কামরুল হাসান ॥ হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলায় অপহরণ করে ৮০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে না পেয়ে তানভীর আহমেদ (১৫) নামের এক স্কুলছাত্রকে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় তিন ঘাতককে আটক করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার (২৬ জানুয়ারি) দুপুর ১টায় উপজেলার নুরপুর ইউনিয়নের পশ্চিম নছরতপুর গ্রামে সৈয়দ আলীর পুত্র উজ্জলের বাড়ির পুকুর থেকে তানভীরের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহত তানভীর একই গ্রামের ফারুক মিয়ার পুত্র। সে স্থানীয় আফরাজ আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র।
আটককৃতরা হলো- উপজেলার পশ্চিম নছরপুর গ্রামের সৈয়দ আলীর পুত্র উজ্জল মিয়া (২৫), নুরপুর গ্রামের মলাই মিয়ার পুত্র শান্ত ও বাছিরগঞ্জ বাজারের জলিল কবিরাজের পুত্র জাহিদ মিয়া।
পুলিশ সূত্র জানায়- রোববার (২৪ জানুয়ারি) রাত ৮টায় তানভীর আহমেদকে অপহরণ করে জাহেদ মিয়া, উজ্জল মিয়া ও শান্ত মিয়া। অপহরণ করে তারা তানভীরের বাবার কাছে ফোনে মুক্তিপণ বাবদ ৮০ লাখ টাকা দাবি করে। এ বিষয়টি সঙ্গে সঙ্গে শায়েস্তাগঞ্জ থানা পুলিশকে অবগত করেন নিহতের পরিবার। পুলিশ অপহরণের সাথে জড়িত সন্দেহে রোববার রাতেই জাহেদ ও শান্তকে আটক করে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করে। তাদের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী অপহরণের মাস্টারমাইন্ড উজ্জলকে মঙ্গলবার সকালে আটক করে। জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে আটককৃতদের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী আসামী উজ্জলের পুকুর থেকে তানভীরের লাশ উদ্ধার করা হয়।
স্থানীয়রা জানান, স্কুলছাত্র তানভীর আহমেদ পিতা-মাতার একমাত্র পুত্র সন্তান। তাকে হারিয়ে তারা পাগলপ্রায়। স্বজনদের কান্নায় এলাকার বাতাস ভারি হয়ে উঠেছে।
সূত্র জানায়, তানভীরের পিতা ফারুক মিয়া সম্প্রতি হবিগঞ্জ জেলা শহরে নিজস্ব একটি জমি বিক্রি করেছেন কোটি টাকায়। এই টাকার প্রতি লোভ পড়ে প্রতিবেশি সৈয়দ আলীর পুত্র উজ্জলের। মুলত টাকার জন্য ফারুক মিয়ার একমাত্র পুত্রকে খুন করা হয়েছে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ রবিউল ইসলাম আসামীদের স্বীকারোক্তির বরাত দিয়ে বলেন- স্কুল ছাত্র তানভীরকে গলায় ফাঁস ও বুকে ছুরি মেরে হত্যা করে লাশ গুম করার জন্য পুকুরে ফেলা হয়।
শায়েস্তাগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অজয় চন্দ্র দেব ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, মুক্তিপণ না পেয়ে অপহরণকারীরা স্কুলছাত্রকে হত্যা করে লাশ গুম করার জন্য পুকুরে ফেলে দেয়। আসামীদের আটক করে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করলে তারা হত্যাকান্ডে নিজেদের জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে হত্যাকান্ডের বর্ণনা দিয়েছে।