বানিয়াচংয়ে দুই গ্রামের ভয়াবহ সংঘর্ষের ঘটনা সালিশে নিষ্পত্তি ॥ সংঘর্ষের জন্য মসজিদের মাইক ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা
আক্তার হোসেন আলহাদী, বানিয়াচঙ্গ থেকে ॥ বানিয়াচংয়ে মজলিশপুর ও কামালখানী গ্রামের লোকজনের ভয়াবহ সংঘর্ষের ঘটনাটি সালিশে নিষ্পত্তি করা করা হয়েছে। শনিবার সকাল ১১টায় বানিয়াচঙ্গ আইডিয়েল কলেজ মাঠে হবিগঞ্জ-২ আসনের এমপি আলহাজ্ব অ্যাডভোকেট আব্দুল মজিদ খান এর সভাপতিত্বে সালিশ বিচারে ২ গ্রামের বিরোধ নিষ্পত্তি করা হয়।
সূত্রে জানা যায়, গত ১৮ ডিসেম্বর সকাল সাড়ে ৮টায় বানিয়াচংয়ের কানিভাঙ্গা জলাশয়ে বাঁধ দেয়াকে কেন্দ্র করে মাইকে ঘোষণা দিয়ে কামালখানী ও মজলিশপুর গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এতে উভয় পক্ষের অর্ধশত নারী-পুরুষ আহত হন। এ রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনায় উভয় পক্ষকে আসামী করে ‘পুলিশ এসল্ট’ মামলা দায়ের করে বানিয়াচং থানা পুলিশ। ২ গ্রামের এ সংঘর্ষের বিষয়টি নিষ্পত্তি করতে উদ্যোগ নেন এমপি অ্যাডভোকেট আব্দুল মজিদ খান। এ লক্ষ্যে গত ২০ ডিসেম্বর রাতে বানিয়াচং বড়বাজার প্রেসক্লাবে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গকে নিয়ে সালিশ বিচারের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। এতে উভয়পক্ষ সম্মতি গ্রহণ করে। এরই প্রেক্ষিতে গতকাল শনিবার হাজার হাজার মানুষের উপস্থিতিতে সালিশ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সালিশ বিচারে উল্লেখযোগ্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. সাখাওয়াত হোসেন জীবন, বানিয়াচং উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ আবুল কাশেম চৌধুরী, সাবেক চেয়ারম্যান শেখ বশির আহমেদ, ভাইস চেয়ারম্যান ফারুক আমিন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আমীর হোসেন মাস্টার, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এনামুল হোসেন খান বাহার, আঙ্গুর মিয়া, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা হায়দারুজ্জামান খান ধন মিয়া, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ মিজানুর রহমান খান, ২নং উত্তর-পশ্চিম ইউপি চেয়ারম্যান ওয়ারিশ উদ্দিন খান, ১নং উত্তর-পূর্ব ইউপি চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন, ৩নং দক্ষিণ-পূর্ব ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ হাবিবুর রহমান, মুজিবুল হোসেন মারুফ, বিশিষ্ট লেখক কাজী মুফতি আতাউর রহমান, অধ্যক্ষ মাওলানা মোবাশ্বির আহমদ, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ শাহজাহান মিয়া, আওয়ামী লীগ নেতা শাহ নেওয়াজ ফুল মিয়া প্রমুখ।
সালিশে আলোচনাক্রমে গৃহিত সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেন এমপি অ্যাডভোকেট আব্দুল মজিদ খান। সিদ্ধান্তে বলা হয়- বিরোধপূর্ণ জলাশয়টি কামালখানী ছান্দের। তবে জলাশয়টি আগে যেভাবে ব্যবহার হতো সেভাবেই ব্যবহার করা হবে। মজলিশপুরবাসী কোন বাধা দিতে পারবে না। জলাশয়ের যে অংশ মজলিশপুর অংশে পড়েছে সেটুকু তারা ব্যবহার করবে। ভবিষ্যতে উপজেলার কোন মসজিদ থেকে সংঘর্ষ জাতীয় সংবাদ প্রচার করতে নিষেধ করা হয়েছে। এর পুনরাবৃত্তি ঘটলে যে বা যারা মসজিদের মাইক ব্যবহার করবেন তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সংঘর্ষে যারা আহত হয়েছেন, কিংবা যেসব ক্ষতি হয়েছে সেসব ক্ষতি নিজ নিজ পক্ষ বহন করবে। সেই সাথে উভয় গ্রামবাসীর সর্দারগণকে সালিশে মিলিয়ে দেয়া হয়। সালিশের রায়ে উভয়পক্ষ সন্তোষ প্রকাশ করে।