মতিউর রহমান মুন্না, নবীগঞ্জ থেকে ॥ চাচা ইমনের স্ত্রীকে দেখতে সুনামগঞ্জে যাওয়ার জন্য খুব আগ্রহী হয়ে সাথে আসে ৪ বছর বয়সী শিশু খাদিজা। কিন্তু মর্মান্তিক দুর্ঘটনা তার জীবনের প্রদীপ নিভিয়ে দিয়েছে। খাদিজাকে হাসপাতালে যখন নেয়া হয়, তখন তার মাথা ও মুখম-ল থেকে রক্ত ঝরছিল। ব্যথায় কাতরাচ্ছিল শিশুটি। সেই মুহূর্তে ওয়ার্ডের বাইরে সাদা কাপড়ে ঢাকা অবস্থায় স্ট্রেচারে পড়ে রয়েছিল শিশুটির মা সুমনা বেগমের (৩৫) নিথর দেহ। তবে খাদিজাও খুব বেশি দেরি করেননি। প্রায় ছয় ঘণ্টা পর তিনিও বিদায় নেন পৃথিবী থেকে। সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চতুর্থ তলায় ৬ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি ছিল খাদিজা। শুক্রবার বেলা সোয়া তিনটার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। সকাল নয়টার দিকে মারা যান খাদিজার মা সুমনা বেগম। সুমনা বরিশাল বিমানবন্দর থানার ক্ষুদ্রকাঠি গ্রামের বাসিন্দা সৌদিপ্রবাসী আবুল হোসেনের স্ত্রী। গতকাল শুক্রবার সুনামগঞ্জে খাদিজার চাচা ইমন আহমদের পাত্রী দেখতে যাওয়ার কথা ছিল তাঁদের। গত বৃহস্পতিবার রাতে শিশুসহ ১২ জন নারায়ণগঞ্জ থেকে মাইক্রোবাসে করে সিলেটের উদ্দেশ্যে রওনা হন। পথে সকাল সাড়ে ছয়টার দিকে তাঁদের বহন করা মাইক্রোবাসটি নবীগঞ্জ কান্দিগাঁও এলাকায় পৌঁছালে চালক নিয়ন্ত্রণ হারান। এ সময় গাড়িটি সড়কের পাশের গাছের সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে দুমড়েমুচড়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই সাতজন পুরুষ ও এক নারীর মৃত্যু হয়। আহত হন গাড়িচালকসহ পাঁচজন। এ ঘটনায় সব মিলিয়ে ১০ জনের মৃত্যু হয়।