চুনারুঘাট পুলিশের অভিযানে এক ডাকাত গ্রেপ্তার ও গাড়িসহ লুন্ঠিত মালামাল উদ্ধার
চুনারুঘাট প্রতিনিধি ॥ ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের শায়েস্তাগঞ্জের অলিপুরে মালয়েশিয়া থেকে ফেরার পথে প্রবাসীর গাড়ি ডাকাতির ঘটনায় সোহেল মিয়া (৩০) নামে এক ডাকাতকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ডাকাত সোহেল চুনারুঘাট উপজেলার উবাহাটা গ্রামের মৃত হাছান আলীর ছেলে। তাকে বৃহস্পতিবার বিকেলে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
এ তথ্য নিশ্চিত করে বৃহস্পতিবার ১২ সেপ্টেম্বর বিকেলে থানার উপপরিদর্শক এসআই লিটন রায় জানান, গত ৭ সেপ্টেম্বর সুনামগঞ্জ জেলার ছাতক উপজেলার ফকির টিলা এলাকার মৃত মাসুক মিয়ার পুত্র মালয়েশিয়া প্রবাসী মোশাহিদুল ইসলাম (২৮), আরিফুল ইসলাম আরিফ (৩৩), ফয়সাল মাহমুদ রাফি (১৭), শাহ্ মোঃ সারোয়ার (২৮), সাইদুল ইসলাম (২২), খালেদুর রহমান (৩৬), সহ তার স্বজনরা মাইক্রোবাসযোগে ঢাকা থেকে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওয়ানা হন। পথিমধ্যে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের অলিপুর এলাকায় ৮/১০ জনের একদল ডাকাত রাস্তা আটকিয়ে তাদের গতিরোধ করে এবং একটি মিনি পিকআপ গাড়ী প্রবাসীর গাড়ীর সামনে এসে ব্যারিকেড দেয়। সাথে সাথে পিকআপ গাড়ীর পিছনের বডির ত্রিপালের নিচে লুকিয়ে থাকা অজ্ঞাতনামা ৮/১০ জন ডাকাত দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র দা, রামদাসহ তাদের নোহা গাড়ীটি ঘেরাও করে গাড়ীতে আঘাত করতে থাকে। একপর্যায়ে ডাকাতদল দা, রামদা দিয়া ভয়ভীতি দেখিয়ে তাদের জিম্মি করে ফেলে। তখন ডাকাতদেরকে বাঁধা দেওয়ার চেষ্টা করলে ৮/১০ জন ডাকাত গাড়ীতে প্রবেশ করে ১ জন অজ্ঞাতনামা ডাকাত চালকের সীটে বসে যায় এবং গাড়ী চালিয়ে সিলেট রোডের দিকে নিয়ে যায়। ওই সময় ডাকাতদের মধ্যে একজন ডাকাত আরিফুল ইসলাম আরিফকে কুপ দিয়ে গুরুত্বর জখম করে। এক পর্যায়ে ডাকাতরা গাড়ীতে থাকা সকলের হাত, মুখ বেঁধে ফেলে। গাড়ীর ভিতরে থাকা সকলকে মারধর করতে থাকে। পরে ডাকাতরা প্রবাসীর বহন করা গাড়ি নিজেরাই চালিয়ে চুনারুঘাট থানাধীন ৩নং দেওরগাছ ইউনিয়নের অন্তর্গত ঢাকা-সিলেট পুরাতন মহাসড়কের অনুমান ২০০ গজ দক্ষিণ দিকে চাকলাপুঞ্জি চা বাগানের ভিতরে টিলার কিনারে গাড়ী থামিয়ে ডাকাতরা তাদের হাতে থাকা দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র দ্বারা ভয়ভীতি দেখিয়ে গাড়ীতে থাকা উল্লেখিত মালামালসহ গাড়ীটি লুন্ঠন করে নিয়ে যায়। পরে এ ঘটনায় চুনারুঘাট থানায় ডাকাতির মামলা হয়। মামলার পরপরই বিশেষ অভিযানে নামে পুলিশ। উদ্ধার করা হয় প্রবাসীকে বহন করা নোহা ও ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত পিকআপ গাড়ী। গ্রেপ্তার করা হয় সোহেলকে। গ্রেপ্তারের পর ডাকাত সোহেলকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করা হয়।
প্রবাসী জানান দেশে ফিরে ডাকাতের কবলে পড়তে হবে ভাবতে পারিনি। ডাকাতরা আমাকে ও আমার স্বজনদের মারপিট করে সবকিছুই লুটে নেয়। আমি জড়িত সকলের দৃষ্টান্তমুলক বিচার চাই। তিনি আরও বলেন, একটা মহাসড়কে যদি নিরাপত্তা না থাকে তাহলে গ্রামগঞ্জে সাধারণ মানুষের কি হবে?
থানার ওসি হিল্লোল রায় জানান, ডাকাত দলের সদস্য সোহেল মিয়া নামে একজনকে গ্রেপ্তার করে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে এবং ডাকাতিতে ব্যবহৃত গাড়িটি জব্দ করা হয় এবং মাইক্রোবাস নোহা, ৭ টি মোবাইল, নগদ ২৫ হাজার টাকা ও মালয়েশিয়ান রিঙ্গিতসহ লুন্ঠিত মালামাল উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত অন্যান্য ডাকাতদের গ্রেপ্তারের নিমিত্তে পুলিশি অভিযান অব্যাহত আছে।