আব্দুল আউয়াল তালুকদার
বাংলাদেশের স্বাধীনতা হয়েছে অর্ধ শতাব্দি। স্বাধীনতার পর বাংলাদেশকে ঢেলে সাজানোর উদ্যোগ নেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তিনি দেশের মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তি ও অবকাঠামোর উন্নয়নের জন্য নানা বাস্তবমুখি পদক্ষেপ গ্রহণ করতে আপ্রাণ চেষ্ঠা চালিয়ে যেতে থাকেন। এর মধ্যে ১৯৭৫ সালে স্বাধীনতা বিরোধীরা জাতির জনককে হত্যা করে। বাংলাদেশের সব অগ্রগতি, উন্নতি যাতে না হয় সব দিক দিয়ে বাংলাদেশকে পিছনে ফেলে রাখে। এর মধ্যে সামরিক শাসন জিয়া এবং এরশাদ দীর্ঘদিন রাষ্ট্র পরিচালনা করে থাকেন। ১৯৯১ সালে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক সরকার রাষ্ট্র পরিচালনার সুবাদে দেশের মানুষের প্রত্যাশা অনেক গুণ বেড়ে যায়। তবে সরকার পরিচালনা, দুর্নীতি, লুটপাট এবং দেশের সকল পর্যায়ে দুর্নীতি স্বজন প্রীতির মাত্রা ছাড়িয়ে যায়। দেশে তখন মাত্রাতিরিক্ত দলীয় সরকারের আনুগত্যের কারণে সকল পর্যায়ে চাকুরী বাণিজ্য ব্যাপক প্রসার হতে থাকে। দলীয় লোকজন টাকা দিয়ে চাকুরী পেয়ে যায় এমন কী পাবলিক সার্ভিস কমিশন-এ (পিএসসি) দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতির খবর সবারই জানা। ২০০৬ সাল থেকে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমল থেকে শুরু হয় রাষ্ট্র মেরামতের প্রক্রিয়া। যার ধারাবাহিকতা আওয়ামী লীগ সরকার আসার পর থেকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে সকল সরকারি প্রথম শ্রেণির চাকুরী ও বিভিন্ন সরকারি গুরুত্বপূর্ণ পদগুলোর চাকুরী পুলিশের কনস্টেবল থেকে শুরু করে অফিসার পদে, পাবলিক সার্ভিস কমিশনের অধীনে সকল পরীক্ষা, সরকারি ব্যাংকগুলোর নিয়োগ পরীক্ষা অত্যন্ত স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ ভাবে সম্পন্ন হয়েছে। একসময় এই নিয়োগ বাণিজ্য সরাসরি এমপি সাব ও মন্ত্রি সাবরা করতেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সরাসরি হস্তক্ষেপের কারণে চাকুরী বাণিজ্য বন্ধ করতে পেরেছেন। আমার লেখায় পাঠকরা মনে করতে পারেন, আমি কী সরাসরি কোন দলকে সমর্থন করছি কী না। আমি ব্যক্তিগত ভাবে কোন দলই করি না। আমি দেশের সরকারি চাকুরীর ক্ষেত্রে শতভাগ নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছতা তুলে ধরলাম। সরকারি সব বিভাগে কমবেশি যাওয়া আসার কারণে এই তথ্যগুলো তুলে ধরলাম। চাকুরী বাণিজ্যের কিছুপদ দুর্নীতি দিয়ে হয় না তা বলবো না। আমাদের বর্তমান প্রজন্মের ছেলে মেয়েরা বাবা-মাকে সঠিক তথ্য দেয় না। দেশের সরকারি চাকুরীর ক্ষেত্রে শতভাগ ফেয়ার এই তথ্যগুলো আমাদের ছাত্র-ছাত্রীরা তাদের পরিবারের অভিভাবকদের বলে না। আমাদের অভিভাবকদের তারা জানায় সরকারি চাকুরীর ক্ষেত্রে ঘুষ ছাড়া হয় না। এই মিথ্যা অপবাদ দিয়ে দেশ থেকে বিদেশে পড়শোনার কথা বলে পাড়ি জমায়। আমি অনেক বিদেশ পড়–য়া ছাত্র-ছাত্রীদের জিজ্ঞেস করছি, কেন এই মিথ্যা অপবাদ দিয়ে বিদেশে পাড়ি জমাচ্ছো। অথচ এই সকল ছাত্র-ছাত্রী স্কুল কলেজে ভর্তির পর পড়াশোনা থেকে অনেক দূরে ছিল। সারা দিন আড্ডা, গল্পগুজব, রাজনীতি, বিভিন্ন অপকর্মে জড়িয়ে পড়ে। বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মের ছাত্র-ছাত্রীরা মাদকের সাথে জড়িয়ে পড়ে। যখনি পড়াশোনা শেষ করে কর্মজীবনে ফিরবে তখনি অভিভাবকদের নানা মিথ্যা কথা বলে বিদেশে পাড়ি জমানোর উদ্দেশ্যে চলে যায়। আমাদের ভবিষৎ প্রজন্ম যেভাবে দেশ থেকে চলে যাচ্ছে, আমাদের অভিভাবকদের এই ক্ষেত্রে ভেবে চিন্তে অগ্রসর হওয়া জরুরী। এমন সময় আসবে আমাদের প্রজন্ম আমাদের কাছ থেকে অনেক দূরে চলে যাবে। তাই দেশের চাকরী বাজার শতভাগ ফেয়ার যেহেতু, পড়াশোনা শেষ করে দেশেই আত্মকর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি রয়েছে।