স্টাফ রিপোর্টার ॥ হবিগঞ্জ শহরে পিডিবি’র নির্বাহী প্রকৌশলী স্বাগত সরকারের উপর অতর্কিত হামলার ঘটনায় ৩ জনকে আসামী করে হবিগঞ্জ সদর মডেল থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। গতকাল এ মামলাটি দায়ের করেন পিডিবি’র নির্বাহী প্রকৌশলী স্বাগত সরকার। মামলার আসামীরা হলেন- শহরতলীর নোয়াগাঁও জালালাবাদ এলাকার মৃত আফসর উদ্দিন মেম্বারের ছেলে শামীম আলম সিদ্দিকী, একই গ্রামের মৃত কুতুব মিয়ার ছেলে সরফরাজ মিয়া ও শহরের সিনেমা হল রোড এলাকার সিদ্দিক আলীর ছেলে মোঃ কাজল মিয়া। মামলায় অজ্ঞাত আরো কয়েকজনকে আসামী করা হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন হবিগঞ্জ সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ-ওসি মোঃ মাসুক আলী। তিনি বলেন- মামলা দায়েরের পর থেকে আসামীদের গ্রেফতারের জন্য পুলিশ অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে।
মামলায় বাদী অভিযোগ করেন- গত ৮ ডিসেম্বর রাতে নোয়াগাঁও গ্রামের বাসিন্দা মামলার প্রধান আসামী শামীম আলম সিদ্দিকীর অবৈধ টমটম গ্যারেজে অভিযান পরিচালনা করা হয়। এ সময় তার গ্যারেজে ১শ’টি টমটমের ব্যাটারী চার্জে লাগানো অবস্থায় পাওয়া যায়। এ সময় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে গ্যারেজ মালিক শামীম আলম সিদ্দিকীকে ১৮ লাখ ৬২ হাজার ৭৮০ টাকা জরিমানা করেন এবং তার চোরাই বিদ্যুত লাইন বিচ্ছিন্ন করা হয়। এ ঘটনায় বিদ্যুত আইনে মামলা দায়ের করা হয়। ওই মামলার শামীম আলম সিদ্দিকী ১৩ দিন হাজতবাস করেন। এ ঘটনায় ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন শামীম আলম সিদ্দিকী। প্রতিশোধ পরায়ণ হয়ে প্রকৌশলীকে আক্রমন করার পরিকল্পনা করেন শামীম। এই পরিকল্পনার অংশ হিসেবে বুধবার রাত সোয়া ৮টার দিকে পিডিবি’র অফিসে শামীম তার সহযোগীরা ওৎ পেতে থাকেন। নির্বাহী প্রকৌশলী স্বাগত সরকার তার সহকর্মী সহকারী প্রকৌশলী কবির হোসেন ও কম্পিউটার অপারেটর তামান্না ফেরদৌসকে নিয়ে অফিস থেকে বের হয়ে বিদু্যুতের কন্ট্রোল রুমে যাওয়ার সময় অফিসের সামনে শামীম ও তার সহযোগীরা প্রকৌশলীর উপর অতর্কিত হামলা চালায়। এ সময় তিনি তাদের হাত থেকে রক্ষা পেতে দৌঁড় দিয়ে তাঁর অফিসের দিকে গেলে হামলাকারীরা তাকে ধাওয়া করে ধরে মারপিট করে। এমন পরিস্থিতিতে পিডিবি’র অন্যান্য কর্মকর্তারা এগিয়ে আসলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়।
খবর পেয়ে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুল হাসান, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ উল্ল্যা (বিপিএম-পিপিএম সেবা), হবিগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাওখায়াত হোসেন রুবেল, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ রবিউল ইসলাম পিপিএম, হবিগঞ্জ সদর মডেল থানার ওসি মোঃ মাসুক আলী, ওসি তদন্ত দৌস মোহাম্মদ ঘটনাস্থলে যান। এ সময় পুলিশ সুপার ঘটনার সাথে জড়িতদের গ্রেফতারের নির্দেশ দেন। পুলিশ সুপারের নির্দেশ পাওয়ার পর পরই পুলিশ এ ঘটনার সাথে জড়িতদের গ্রেফতারের জন্য বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করে। ঘটনার রাত ১০টায় পুলিশ প্রহরায় নির্বাহী প্রকৌশলীকে হবিগঞ্জ জেলা সদর আধুনিক হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা সেবা প্রদান করা হয়।