ঘাতক সুজন এলোপাতাড়ি কুপিয়ে আকলিমার দুই হাত ও এক পা দেহ থেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলে ॥ অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে মারা যায় সে

নিজস্ব প্রতিনিধি ॥ চুনারুঘাট উপজেলার গাজীপুর ইউনিয়নের খেতামারা গুচ্ছগ্রামে তালাক দেয়া স্ত্রীকে নির্মমভাবে কুপিয়ে হত্যা করেছে সাবেক স্বামী সুজন মিয়া (৩৮)। এ ঘটনায় বিক্ষুব্ধ হয়ে স্থানীয় জনতা অভিযুক্ত সুজন মিয়াকে পুলিশে ধরিয়ে দিয়েছে। অভিযুক্ত সুজন মিয়া ওই গ্রামের ফজল মিয়ার পুত্র।
সূত্র জানায়, সুজন মিয়ার সাথে একই গ্রামের মৃত আব্দুর রশিদের কন্যা আকলিমার বিয়ে হয়। বিয়ের পর তাদের কোলজুড়ে ৭ সন্তান জন্মগ্রহণ করে। কিন্তু পরবর্তীতে বনিবনা না হওয়ায় সম্প্রতি তাদের মধ্যে তালাক হয়ে যায়। গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় রাস্তায় সাবেক স্বামী-স্ত্রীর দেখা হলে তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে বাকবিতন্ডা হয়। এক পর্যায়ে সুজন মিয়া ধারালো অস্ত্র দিয়ে উপর্যুপুরি কুপিয়ে আকলিমাকে ক্ষতবিক্ষত করে। এলোপাতাড়ি কোপানোর কারণে আকলিমার দুই হাত ও এক পা দেহ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এ পরিস্থিতিতে আকলিমার চিৎকারে আশপাশের লোকজন ঘটনাস্থলে এসে সুজন মিয়াকে আটক করে উত্তম মধ্যম দেয় এবং আকলিমাকে চুনারুঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। সেখানে তার অবস্থার অবনতি হলে তাকে সিলেট এমএজি ওসমানি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। সিলেট নেয়ার পথে নবীগঞ্জ উপজেলার আউশকান্দি এলাকায় আকলিমার (২৮) মৃত্যু হয় বলে জানান তার ভাই ফিরোজ মিয়া।
আকলিমার স্বামী সুজনের দাবি- আকলিমা ৭ ছেলে-মেয়ে ও তাকে রেখে আরও দুটি বিয়ে করেছে। সেই ক্ষোভে আকলিমার হাত-পা কেটে দিয়েছেন তিনি।
আকলিমার মেজ মেয়ে তানজিনা আক্তার জানান- তার বাবা মাদকাসক্ত। প্রায়ই নেশা করে বাড়ি ফিরে তাদের মাকে নির্যাতন করতেন। তানজিনা বলেন- ‘বাবা আমাদের ভরণপোষণ করেন না। মা-ই আমাদের একমাত্র ভরসা। আমার বাবা সেই মায়ের হাত-পা কেটে দিয়েছে। এখন আমরা কেমনে বাঁচুম’ এই বলে কান্নায় ভেঙে পড়ে তানজিনা। এ সময় তার পাশে আকলিমার আরও ৪ সন্তান বিলাপ করতে দেখা যায়।
চুনারুঘাট থানার ওসি রাশেদুল হক জানান, তাৎক্ষনিক পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে সুজনকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে। তার পরিবার জানিয়েছে, পথে আকলিমা মারা গেছে।