
এস কে কাওছার আহমেদ, আজমিরীগঞ্জ থেকে ।। আজমিরীগঞ্জে পবিত্র ঈদুল আযহাকে ঘিরে কামারশালায় বেড়েছে কর্মব্যস্ততা। আজমিরীগঞ্জ শহরের গরুর বাজার সংলগ্ন ‘কামারপট্টি’ নামে পরিচিত এলাকায় কামারদের অন্তত ১৫টি দোকান রয়েছে। দোকানের কাছে যেতেই কানে ভেসে আসে অবিরত হাতুড়ির টুংটাং শব্দ। এই শব্দ জানান দেয় কামারশালায় বেড়েছে কর্মতৎপরতা। বছরের অন্যান্য সময় লোহার সামগ্রীর কদর কম থাকলেও ঈদুল আযহার আগে দম ফেলার ফুরসত থাকে না তাদের। ঈদ যতই ঘনিয়ে আসছে, ব্যস্ততাও বাড়ছে তাদের। সেইসাথে রয়েছে নির্দিষ্ট সময়ে গ্রাহকদের হাতে তাদের জিনিষ তুলে দেয়ার চাপ। মঙ্গলবার (৩ জুন) দুপুরে শহরের কামারপট্টি এলাকায় গিয়ে দেখা যায় এমন চিত্র। তবে অন্যান্য বছরের তুলনায় এ বছর কাজের চাহিদা ও চাপ অনেক কম বলে জানিয়েছেন কামারশালায় কর্মরত স্থানীয় কামার শিল্পীরা।
তাদের দাবি, এখন হাতে বানানো দা, বটি, ছুরির জায়গায় বিভিন্ন দোকানে আধুনিক এসব জিনিষ পাওয়া যায়। এছাড়া লোহা, কয়লার দাম ও শ্রমিকের মজুরি বেড়ে যাওয়ায় গ্রাহকরা এখন আর এসব জিনিষ কামারদের কাছে বানাতে চান না।
আলাপকালে আনছার মিয়া নামে এক ক্রেতা জানান, ‘আগে মাংশ কাটার যে চাপাতি ৮০০ থেকে ১ হাজার টাকায় বানাতে দিতাম আজ সেটা ১ হাজার ৩০০ টাকায় বানিয়েছি।’
মনফর মিয়া নামে আরেক ক্রেতা জানান, ‘জিনিষপত্রের দাম আগের তুলনায় বেড়েছে। আগে যেটা ১ হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকায় নিতে পারতাম এখন সেটা ২ হাজার থেকে ২ হাজার ৩০০ টাকায় নিতে হচ্ছে।
স্থানীয় কামার শিল্পী স্বপন দেব জানান, আগে ঈদের মৌসুমে দিনরাত কাজ ছিলো। কিš‘ বর্তমান সময়ে আধুনিক চাপাতি ও ছুরি পাওয়া যায়। তাছাড়া লোহা ও কয়লার দাম বেশি, সেটা ক্রেতারা বুঝতে চান না। তাই কাজ কম। আগে যেখানে ঈদ মৌসুমে দিনরাত কাজ করেছি এখন শুধু টুকটাক পুরোনো জিনিষ মেরামত করতে আসছেন কিছু ক্রেতা।
রথিশ দেব নামের আরেক দোকানী বলেন, ‘কাজের যে অব¯’া এখন ঈদ মৌসুমে কাজ নেই বললেই চলে। এ পেশা আর বেশিদিন করা যাবে বলে মনে হয় না।’
জন্টু দেব নামে এক কারিগর জানান, ‘ঈদ মৌসুমে আমাদের কাজের চাহিদা থাকে বেশি। কিš‘ বর্তমান সময়ে জিনিষ বানাতে খরছ হয় বেশি, কিš‘ ক্রেতার কাছে সেই জিনিষ বেশি দামে বিক্রি করতে পারি না।’