নুর উদ্দিন সুমন : জেলার চুনারুঘাটে বাড়ি থেকে হাড়িয়ে যাওয়া শতবর্ষী আব্দুল্লাহ নামের এক বৃদ্ধকে চিকিৎসা সেবা দিয়ে প্রায় ৮ ঘন্টার মধ্যে তাঁর পরিবারের হাতে তুলে দিল থানা পুলিশ ও জুড়িয়ার তিন যুবক। জানা গেছে গত ১৩ জুলাই গাদিশাইল শশুর বাড়ি থেকে নিখোঁজ হয়ে যান নওমুসলিম আব্দুল্লাহ নামের এক বৃদ্ধ । তার জন্মস্থান মৌলভীবাজার সদর উপজেলায়। সে মুসলিম গ্রহনের পর চলে আসে চুনারুঘাটের গাদিশাইল। সে দীর্ঘদিন ধরে মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন। এই অবস্থায় গত ১৩জুলাই বাড়ি থেকে নিরুদ্দেশ হয়ে যান ওই বৃদ্ধ । এরপর তাঁর বাড়ির লোক বিভিন্ন জায়গায় বহু খোঁজাখুঁজির পরেও তাঁর কোনও হদিশ মেলেনি। অন্যদিকে, পথভুল চলে আসেন দেওরগাছ ইউনিয়নের জুড়িয়া এলাকায়। তারপর থেকে ভবঘুরের মত ঘুরে বেড়াতে থাকেন ও বৃদ্ধ এবং পড়ে থাকেন ধান্যজমিতে । অবশেষে বিষয়টি নজরে আসে জুড়িয়া এলাকার শাওন, শামীম, নাজিমসহ তিন যুবকের। তাঁদের সহযোগিতায় নিয়ে আসা হয় চুনারুঘাট থানায়। চুনারুঘাট থানার এসআই আবুবকর জানান, জুড়িয়ার তিন যুবক ধান্যজমিতে ওই বৃদ্ধকে উদ্ধার করে খাবার ও ফলমূল কিনে দিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা করে থানায় নিয়ে আসে। পরে তার নাম ঠিকানা জানার চেষ্টা করি, মানসিকভাবে বিধ্বস্ত আবদুল্লাহ তার নাম ছাড়া তেমন কিছুই বলতে পারছিলেন না। পরে শাওন তার ফেইসবুকে নিখোঁজ ব্যক্তির ছবি দিয়ে পোস্ট করেন। তারপরেই তার মেয়ে লাইজু আক্তারের এক বান্ধবীর নজরে পড়ে এবং খবর যায় লাইজুর পরিবারের কাছে। ওইদিনই সন্ধায় তাঁর পরিবারের লোকজন এসে চুনারুঘাট থানা থেকে তাঁকে ফিরিয়ে নিয়ে যান সাথে ছিলেন শাওন, শামীম ও নাজিম । পারিবারিক ও পুলিশ সুত্রে জানাগেছে আব্দুল্লাহ মৌলভীবাজার জেলা সদরের জগশ্রী এলাকার বাসিন্দা। আজ থেকে প্রায় তিন যুগ পুর্বে ইসলাম ধর্ম গ্রহন করে বাড়ি থেকে চলে আসেন। পরে চুনারুঘাটের গাদিশাইল আশ্রয় নেন এবং বিয়ে করেন । বিবাহের পর তার এক কন্যা সন্তান ছাড়াও বাড়িতে আর কেহ নেই। রাস্তার পাশে পড়ে থাকা এমন মানুষকে যেভাবে নাম-পরিচয় জোগাড় করে ফেরত পাঠানোয় ওই তিন যুবক ও পুলিশের প্রতি তাঁরা কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন বৃদ্ধর পরিবার। এদিকে বৃদ্ধ আবদুল্লাহকে ফিরে পেয়ে চোখে আনন্দের জল ঝরতে দেখা দিয়েছে তাঁর স্বজনদের ।
© স্বত্ব দৈনিক হবিগঞ্জের মুখ ২০১৯
ওয়েবসাইটটি তৈরী করেছে ThemesBazar.Com