আবুল কালাম আজাদ, চুনারুঘাট থেকে ॥ পিতাকে যাদুকরে হত্যার সন্দেহে কবিরাজ শনিচরণ সাঁওতাল ওরপে অজিতকে গলা কেটে হত্যা করেছে পুত্র। হত্যার ২০ দিনের মাথায় চুনারুঘাট থানা পুলিশের তদন্তে ক্লুলেস মামলার রহস্য উদঘাটন হয়েছে। পুলিশ হত্যায় ব্যবহৃত ধারালো দাসহ আলামত জব্দ করেছে এবং ঘটনায় অভিযুক্ত একমাত্র আসামীকে গ্রেফতার করেছে। এ বিষয়ে রবিবার দুপুরে চুনারুঘাট থানায় এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান চুনারুঘাট-মাধবপুর সার্কেল এর সিনিয়র সহকারি পুলিশ সুপার মোঃ আজিজুর রহমান সরকার।
তিনি আসামীর বরাত দিয়ে জানান, গত ১২ অক্টোবর উপজেলার দেউন্দি চা বাগানের ফুলছড়ি টিলায় শনিচরণ শাওতাল ওরফে অজিত সাঁওতালকে (৪৫) গলাকেটে হত্যা করে ধান্য জমিতে ফেলে পালিয়ে যায় খুনি। এ ঘটনায় নিহতের ভাই অনিল সাঁওতাল থানায় মামলা দায়ের করলে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় একই এলাকার নকুল ভৌমিজের ছেলে দ্বিপক ভৌমিজকে (২৪) র্যাবের সহায়তায় শনিবার (২ নভেম্বর) রাতে মাধবপুর থেকে গ্রেফতার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে দ্বিপক হত্যাকান্ডের কথা স্বীকার করেছে জানিয়ে এএসপি আজিজুর রহমান সরকার আরও বলেন, নিহত অজিত প্রকাশ শনিচরণ সাঁওতাল কবিরাজ (তান্ত্রিক) পেশায় নিয়োজিত থাকায় নিহতের সাথে আসামী অনুকূল ভৌমিজ প্রকাশ দিপকের পিতা নকুল ভৌমিকের পূর্ব বিরোধ ও মনোমালিন্যতা ছিল। বিগত কয়েক বছর পূর্বে দিপকের পিতা নকুল ভৌমিজ মারা গেলে, অনুকূল ভৌমিজ প্রকাশ দিপক তার পিতার মৃত্যুর জন্য অজিত প্রকাশ শনিচরণ সাঁওতালকে দায়ী করে আসছিল। এ নিয়ে গত ১২ অক্টোবর রাতে অনুকূল ভৌমিজ প্রকাশ দিপক অজিত প্রকাশ শনিচরণ সাঁওতালকে বাজার করে বাড়ি ফেরার পথে একা পেয়ে তার সাথে পূর্ব বিরোধের জের ধরে কথা কাটাকাটি করে। এক পর্যায়ে দিপক উত্তেজিত হয়ে ধারালো দা দিয়ে কুপিয়ে ও গলা কেটে দেহ হতে মাথা বিচ্ছিন্ন করে ফেলে। পরে এ বিচ্ছিন্ন মাথাসহ মৃতদেহ পার্শ্ববর্তী ধানী জমিতে ফেলে দিপক পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের হলে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় দ্বিপক ভৌমিজকে র্যাবের সহায়তায় শনিবার রাতে মাধবপুর থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
জিজ্ঞাসাবাদে দ্বিপক হত্যাকান্ডের কথা স্বীকার করেছে জানিয়ে এএসপি আজিজুর রহমান সরকার আরও বলেন, ঘটনার দিন ওই চা শ্রমিককে বাড়ীর পাশের ধানের জমিতে নিয়ে গলাকেটে হত্যা করে দ্বিপক। গ্রেফতারকৃত দ্বিপক ভৌমিজকে আদালতে পাঠানো হয়েছে বলেও জানান তিনি। ব্রিফিংএ আরও উপস্থিত ছিলেন চুনারুঘাট থানার ওসি মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা লিটন রায়।