পাওনা টাকা নিয়ে দ্বন্দ্বের জের ধরে দুই গ্রামবাসীর সংঘর্ষ ॥ আহত শতাধিক
নবীগঞ্জ প্রতিনিধি ॥ পাওনা টাকা নিয়ে দ্বন্দ্বের জের ধরে দুই গ্রামবাসীর সংঘর্ষে নবীগঞ্জ উপজেলার ইমামবাড়ি বাজার পরিণত হয়েছিল রণক্ষেত্রে। পুরানগাঁও ও দেবপাড়া (ডেবরা) গ্রামবাসীর মধ্যে জমিতে হাল চাষের টাকা পাওনাকে কেন্দ্র করে গতকাল সোমবার সকালে দু’দফা ভয়াবহ সংঘর্ষে শতাধিক লোক আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। সোমবার ৮ জানুয়ারি সকালে হাওরে এবং রবিবার রাতে স্থানীয় ইমামবাড়ি বাজারে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। রাতে দুই ঘন্টা স্থায়ী সংঘর্ষে উভয় পক্ষের শতাধিক লোক আহত হয়েছে। গুরুতর আহত ৪ জনকে ঢাকা, ৩ জনকে সিলেট ও বাকী আহতদের হবিগঞ্জ, নবীগঞ্জ হাসপাতালে ভর্তি এবং প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। খবর পেয়ে পুলিশ বিজিবি ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
রবিবার রাত ৭টা থেকে ৯টা পর্যন্ত উপজেলার কালিয়ারভাঙ্গা ইউনিয়নের ইমামবাড়ি বাজারে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সোমবার সকাল ৮টা থেকে ১০টা পর্যন্ত সংঘর্ষ চলে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নবীগঞ্জ উপজেলার কালিয়ারভাঙ্গা ইউনিয়নের পুরানগাও গ্রামের আবু মিয়ার জমিতে মেশিন দিয়ে হাল চাষ করেন একই ইউনিয়নের দেবপাড়া (ডেবরা) গ্রামের সামছুজ্জামান। রবিবার সন্ধ্যায় ইমামবাড়ি বাজারে হাল চাষের বাকী পাওনা টাকা আবু মিয়ার নিকট খুজলে তা দিতে টালবাহানা করে। এ নিয়ে উভয়ের মধ্যে বাকবিতন্ডার সৃষ্টি হয়। এক পর্যায়ে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে আবু মিয়ার পক্ষে পুরানগাওঁ এবং সামছুজ্জামানের পক্ষে দেবপাড়া গ্রামের লোকজন হাকডাক দিয়ে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে ইমামবাড়ি বাজারে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। প্রায় দু’ঘন্টা ব্যাপী সংঘর্ষে ইটপাটকেল ব্যবহার করা হয়। এতে উভয় পক্ষের শতাধিক লোক আহত হয়। খবর পেয়ে ওসি মোঃ মাসুক আলীর নেতৃত্বে থানার একদল পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে হিমশিম খায়। এক পর্যায়ে জেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট সুলতান মাহমুদসহ স্থানীয় লোকজন এগিয়ে আসলে তাদের সহযোগিতায় পুলিশ ঘন্টাখানেক পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়। সংঘর্ষ চলাকালে রাস্তার উভয় পাশে শতাধিক গাড়ী আটকা পড়ে। ইমামবাড়ি বাজার রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। সাধারণ ব্যবসায়ী ও মানুষের মধ্যে আতংক বিরাজ করে। স্থানীয় লোকজন দেবপাড়া গ্রামের আহতদের হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে উন্নত চিকিৎসার জন্য ৪ জনকে ঢাকায় প্রেরণ করা হয়েছে। বাকীদের হবিগঞ্জ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। পুরানগাওঁ গ্রামের আহতদের নবীগঞ্জ হাসপাতালে নিয়ে আসলে নাজিম উদ্দিন (৩৩), মোর্শেদ (৪৫) ও রিপন মিয়া (৩০) কে সিলেট প্রেরন করা হয়েছে। বাকী আহত শাহ আলম ( ২৭), আলামীন (১৮), হেলাল মিয়া (২০), হাফিজুর রহমান (৬০) ও তবারক মিয়া (৪৫) কে ভর্তি দেয়া হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান- রবিবার রাতে উপজেলার কালিয়ারভাঙ্গা ইউনিয়নের দেবপাড়া ও পুরানগাঁও গ্রামের দুইপক্ষের মধ্যে পানি সেচের টাকা নিয়ে প্রথমে বাকবিত-া ও পরে ভয়াবহ সংঘর্ষ শুরু হয়। দুই ঘন্টাব্যাপী সংঘর্ষে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র ও ইটপাটকেল ব্যবহার হয়।
এ ব্যাপারে নবীগঞ্জ থানার ওসি মো. মাসুক আলীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান- দুই দফায় সংঘর্ষের খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে গিয়েছি, বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।