আক্তার হোসেন আলহাদী ॥ নানা প্রতিকূলতার পরও এ বছর বানিয়াচংয়ে আমন ধানের ভালো ফলন হয়েছে। উপজেলার ১৫টি ইউনিয়নেই ফসলের মাঠজুড়ে এখন শুধু ধান আর ধান। প্রতিকূলতা সত্ত্বেও আমনের ভালো ফলন হওয়ায় ভালো দাম পেলে কৃষকরা এবার লাভবান হবেন বলে আশা করছেন। কৃষক কষ্ট করে ফসল উৎপাদন করলেও দামের বেলায় অধিকাংশ ক্ষেত্রে তারা বঞ্চিত ও প্রতারিত হন। আমনের পাশাপাশি অন্যান্য ফসলের ক্ষেত্রেও একই ঘটনা ঘটে। সিন্ডিকেটের কারণে উৎপাদন খরচের চেয়ে অনেক কম মূল্যে ধানসহ বিভিন্ন ফসল বিক্রি করতে বাধ্য হন কৃষক।
অতিবৃষ্টির পানিতে ক্ষয়ক্ষতি, পোকার আক্রমণ ও রোগবালাই হওয়ার কারণে গেলো বছর ক্ষয়ক্ষতি বেশি হলেও এ বছর ক্ষতি হয়েছে কম। উপজেলা জুড়ে শুরু হয়েছে ধান কাটা ও মাড়াই। কৃষককূলে বিরাজ করছে উৎসবের আমেজ।
কৃষক মোঃ আব্দুল মন্নান জানান, এ বছর বর্ষার শুরুতে আকাশে পানির অভাব ছিল। হাইব্রিড জাতের ধান লাগিয়ে বিপাকে পড়েছিলাম। এরপর অতিবৃষ্টির পানিতে কিছুটা ক্ষয়ক্ষতি, পোকার আক্রমণ ও রোগবালাই হওয়ার পরও যতটুকু ফলন হয়েছে তা যতেষ্ট। ধানের ফলন মোটামুটি বিঘায় ৮ থেকে ১০ মণ হবে। যারা একটু আগাম আমন ধান চাষ করেছেন তাদের ধান কাটা প্রায় শেষ হয়ে গেছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে সপ্তাহ দিনের ভিতরে ধান কাটা শেষ হয়ে যাবে বলে জানান তিনি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোঃ এনামুল হক বলেন, উপজেলায় এ বছর ৯ হাজার হেক্টর জমিতে রোপা আমন ধান আবাদ হয়েছে। যার সম্ভাব্য ফলন প্রায় ৩৬ হাজার মেট্রিক টন। স্বল্প জীবনকালীন উচ্চ ফলনশীল জাত ব্যাপকভাবে বিস্তৃত লাভ করছে। সম্পূর্ণ আমন মৌসুম ভালো ফসল উৎপাদনের জন্য অনুকূলে ছিল। এবার আমনের মোটামুটি ভালো ফলন হয়েছে। এছাড়াও আগাম আমন ধান কেটে সঠিক সময়ে রবি শস্য চাষাবাদ করা সম্ভব হবে।
উপজেলার বিভিন্ন হাওর ঘুরে দেখা যায়, মাঠে মাঠে আমন ধান কাটার ধুম পড়েছে। বেশির ভাগ জমিতেই কম্বাইনহারভেস্টার (ধান কাটার যন্ত্র) দিয়ে ধান কাটতে দেখা যায়। একই যন্ত্রে হচ্ছে কাটা, মাড়াই-ঝাড়াই সব। জমি থেকেই বস্তাবন্দি করে বাড়ি নিয়ে যাচ্ছেন কৃষক। কিছু কিছু এলাকায় শ্রমিক দিয়ে কাটানো হচ্ছে ধান। যদি কৃষকরা ধানের ভালো দাম পায় তাহলে চাহিদা ও খরচ পোষাতে পারবে।
© স্বত্ব দৈনিক হবিগঞ্জের মুখ ২০১৯
ওয়েবসাইটটি তৈরী করেছে ThemesBazar.Com