ডেস্ক রিপোর্ট ॥ আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে নির্বিঘেœ ভোটগ্রহণ সম্পন্ন করার লক্ষ্যে কেন্দ্র পাহারায় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ১৬ থেকে ১৯ জনের ফোর্স মোতায়েন থাকবে। এছাড়া বৈধ অস্ত্র প্রদর্শন বা বহনও বন্ধ থাকবে ১৪ দিন। নির্বাচন কমিশন (ইসি) কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সম্প্রতি অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
সূত্রগুলো জানিয়েছে, সমতলে সাধারণ কেন্দ্রে সর্বনিম্ন ১৬ জন ও সর্বোচ্চ ১৮ জন এবং পাহাড়ে সর্বনিম্ন ১৭ জন ও সর্বোচ্চ ১৯ জন করে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য নিয়োজিত থাকবেন। এক্ষেত্রে পুলিশ, আনসার ও গ্রাম পুলিশের সদস্যদের নিয়োজিত করা হবে।
নির্বাচনী এলাকায় শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষার্থে মোবাইল, স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে দায়িত্বপালনের জন্য বিজিবি, কোস্টগার্ড, র্যাব, পুলিশ ও আর্মড পুলিশ মোতায়েন করা হবে। প্রতিটি উপজেলার ইউনিয়ন-পৌরসভার সংখ্যা, আয়তন, ভোটার সংখ্যা ইত্যাদির ভিত্তিতে মোবাইল ও স্ট্রাইকিং ফোর্সের সংখ্যা নির্ধারিত হবে। প্রতিটি উপজেলায় মোবাইল ও স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে কতটি টিম, প্লাটুন মোতায়েন করা হবে তার সংখ্যা সংশ্লিষ্ট বাহিনী ভোটগ্রহণের ৫দিন আগে নির্বাচন কমিশনকে লিখিতভাবে জানাবে। ভোটকেন্দ্রে নিয়োজিত আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ভোটগ্রহণের আগের দুই দিন, ভোটের দিন এবং পরের এক দিন এবং যাতায়াত ও অন্যান্য প্রস্তুতিমূলক একদিনসহ মোট ৫ দিন, তবে অঙ্গীভূত আনসার প্রশিক্ষণের জন্য একদিনসহ মোট ৬ দিন নিয়োজিত থাকবে। মোবাইল ও স্ট্রাইকিং ফোর্স ভোটগ্রহণের আগের দুইদিন, ভোটের দিন ও পরবর্তী দুইদিনসহ মোট ৫ দিনের জন্য মোতায়েন থাকবে। নির্বাচনী এলাকায় মোতায়েনকৃত আইন-শৃঙ্খলাসহ সব বাহিনী জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে রিপোর্ট করবে এবং জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের সিদ্ধান্ত ও পরামর্শক্রমে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত থাকবে। রিটার্নিং অফিসারের চাহিদা অনুযায়ী জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের নির্দেশনাক্রমে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর মোবাইল, স্ট্রাইকিং টিম বিভাজন করা যাবে।
নিজ নিজ দায়িত্বপ্রাপ্ত এলাকার সামগ্রিক নিরাপত্তা এবং ভোটকেন্দ্রের নিরাপত্তা বিধানে সকল আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মোতায়েন ইত্যাদি দায়িত্বে থাকবেন জেলা ম্যাজিস্ট্রেট। তবে নির্বাচনী এলাকায় মোবাইল ও স্ট্রাইকিং ফোর্স নিয়োগে সংশ্লিষ্ট পুলিশ সুপার জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের সাথে পরামর্শক্রমে এ সংক্রান্ত কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করবেন। সার্বিক নির্দেশনা প্রদানের লক্ষ্যে জননিরাপত্তা বিভাগ, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সকল আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থার প্রতিনিধিদের সাথে সভা অনুষ্ঠানের মাধ্যমে একটি কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করবে। জেলা, উপজেলা পর্যায়ে জেলা ম্যাজিস্ট্রেট তার অধিক্ষেত্রে আইন মোতাবেক সার্বিক সমন্বয়কের দায়িত্ব পালন করবেন।
এদিকে আচরণ বিধি প্রতিপালন নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে তফসিল ঘোষণার তারিখ থেকে ভোটগ্রহণের ৩ দিন আগ পর্যন্ত প্রতি উপজেলায় একজন করে এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ করা হয়েছে। এছাড়া আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা ও অপরাধ প্রতিরোধে ভোটগ্রহণের ৩ দিন আগ থেকে ভোটের পরের দিন পর্যন্ত প্রতি ৩টি ইউনিয়নের জন্য একজন করে এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগের সিদ্ধান্ত হয়েছে। সেইসাথে মোবাইল, স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে নিয়োজিত আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী বিশেষ করে বিজিবি ও কোস্টগার্ডের প্রতিটি টিমের সাথে একজন করে এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োজিত থাকবে।
নির্বাচনী অপরাধসমূহ বিচারের জন্য আমলে নেওয়া ও সংক্ষিপ্ত বিচার কার্য সম্পন্নের লক্ষ্যে ভোটগ্রহণের দুদিন আগ থেকে দুদিন পর পর্যন্ত প্রতি উপজেলায় একজন করে ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ করা হবে। এদিকে ভোটগ্রহণের পূর্ববর্তী ৭ দিন থেকে ভোটগ্রহণের পরবর্তী ৭ দিন পর্যন্ত বৈধ অস্ত্র বহন ও প্রদর্শন নিষিদ্ধ থাকবে।
সারা দেশের মোট ৪৯৫টি উপজেলার মধ্যে ৪৭৬টি উপজেলা পরিষদের নির্বাচন ৪টি ধাপে অনুষ্ঠানের জন্য নির্বাচন কমিশন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। অবশিষ্ট ১৯টি উপজেলা পরিষদের না হওয়ায় পরবর্তীতে নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রয়োজন হবে। প্রথম ধাপে ১৫০টি উপজেলায় ৮ মে, দ্বিতীয় ধাপে ১৬০ উপজেলায় ২১ মে, তৃতীয় ধাপে ১১২ উপজেলায় ২৯ মে ও চতুর্থ ধাপে ৫৫ উপজেলায় ৬ জুন ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। প্রথম ধাপে ২২টি, দ্বিতীয় ধাপে ২৪টি, তৃতীয় ধাপে ২১ ও চতুর্থ ধাপে দুটি উপজেলায় ইলেকট্রনিক মেশিনে (ইভিএম) ভোটগ্রহণ করা হবে।
ইসি সচিব মোঃ আলম এ বিষয়ে বলেন, সুষ্ঠু ও সুন্দর নির্বাচনের জন্য প্রয়োজনীয় সকল ব্যবস্থাই নেওয়া হবে। এক্ষেত্রে আগের চেয়ে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বেশি সংখ্যক নিয়োজিত করা হবে।
© স্বত্ব দৈনিক হবিগঞ্জের মুখ ২০১৯
ওয়েবসাইটটি তৈরী করেছে ThemesBazar.Com