স্টাফ রিপোর্টার ॥ কল্পারম্ভ আর সন্ধিপূজার মধ্যদিয়ে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজার তৃতীয় দিন ‘মহাঅষ্টমী’ শেষ হয়েছে। গতকাল সকালে ষোড়শ উপাচারে অনুষ্ঠিত হয় দেবীর পূজা। ১০৮ পদ্ম এবং প্রদীপ দিয়ে দুর্গতিনাশিনী দুর্গার আরাধনা করা হয়। দেশের বিভিন্ন স্থানে বেশিরভাগ ভক্ত এবার ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে অঞ্জলি নিলেও হবিগঞ্জে অধিকাংশ ভক্ত মন্ডপে গিয়ে অঞ্জলি গ্রহণ করেছেন। করোনা পরিস্থিতির কারণে এবার হবিগঞ্জ শহরের রামকৃষ্ণ মিশনে কুমারী পূজা হয়নি। পাঁচদিনব্যাপী শুরু হওয়া সার্বজনীন উৎসবের আজ মহানবমী। মন্ডপে মন্ডপে বাজবে বিদায়ের সুর। সোমবার দশমী শেষে বিসর্জনের মধ্য দিয়ে সমাপ্তি ঘটবে উৎসবের।
করোনা সংক্রমণের আতঙ্ক আর কার্তিকের নিম্নচাপের প্রভাবে বৃষ্টির কারণে এবারের উৎসবের আনন্দ অনেকটাই ম্লান করেছে। প্রাণঘাতী ভাইরাসের কারণে এবারের পূজায় বেচাকেনাও হয়েছে অনেক কম। খুব একটা ভিড় লক্ষ্য করা যায়নি দোকানপাট ও শপিংমলগুলোতে। অনেকেই অর্থনৈতিক টানাপড়ের মধ্যে গত বছরের পোশাক দিয়ে চালিয়ে নিচ্ছেন। কেউ কেউ কেনাকাটা করলেও বাজেটে কাটছাঁট করতে হয়েছে।
ষষ্ঠী থেকে সপ্তমী হয়ে অষ্টমীতেও ছিল বৃষ্টি। দিনভর থেমে থেমে বাদলা হাওয়া মন্ডপে যেতে বাধা সৃষ্টি করেছে। তবুও উৎসব বলে কথা। অনেকেই বৃষ্টির মধ্যে এসেছেন মন্ডপে। ভোগ দিয়েছেন।
বিশুদ্ধ সিদ্ধান্ত পঞ্জিকানুযায়ী ভোর ৫টা ১৭ মিনিট থেকে সকাল ৭টার মধ্যে দুর্গাদেবীর মহানবমী কল্পারম্ভ ও বিহিত পূজা প্রশস্ত। অনেকের বিশ^াস মহানবমীর দিন হচ্ছে দেবী দুর্গাকে প্রাণ ভরে দেখে নেয়ার ক্ষণ। এই দিন অগ্নিকে প্রতীক করে সব দেবদেবীকে আহুতি দেয়া হয়। অগ্নি সব দেবতার যজ্ঞভাগ বহন করে যথাস্থানে পৌঁছে দিয়ে থাকেন। এই দিনই দুর্গাপূজার অন্তিম দিন। পরের দিন কেবল বিজয়া ও বিসর্জনের পর্ব। নবমী নিশিথে উৎসবের রাত শেষ হয়। নবমী রাত তাই বিদায়ের অমোঘ পরোয়ানা নিয়ে হাজির হয়। এ সব বিবেচনা করে অনেকেই মনে করেন নবমীর দিন আধ্যাত্মিকতার চেয়েও অনেক বেশি লোকায়ত ভাবনায় ভাবিত থাকে মন।
করোনা মহামারীর কারণে সংক্রমণ এড়াতে এ বছর বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠান সংক্ষিপ্ত করা হয়েছে। উৎসব সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো পরিহার করে সাত্ত্বিক পূজায় সীমাবদ্ধ রাখতে হবে বিধায় এবারের দুর্গোৎসবকে ‘দুর্গাপূজা’ হিসেবে অভিহিত করেছে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ।
চন্ডীপাঠ, বোধন এবং দেবীর অধিবাসের মধ্য দিয়ে ২২ অক্টোবর বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হয়েছে বাঙালি শারদীয় দুর্গা পূজা। এবার দেবী এসেছেন দোলায়, যাবেন হাতিতে চড়ে।