বানিয়াচং প্রতিনিধি ॥ বানিয়াচং উপজেলা সদরের ২নং উত্তর পশ্চিম ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও হবিগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা হায়দারুজ্জামান খান ধন মিয়ার বাড়িতে আগুন দিয়েছে উত্তেজিত ছাত্র-জনতা। গত ৫ জুলাই থেকে ৪ আগস্ট পর্যন্ত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় স্থানীয় শহিদ মিনারে ব্যক্তিগত বন্দুক দিয়ে অন্দোলনকারীদের গুলিবর্ষণ করেন ধন মিয়া। এতে তার প্রতি ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেন স্থানীয় জনগণ।
স্থানীয়রা জানান, গত ২ আগস্ট আন্দোলনকারীরা বানিয়াচংয়ে বিক্ষোভ করার সময় পুলিশের সাথে সংঘর্ষ বাঁধে। এ সময় পুলিশ আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে তাদের ওপর বুলেট ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে। এক পর্যায়ে চেয়ারম্যান ধন মিয়া তার বন্দুক দিয়ে আন্দোলনকারীদের গুলিবর্ষণ করেন। ৫ আগস্ট দুপুর ১২টায় কয়েক হাজার আন্দোলনকারী থানা ঘেরাও করলে তাদের উপর গুলিবর্ষন করা হলে গুলিবিদ্ধ হয়ে ৬ জন মারা যান। এ সময় স্থানীয় লোকজন থানার ভেতরে ধন মিয়া আত্মগোপনে আছেন দাবি করে তাকে জনতার হাতে তুলে দেওয়ার জন্য সেনা সদস্যের কাছে দাবি করেন। শুধু তাই নয়, ধন মিয়া তার বন্দুক দিয়ে গুলিবর্ষণ করে আন্দোলনকারীদের হত্যা করেছেন বলেও অভিযোগ তুলেন উত্তেজিত ছাত্র-জনতা। সেখানে ধন মিয়াকে না পেয়ে কয়েকশ মানুষ ধন মিয়ার বাড়িতে গিয়ে আগুন ধরিয়ে দেন এবং তাকে খোঁজতে থাকেন। এরপর থেকে চেয়ারম্যান তার বন্দুকসহ আত্মগোপনে আছেন। এলাকাবাসীকে নির্যাতন ও বন্দুক দিয়ে বহু মানুষকে আহতসহ অনেককে অন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। ২০২২ সালের ৫ মে আধিপত্য নিয়ে হাজারও এলাকাবাসীর সাথে সংঘর্ষে জড়িয়ে তিনি নির্বিচারে গুলিবর্ষণ করেন। এতে সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ইকবাল বাহার খান ও ইউপি সদস্য মখলিছ মিয়া চোখ হারান এবং অসংখ্য মানুষ গুলিবিদ্ধ হন। অপরদিকে নিজের আধিপত্য বিস্তার করে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠার নামে চাঁদাবাজি করে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন তিনি। তাকে গ্রেফতারের পাশাপাশি অবৈধ সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে নিহতদের পরিবারকে সহায়তার দাবি জানান স্থানীয়রা।
বানিয়াচংয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত মেজর মাহি আহমেদ চৌধুরী বলেন, থানা পুলিশের কার্যক্রম চালু হলে অভিযোগের ভিত্তিতে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।