শাজাহান মেম্বারের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানোর অভিযোগ
স্টাফ রিপোর্টার ॥ আজমিরীগঞ্জ উপজেলার জলসুখা ইউনিয়নের নোয়াগড় গ্রামে গত ৮ অক্টোবর মো. আক্তার মিয়া নামে এক ব্যক্তির নেতৃত্বে অপপ্রচার চালানোর দাবিতে এবার পাল্টা মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার বেলা ৩টায় স্থানীয় ঈদগা মাঠে ‘নোয়াগড় গ্রামের সর্বস্তরের জনগণ’ ব্যানারে এই পাল্টা মানববন্ধন করা হয়। এতে মো. আক্তার মিয়ার উপর বিভিন্ন অভিযোগে বক্তারা তার ফাঁসির দাবি করেন।
স্থানীয় ইউপি সদস্য ও নোয়াগড় গ্রাম পঞ্চায়েত কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জুনাব আলী সভাপতির বক্তব্যে মানববন্ধনে বলেন- গত ৮ অক্টোবর একটি মানববন্ধন আয়োজন করে গ্রাম কমিটির সভাপতি শাজাহান মেম্বারের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ তুলে অপপ্রচার চালানো হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে তিনি গ্রাম পঞ্চায়েতের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। এখন মিথ্যা মামলায় আসামী হওয়ায় তার সর্দারির দায়িত্ব আমাকে দিয়েছেন।
তিনি বক্তব্যে বলেন- আক্তারের চাচা সমসু মিয়া ও ফুফাত ভাই কাউছার মিয়া গ্রাম কমিটির ক্যাশিয়ারের দায়িত্ব পালন করেছেন। কিন্তু ৫ বছরে তারা কোন হিসাব দেননি। পরে গ্রামবাসী বসে তাদেরকে কমিটি থেকে বিদায় করেছেন। এরপর ২০২২ সালে সাহাব উদ্দিন নামে একজন ভাল মানুষকে দায়িত্ব দেয়ার পর কমিটির সব হিসাব ও ন্যায্যতা পেয়েছেন গ্রামবাসী।
তিনি দাবি করে বলেন- শাজাহান মেম্বারের মত একজন ভাল মানুষের বিরুদ্ধে আক্তার মিয়া চোর-ডাকাতদের নিয়ে মানববন্ধন করেছে। সে একজন সন্ত্রাসী ও খুনী। ২টি খুনসহ বিভিন্ন অপরাধে তার বিরুদ্ধে ১০টি মামলা রয়েছে। বর্তমানে দুইটি খুনের মামলারই ওয়ারেন্টভুক্ত আসামী আক্তার মিয়া। তাকে দ্রুত গ্রেপ্তার করে ফাঁসির দাবি জানাই।
মানববন্ধনে আরো বক্তব্য রাখেন জুলসুখা ইউনিয়ন পরিষদের ৮নং ওয়ার্ডের সদস্য মুকিত মিয়া, জেলা যুবদল নেতা মোতাহের হোসেন, ইউনিয়ন বিএনপি নেতা মো. সেলিম মিয়া, বিএনপি নেতা ও গ্রাম কমিটির ক্যাশিয়ার সাহাবুদ্দিন, নোয়াগড় গ্রাম পঞ্চায়েত কমিটির উপদেষ্টা মো. ফুল মিয়া, সদস্য মোতালিম মিয়া, নুর আহম্মদ, মাফিক মিয়া, বাহার মিয়া, রনজু মিয়া, হাবিব মিয়া, ছোবা মিয়া, মওদূদ মিয়া, রাসেল মিয়া, জাহাঙ্গীর মিয়া, তোয়াহির মিয়া, মহিকুল, আবিদ উল্লা, দিলু মিয়া, বাদল মিয়া, হারিছ উল্লা, আশ্বব আলী, ছাকিবুর মিয়া, জনাব আলী , আব্দুল মাঈন, আলী নুর মিয়া প্রমুখ।
ইউপি সদস্য মুকিত মিয়া বলেন- গত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে নোয়াগড় গ্রামে ২২শ’ ভোট কাস্ট হয়। এর মধ্যে ভাইস চেয়ারম্যান পদে শাজাহান মেম্বার ২১শ’ ১৩ ভোট পেয়েছেন। তিনি খারাপ মানুষ হলে গ্রামবাসী তাকে একচেটিয়াভাবে নিশ্চয়ই ভোট দিতেন না। তিনি গ্রামের সাধারণ মানুষের জন্য সবসময়ই উপকার করেন বলেই তাকে সবাই সমর্থন করেন। তিনি শুধু নোয়াগড় গ্রাম নয়, আজমিরীগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ধর্মীয় ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান উন্নতির জন্য নিঃস্বার্থভাবে কাজ করেছেন। এরকম পরোপকারী লোকের বিরুদ্ধে মানববন্ধন করে অপপ্রচার করায় এলাকাবাসী মর্মাহত ও ক্ষুব্ধ। খুনের মামলায় অভিযুক্ত আক্তার মিয়াকে দ্রুত গ্রেপ্তারের জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে অনুরোধ করছি।
মানববন্ধনে সাবেক ইউপি সদস্য শাজাহান মিয়ার সন্তান হাফেজ মাওলানা পায়েল মিয়া অভিযোগ করে বলেন- আমার বাবার বিরুদ্ধে মিথ্যা হত্যা মামলায় ফাঁসানোর চেষ্টা করেছিলেন আক্তার মিয়া ও তার লোকজন। কিন্তু সিআইডির তদন্তে মিথ্যা প্রমাণিত হয়। গত ৮ অক্টোবর এরকম মিথ্যা-বানোয়াট অভিযোগ তুলে আমার বাবার বিরুদ্ধে মানববন্ধন করা হয়। আক্তার মিয়া নিজে দুটি খুনের মামলার আসামী। এখন সে আমার বাবাকে খুন করে লাশ গুমের পরিকল্পনা করছে। আমার বাবার বিরুদ্ধে যে অস্ত্র মামলা হয়েছিল, এর স্বাক্ষী ছিলেন আক্তার ও তার লোক মিন্টু মিয়া। পরে তারা এই মামলাকে মিথ্যা বলে আদালতে এফিডেভিটও দিয়েছেন।
মানববন্ধন শেষে ঈদগা থেকে বাজার পর্যন্ত আক্তার হোসেনের ফাঁসির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেন গ্রামবাসী। মানববন্ধন ও মিছিলে গ্রামের সহস্রাধিক নারী ও পুরুষ উপস্থিত ছিলেন।