছেন কোটিপতি। বালু নেয়ার পরিবহনে রাস্তাঘাট ভেঙ্গে যাওয়ায় স্থানীয়রা প্রতিবাদ করলে মিথ্যা মামলা দেয়ার হুমকি প্রদান করেন প্রভাবশালীরা। এতে করে ছড়ার দুই পাড় ভেঙ্গে যাওয়াসহ এলাকাবাসী চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন। ইদানিং প্রশাসনের নাম ভাঙ্গিয়ে সামছুল ও মিজান মিয়া নামে দুজন প্রভাবশালীর ছত্রছায়ায় থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে ব্যবসা করে যাচ্ছেন বলে জানা গেছে। ফলে পরিবেশ, রাস্তাঘাট ও অবকাঠামোর ক্ষতি হচ্ছে।
সম্প্রতি ড্রেজার মালিক মিজান ও অপর ব্যক্তির একটি অডিও রেকর্ড ভাইরাল হয়। ওই রেকর্ডে শুনা যায় মিজান মিয়া বলছেন সাংবাদিক, প্রশাসনকে ম্যানেজ করে তিনি বালু উত্তোলন করছেন। এনিয়ে এলাকায় তোলপাড় শুরু হয়েছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা প্রশাসন জানায়, অবৈধ বালু উত্তোলনকারী যত প্রভাবশালীই হোক আমরা তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব। যদি প্রশাসনের কেউ এর সাথে জড়িত থাকে তার বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জেলা প্রশাসক দেবী চন্দ বলেন, স্থানীয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কার্যক্রম চালু রেখেছেন। এর আগে ভ্রাম্যমান আদালত অভিযান পরিচালনা করে অকেগুলো ড্রেজার মেশিন ও পাইপ পোড়ানো হয়েছে। সুনির্দিষ্ট তথ্য পেলে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। বালু উত্তোলনকারী সামছুল ও মিজান সংবাদ প্রচার না করতে অনুরোধ করে বলেন, খনিজ সম্পদ উন্নয়ন ব্যুরোর পরিচালকের কাছ থেকে ইজারা নিয়েই বালু উত্তোলন করছেন তারা।
সূত্র আরো জানায়, গাজীপুর ইউনিয়নের ইছালিয়া ছড়া সিলিকা বালু কোয়ারীর ইজারা নেন সুজাতুল হক ভুইয়া। কিন্তু ইছালিয়া ছড়া থেকে বালু উত্তোলন না করে পাশের মুরিছড়া থেকে দিনরাত ড্রেজার মেশিন বসিয়ে সিলিকা বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। যদিও ইজারায় শর্তাবলী থাকে অযান্ত্রিক পদ্ধতি, ড্রেজার ও এস্কাভেটর মেশিন ব্যবহার করে সিলিকা বালু উত্তোলন করা যাবে না। কিন্তু বিধিমালা ও আইন অমান্য করে পরিবেশ, প্রতিবেশ ও প্রাণ প্রকৃতির ক্ষতি সাধন করে মানিকভান্ডার দুধপাতিল এলাকা হতে বালু উত্তোলন করে আসছেন তিনি।
উল্লেখ্য, জেলায় ২৩টি সিলিকা বালুর মধ্যে অনেকগুলো মহালই বন্ধ রয়েছে। এসব বালু বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণ ও সিরামিকের বিভিন্ন পণ্য তৈরীর কাজে ব্যবহৃত হয়।