হত্যাকান্ডে উমেদনগরের আলী আজগরের পুত্র সুয়েব মিয়ার সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে
মতিউর রহমান মুন্না, নবীগঞ্জ থেকে ॥ হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ পৌর এলাকায় ধানের জমি থেকে আবিদ উল্লাহ সেজু নামে এক অটোরিকশা চালকের লাশ উদ্ধারের ঘটনায় সুয়েব মিয়া (৩৩) নামে একজনকে আটক করেছে নবীগঞ্জ থানা পুলিশ। গতকাল রবিবার দুপুরে তাকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। সেজু নিহত হওয়ার রহস্য উদঘাটন করতে তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৫ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেছে পুলিশ।
গ্রেফতারকৃত সুয়েব মিয়া হবিগঞ্জ পৌর এলাকার উমেদনগরের আলী আজগরের পুত্র। পিতা-মাতাসহ দীর্ঘদিন ধরে সুয়েব নবীগঞ্জ পৌর এলাকার তিমিরপুরে বসবাস করছে।
পারিবারিক সূত্র জানায়, নবীগঞ্জ উপজেলার সদর ইউনিয়নের গুজাখাইর গ্রামের সাহিদ উল্লাহ’র পুত্র আবিদ উল্লাহ সেজু গত ২৪ অক্টোবর দুপুরে খাওয়া দাওয়া শেষে অটোরিকশা নিয়ে বাড়ি থেকে বের হন। কিন্তু ওইদিন গভীর রাত হয়ে গেলেও তিনি আর ফিরে আসেননি। এমনকি তার মোবাইল ফোনটিও বন্ধ পাওয়া যায়। পরিবারের ধারণা- রাতের কোনো এক সময় অটোরিকশা চালানো অবস্থায় রিকশাসহ নিখোঁজ হন সেজু। এরপর তার আত্মীয়স্বজন সম্ভাব্য সকল স্থানে যোগাযোগ করেও তার কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি। পরে ২৫ অক্টোবর আবিদ উল্লাহ সেজুর পরিবারের পক্ষ থেকে নবীগঞ্জ থানায় একটি জিডি করা হয়। জিডি’র পর পুলিশ বিভিন্ন স্থানে সেজুর সন্ধান চালায়।
নিখোঁজের ৪ দিনের মাথায় ২৭ অক্টোবর সকালে নবীগঞ্জ পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ডের পূর্ব তিমিরপুর এমআরসি ব্রিক ফিল্ডের পার্শ্ববর্তী এক ধানের জমিতে একটি লাশ পড়ে থাকতে দেখেন স্থানীয়রা। পরে পুলিশকে খবর দিলে একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে সুরতহাল রিপোর্ট তৈরী করে লাশ উদ্ধার করে। এ ঘটনায় ২৮ অক্টোবর আবিদ উল্লাহ সেজুর ভাই রাজু মিয়া বাদী হয়ে হত্যা মামলা দায়ের করেন।
এ ঘটনার পর থেকেই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই শামসুল ইসলাম তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় ও বিভিন্ন সিসিটিভি ফুটেজের মাধ্যমে অপরাধীকে শনাক্ত ও ধরতে বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করেন। গত ৩১ অক্টোবর গভীর রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ও তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় এবং বিভিন্ন সিসিটিভি ফুটেজের সূত্র অনুযায়ী এসআই শামসুল ইসলামের নেতৃত্বে একদল পুলিশ নবীগঞ্জ পৌর এলাকার তিমিরপুরে অভিযান চালিয়ে সুয়েব মিয়া নামে এক অটোরিকশা চালককে আটক করে। রবিবার আদালতের মাধ্যমে তাকে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়। গ্রেফতারকৃত সুয়েব মিয়াকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ও হত্যারহস্য উদঘাটনের জন্য এবং অধিকতর তদন্তের স্বার্থে ৫ দিনের জন্য রিমান্ডের আবেদন করেছেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই শামসুল ইসলাম। তবে এখন পর্যন্ত হত্যাকান্ডের শিকার সেজুর অটোরিকশার কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি।
এ ব্যাপারে নবীগঞ্জ থানার এসআই শামসুল ইসলাম বলেন, প্রাথমিকভাবে হত্যাকান্ডে সুয়েব মিয়ার সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে, আসামীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ও অধিকতর তদন্তের জন্য ৫ দিনের রিমান্ডের আবেদন করা হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে নবীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ আজিজুর রহমান বলেন, নবীগঞ্জ থানা পুলিশ সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে এই হত্যারহস্য উদঘাটন করতে, আমরা আশাবাদী অতি দ্রুত রহস্য উদঘাটন করতে পারবো।