স্টাফ রিপোর্টার ॥ ঘরে কার্ড আছিলো। কিন্তু ট্যাহা আছিলো না। ছাউল কিনার আশা মন থাইক্যা বাদ দেলাইছলাম। পরে জানতাম পারলাম আমার টাকা এমপি সাব দেলাইবা (দিয়ে দিবেন)। অহন আইয়্যা টাকা ছাড়াই ছাউল লইয়্যা (নিয়ে) বাড়ি যাইতাছি। দোয়া দিলাম, আল্লাহ যেন এমপি আবু জাহিরকে অনেক দিন বাছাইয়া রাখইন (বাঁচিয়ে রাখেন)। মঙ্গলবার হবিগঞ্জ শহরের সিনেমা হল রোড এলাকায় এসব কথা বলতে বলতেই বিনামূল্যে পাওয়া বিশেষ ওএমএস’র চাল নিয়ে শ্যামলী এলাকায় নিজের বাসস্থানে ফিরছিলেন হতদরিদ্র ৭৫ বছর বয়সী পান্ডবের মা। তীব্র রোদ্রতাপে তখনও ঘাম ঝড়ছিল তার শরীর দিয়ে। মূল নাম কি, তাও বলতে পারেননি। সংশ্লিষ্ট কাউন্সিলর জানান পান্ডবের মা নামেই তাকে ডাকেন সবাই।
একইভাবে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন কোর্ট স্টেশন এলাকায় ওএমএস’র চাল নিতে আসা একটি বেসরকারি স্কুলের কর্মচারী মর্তুজা খাতুন। তিনি বলেন, ধার-কর্য করে টাকা যোগার করে ১০ টাকা কেজি সরকারি চাল কিনতে এসেছিলাম। এসে জানতে পারি এমপি আবু জাহির দিয়ে দিছেন আমার টাকা। এতে আমি অনেক খুশি হয়েছি। এই টাকা দিয়ে এখন আনাজ-পাতি (সব্জি) ক্রয় করবো।
শুধু এই দুইজনই নন, পুরো রমজান মাস জুড়ে হবিগঞ্জ পৌরসভায় ৯ হাজার ৬০০ জন বিশেষ ওএমএস কার্ডধারী বিনামূল্যেই নিতে পারবেন ১০ টাকা কেজির সরকারি চাল। ইতোমধ্যে মঙ্গলবার ও গত রোবাবার দুইদিনে ওই কার্ডধারীদের ৪ লাখ টাকা ডিলারদেরকে পরিশোধ করেছন হবিগঞ্জ-৩ আসনের এমপি অ্যাডভোকেট মোঃ আবু জাহির।
ইতোমধ্যে জেলার সবচেয়ে কর্মব্যস্ত ও জনবান্ধব রাজনীতিবীদ অ্যাডভোকেট মোঃ আবু জাহির এর এই উদ্যোগ বিভিন্ন মহলে প্রসংশিত হয়েছে। শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পলিটিক্যাল স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. জহিরুল হক শাকিল বলেন, করোনা সংকটে একজন সংসদ সদস্যের এ ধরনের উদ্যোগ প্রশংসার দাবি রাখে। এতে অসহায় মানুষেরা আতে পানি পেয়েছে। করোনা সংকটের শুরু থেকেই লোকজনকে ঘরে ফেরোনোর জন্য ভোর হতে রাত পর্যন্ত হ্যান্ড মাইক হতে নিয়ে হবিগঞ্জের ৩টি উপজেলায় তাঁকে প্রচার চালাতে এবং ত্রাণ বিতরণ করতে দেখেছি। জাতির এ দুর্যোগে একজন জনপ্রতিনিধিকে এভাবে জনগন তাদের পাশে পেলে শুধু সহায়তা না; তাদের সংকট মোকাবেলার মনোবলও দৃঢ় হয়।
এ ব্যাপারে এমপি আবু জাহির বলেন, পবিত্র রমজান মাস উপলক্ষে হবিগঞ্জ পৌরসভায় বিশেষ ওএমএস কার্ডধারী ৪ হাজার অস্বচ্ছল লোককে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে আমার ব্যক্তিগত তহবিল থেকে মোট ৪ লক্ষ টাকা পরিশোধ করেছি। যার ফলে ৪ হাজার মানুষ বিনামূল্যে পাচ্ছেন ১০ কেজি করে চাল। পরবর্তী আগামী বৃহস্পতিবারও ২ হাজার মানুষ হবিগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের পক্ষে এই সুবিধা পাবে। করোনা পরিস্থিতি চলাকালীন পবিত্র এই মাসে আমার ব্যক্তিগত এবং জেলা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে সর্বমোট ৬ হাজার মানুষ বিনামূল্যে পাচ্ছেন ১০ কেজি করে চাল।