স্টাফ রিপোর্টার ॥ বানিয়াচং উপজেলার মন্দরী ইউনিয়নের আগুয়া গ্রামে দু’পক্ষের সংঘর্ষে সিরাজ মিয়া নিহতের ঘটনায় আরো একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। ২২ আগস্ট হবিগঞ্জের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (কগ ঃ ৪) আদালতে এই মামলাটি দায়ের করেন নিহত কাঁচামাল ব্যবসায়ী সিরাজ মিয়ার স্ত্রী শাহেনা বেগম। মামলাটি আমলে নিয়ে বানিয়াচং থানা পুলিশকে প্রতিবেদন দাখিল করার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। মামলায় ১১ জনের নাম উল্লেখসহ আরো ৮/৯ জনকে অজ্ঞাত আসামী করা হয়েছে। মামলার আসামীরা হলেন- কর্ণেল চৌধুরী, শরীফ মিয়া, আমির মিয়া, আল-আমিন, মিজান চৌধুরী, মিজাজ মিয়া, জাফরুল মিয়া, রাশিদ উল্লা, আক্তার মিয়া, অনিক মিয়া ও রঞ্জু মিয়া।
মামলা বিবরণ ও স্থানীয় এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, গত ৮ আগস্ট আগুয়া গ্রামের অটোরিকশা চালক আব্দুল কাদিরের সাথে গাড়ির সিরিয়াল ও যাত্রী ওঠানামা নিয়ে স্ট্যান্ডের ম্যানেজার বদরুল আলম ওরফে বদির ঝগড়া হয়। পরবর্তীতে এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দু’পক্ষের লোকজন দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। সংঘর্ষে সিরাজ মিয়াসহ পর্যাক্রমে ৪ জন নিহত হন। আহত হন আরো অর্ধশতাধিক লোক। ৪ জন হত্যাকান্ডে ঘটনায় ইতিপূর্বে মামলা দায়ের করা হয়। কিন্তু ওই মামলার কার্যক্রমে নিহত সিরাজ মিয়া ও তার পরিবারের লোকজন হতাশ। নিজের স্বামী হত্যার সঠিক বিচার হবে কি না, এ নিয়ে অনেকটা শংকিত নিহত সিরাজ মিয়ার স্ত্রী শাহেনা বেগম। স্বামী হত্যার ন্যায় বিচার পাওয়ার আশায় অবশেষে আদালতের স্মরণাপন্ন হয়ে শাহেনা বেগম ঘটনার সাথে জড়িতদের আসামী করে মামলায় দায়ের করেন। মামলায় তিনি উল্লেখ্য করেন, ঘটনার দিন তার স্বামী সিরাজ মিয়া আগুয়া বাজারে নিজ দোকানে কর্মরত ছিলেন। সংঘর্ষের খবর পেয়ে তিনি ঘটনাস্থলে যান। এ সময় পূর্বে থেকে উৎপেতে থাকা অজ্ঞাতনামাসহ ১নং আসামী কর্ণেল চৌধুরীর নির্দেশে অন্যান্য আসামীরা সিরাজ মিয়ার বিভিন্ন স্থানে আঘাত করে। এতে সিরাজ মিয়া গুরুতর আহত হয়ে ঘটনাস্থলে মারা যান। পরে ময়ন্ত তদন্ত শেষে সিরাজ মিয়ার লাশের দাফন সম্পন্ন হয়। এ ঘটনার পর সিরাজ মিয়ার পরিবার অনেকটা মানবেতর জীবন যাপন করতে থাকে। একমাত্র উপার্জনের মানুষ হারিয়ে মানসিক ভাবে বিপর্যস্থ হয়ে পড়েন সিরাজ মিয়ার স্ত্রী শাহেনা বেগমসহ পরিবারের লোকজন।
মামলার বাদী শাহেনা বেগম জানান, আমাদের না জানিয়ে আমাদের গ্রামের ছোট মিয়া বাদী হয়ে বানিয়াচং থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় আমাকে ২০নং স্বাক্ষী রাখা হয়। এতে মামলার ভবিষ্যত নিয়ে আমরা শংকিত। তাই আমার স্বামীর হত্যার সুষ্ঠু বিচারের জন্য আমি এই মামলাটি দায়ের করেছি।
এ ব্যাপারে মামলার আইনজীবী অ্যাডভোকেট এনামুল হক শাহীন জানান, বিজ্ঞ আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে বানিয়াচং থানা পুলিশকে তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন। মামলার পরবর্তী তারিখ ৬ জানুয়ারি নির্ধারণ করা হয়েছে।