রথযাত্রা মহোৎসবে জি কে গউছ
স্টাফ রিপোর্টার ॥ বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ও টানা ৩ বারের নির্বাচিত হবিগঞ্জ পৌরসভার পদত্যাগকারী মেয়র আলহাজ্ব জি কে গউছ বলেছেন- এই দেশ আমাদের, আমরা এই দেশকে ভালোবাসি। এই হবিগঞ্জ আমাদের, আমরা সকলে মিলেমিশে এই দেশের জন্য, এলাকার জন্য, মানুষের জন্য কিছু করতে পারলে আমাদেরকে বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যেতে হবে না। বিভিন্ন সময় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ বেশামাল হয়ে যান। তারা ভুলে যান মানুষের জীবন যেখানে ক্ষণস্থায়ী সেখানে ক্ষমতা চিরস্থায়ী হতে পারে না। তিনি গতকাল শুক্রবার বিকেলে হবিগঞ্জ ইসকন মন্দিরের রথযাত্রা মহোৎসবে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
জি কে গউছ আরও বলেন- মানুষ জীবন অল্প সময়ের জন্য। এই সময়ে যেন আমরা মানুষের কল্যাণে কাজ করতে পারি। এমন জীবন আমরা করিব গঠন, মরিলে হাসিবে তুমি কাঁদিবে ভুবন। দলমত ও ধর্মের উর্ধ্বে উঠে আমরা যেন কাজ করতে পারি, এটাই হউক রথ উৎসবে আমাদের সকলের প্রার্থনা।
তিনি বলেন- হবিগঞ্জের ইসকন বাংলাদেশের অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের চেয়ে আলাদা। এক জাঁক তরুণ সাহসি মানুষ হবিগঞ্জের বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষকে সঙ্গে নিয়ে এই প্রতিষ্ঠানটিকে দাড় করিয়েছেন। মানুষকে একত্রিত করার তাদের যে প্রয়াস আমি তা অন্তর থেকে শ্রদ্ধা করি। এজন্য ইসকনের সাথে আমার নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে।
জি কে গউছ বলেন- গত ৫ আগস্টের পর সারা বাংলাদেশে টুকটাক সমস্যা হয়েছে। আমি ইসকনের প্রিন্সিপাল সাহেবকে ফোন করে বলেছিলাম, আপনাদের প্রতিদিনের যে প্রার্থনা ছিল তা সেভাবেই নিয়মিত চলবে, আপনাদের জি কে গউছ রাস্তায় আছে। এই হবিগঞ্জ আমাদের। এখানে কেউ বিশৃঙ্খলা করবে আমরা তা বরদাস্ত করব না। হবিগঞ্জে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এক উজ্জল দৃষ্টান্ত রয়েছে। আমরা সকলে মিলে মিশে এই শহরটাকে সুন্দর করেছি।
তিনি বলেন- ২০০৪ সালে আমি হবিগঞ্জ পৌরসভার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর আমাকে এই রথ উৎসবে দাওয়াত করা হয়েছিল। আমাকে বলা হয়েছিল, পরিত্যক্ত রেল লাইন তুলে যদি রাস্তা করা যায় তাহলে আমাদের উৎসব, চলাফেরা, ব্যবসা বাণিজ্য করতে সুবিধা হবে। পরবর্তিতে শহরের অনেক দোকানপাট ভেঙ্গে রাস্তা প্রশস্ত করেছিলাম এবং রেল লাইন তুলে কামড়াপুর থেকে নছরতপুর পর্যন্ত বাইপাস রাস্তা নির্মাণ করেছিলাম। সেই সময় আমাকে অনেক মানুষ বদ দোয়া দিয়েছিলেন, কিন্তু এখন এই রাস্তা আমাদের সকলের আর্শিবাদ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
মেয়র থাকা অবস্থায় অনেকের চাপে আমাকে রথ উৎসব থেকে দূরে রাখতে হয়েছে, কিন্তু সাধু সন্ন্যাসীদের হৃদয় থেকে আমাকে আলাদা করতে পারেনি। তারা যখনই আমাকে স্মরণ করেছে আমি তাদের ডাকে সাড়া দিয়েছি। আমার প্রতিটি দুঃসময়ে তারা আমার পাশে ছিল। ইসকন থেকে আমাকে কেউ আলাদা করতে পারবে না। ইসকনের পাশে ছিলাম, আছি, ভবিষ্যতেও থাকব।
ইসকনের অধ্যক্ষ উদয় গৌর দাস ব্রহ্মচারীর সভাপতিত্বে ও প্রমথ সরকারের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) অমিত চক্রবর্ত্তী।
বক্তব্য রাখেন হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের জেলা সদস্য সচিব শংকর পাল, জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি অ্যাডভোকেট নলীনি কান্ত রায় নিরু, জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক হাজী এনামুল হক, পৌর বিএনপির সভাপতি তাজুল ইসলাম চৌধুরী ফরিদ প্রমূখ।