
মো. মামুন চৌধুরী ॥ হবিগঞ্জ ব্যাটালিয়ন (৫৫ বিজিবি) ৪ দিনে হবিগঞ্জ জেলার চুনারুঘাট ও মাধবপুর এবং মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গল উপজেলার সীমান্তবর্তী দুর্গম এলাকায় চোরাচালান ও মাদকদ্রব্য প্রতিরোধে একাধিক অভিযান পরিচালনা করেছে। এসব অভিযানে ১০ লাখ ৭৯ হাজার ২৫০ টাকা মূল্যের বিভিন্ন ধরণের চোরাচালানি পণ্য, মাদকদ্রব্য ও যানবাহন জব্দ করা হয়। বুধবার (১৮ জুন) বিকেলে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. তানজিলুর রহমান।
বিজিবি সূত্রে জানা যায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ৫৫ বিজিবির অধীনস্থ চুনারুঘাট উপজেলার চিমটিবিল, বাল্লা, গুইবিল বিওপি ও মাধবপুর উপজেলার মনতলা ও রাজেন্দ্রপুর বিওপি এবং শ্রীমঙ্গল উপজেলার সিন্দুরখান ও কাকমারাছাড়া বিওপি’র দায়িত্বপূর্ণ সীমান্ত এলাকায় অভিযান পরিচালনা করা হয়। এ সকল অভিযানে বাংলাদেশী কয়েল, ভারতীয় চিনি, গাঁজা, মদ, বিয়ার, ইস্কফ সিরাপ, বাইসাইকেল এবং সিএনজি আটক করে জব্দ করা হয়।
এর মধ্যে চুনারুঘাট উপজেলাধীন বাল্লা, গুইবিল ও চিমটিবিল বিওপি সীমান্তবর্তী এলাকায় বিজিবি সদস্যরা কৌশলগতভাবে ৩টি পৃথক চোরাচালান বিরোধী অভিযান পরিচালনা করে। বিজিবির উপস্থিতি টের পেয়ে চোরাকারবারীরা মালামাল ফেলে পালিয়ে গেলে বিজিবি সদস্যরা বাংলাদেশী মশার কয়েল, ২৩ কেজি ভারতীয় গাঁজা, ৩৮ বোতল মদ, ৪৩ ক্যান বিয়ার, ২ বোতল ইস্কফ সিরাপ ও ১টি সিএনজি আটক করে জব্দ করে। আটককৃত এসকল মাদক ও অন্যান্য মালামালের বাজার মূল্য ৯ লাখ ৪ হাজার ২৫০ টাকা।
মাধবপুর উপজেলার রাজেন্দ্রপুর ও মনতলা বিওপির বিজিবি টহল দলের উপস্থিতি টের পেয়ে চোরাকারবারীরা মাদকদ্রব্য ফেলে পালিয়ে যায়। বিজিবি সদস্যরা তল্লাশী চালিয়ে ১৯ কেজি ৫০০ গ্রাম ভারতীয় গাঁজা জব্দ করে। যার বাজারমূল্য প্রায় ৬৮ হাজার ২৫০ টাকা।
শ্রীমঙ্গল উপজেলার সিন্দুরখান বিওপি সীমান্তবর্তী এলাকায় পরিচালিত ৩টি পৃথক অভিযানে ১ লাখ ৫ হাজার টাকা মূল্যের ৩৫ বোতল ভারতীয় মদ এবং চিনি জব্দ করা হয়। এসময় অবৈধভাবে মাদক বহন করার অভিযোগে আইনী ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ১ জনকে পলাতক আসামী করে শ্রীমঙ্গল থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
জব্দকৃত মাদকদ্রব্য ও অন্যান্য পণ্যের বিষয়ে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের লক্ষ্যে মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গল থানা এবং হবিগঞ্জ জেলার চুনারুঘাট ও মাধবপুর থানায় একাধিক মামলা দায়ের করা হয়েছে।
সীমান্ত এলাকায় চোরাচালান ও আন্তঃ সীমান্ত অপরাধ প্রতিরোধে হবিগঞ্জ ব্যাটালিয়ন (৫৫ বিজিবি) সর্বোচ্চ সতর্কতা ও কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে বলে জানিয়েছেন ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোঃ তানজিলুর রহমান।
তিনি বলেন, আমাদের মূল লক্ষ্য হচ্ছে সীমান্তের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং চোরাচালান ও মাদকদ্রব্যের আগ্রাসন থেকে দেশ ও সমাজকে রক্ষা করা। দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষা ও সীমান্ত নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য আমরা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি। সম্প্রতি আমরা বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ অভিযানে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ মাদকদ্রব্য এবং চোরাচালানকৃত পণ্য জব্দ করতে সক্ষম হয়েছি।