এক সময়ের কৃষি প্রধান শায়েস্তাগঞ্জ এখন শিল্প প্রধান এলাকায় পরিণত
মঈন উদ্দিন আহমেদ ॥ এক সময় শায়েস্তাগঞ্জ কৃষি প্রধান এলাকা ছিল। বর্তমানে শিল্প প্রধান এলাকায় পরিণত হয়েছে। এতে কৃষকরা দ্বিধাগ্রস্ত হচ্ছেন। এ এলাকার অধিকাংশ কৃষক পৈত্রিক সূত্রে কৃষিকাজে জড়িত। কিন্তু বর্তমানে এ উপজেলায় শিল্প প্রতিষ্ঠান বেড়ে যাওয়ায় জায়গার মূল্য অনেক বেড়ে গেছে। ফলে অনেক কৃষক তার কৃষি জমি বিক্রি করে দিচ্ছেন। ফলে দিন দিন কৃষি জমির পরিমাণ কমে যাচ্ছে। তাই হাতে ফলানো সবজি এখন আর আগের মতো পাওয়া যায় না। নির্ভর করতে হচ্ছে আমদানি করা খাদ্যশস্যের উপর। শিল্প এলাকায় জমির মূল্য বেশি পাওয়ায় অনেক কৃষক নিজের জমি বিক্রি করে দিয়ে স্থানান্তরিত হচ্ছেন। এক্ষেত্রে স্থানীয় মানুষজন পরিবেশ নিয়েও উদ্বিগ্ন। এখন আর মেঠোপথ চোখে পড়ে না। ইট পাথরের রাস্তাঘাট, বাসা বাড়ি দখল করে নিয়েছে আমাদের মনের আঙ্গিনা। শায়েস্তাগঞ্জের উপর দিয়ে বয়ে গেছে মহাসড়ক। এই পিচ ঢালা পথ চলতে গিয়ে অসতর্কতায় অনেকেই দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন। তাছাড়া এ এলাকায় যে হারে কর্মসংস্থান হওয়ার কথা সে হারে কর্মসংস্থান হচ্ছে না। এটিও এখন ভাবনার বিষয়।
শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলায় বেশ কয়েকটি বাজার রয়েছে। অন্যতম বাঁশের বাজার এ উপজেলার সুতাং অবস্থিত। এখনো ঘানি টেনে সরিষার তেল উৎপাদিত হয় এ উপজেলার ব্রাহ্মণডোরা গ্রামে। ধান উৎপাদনে এখন পর্যন্ত এ উপজেলা যথেষ্ট এগিয়ে। জেলার প্রধান খাদ্যগুদামটিও শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলায় অবস্থিত। এছাড়া পল্লী বিদ্যুতের প্রধান কার্যালয় শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলায়। ইতোমধ্যে শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলা শতভাগ বিদ্যুতায়িত। রেলওয়ে জংশন এ উপজেলাকে এক অনন্য মাত্রায় নিয়ে গেছে। তাই এ উপজেলার অধিবাসীদেরকে নাগরিক সেবা নিশ্চিতে প্রত্যেকের দোড়গোড়ায় সেবা পৌঁছে দিতে বহুমুখি চিন্তাভাবনা ও পরিকল্পিত নগরায়নের দিকে নিয়ে যেতে হবে। পৌর কর্তৃপক্ষকে পরিকল্পিত পরিকল্পনার মধ্য দিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। পাশাপাশি নবসৃষ্ট উপজেলাটিকেও ঢেলে সাজাতে হবে সকল শ্রেণি পেশার মানুষের চাহিদার দিক বিবেচনায় নিয়ে। নেতৃত্বে আনতে হবে শিক্ষা ও নান্দনিকতার সংমিশ্রণ। সৎ, সততা, যোগ্য ও যোগ্যতার বিবেচনায় বেছে নিতে হবে সেই মানুষটিকে যে রাষ্ট্রের উন্নয়নের চাকার সাথে নিজেকে মানিয়ে নিয়ে এগিয়ে যেতে পারে।
© স্বত্ব দৈনিক হবিগঞ্জের মুখ ২০১৯
ওয়েবসাইটটি তৈরী করেছে ThemesBazar.Com