হবিগঞ্জ জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ফেসবুক পেইজ থেকে জানা গিয়েছে হোটেল, রেস্তোরা, মিষ্টির দোকান খোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন জেলা প্রশাসন হবিগঞ্জ। যার প্রেক্ষিতে হবিগঞ্জ জেলার অনেক নাগরিক প্রতিবাদ এবং নিন্দা জানিয়েছেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে।
জেলা প্রশাসনের উক্ত সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে নিন্দা জানিয়েছেন হবিগঞ্জের সর্বস্তরের জনগণ।
নিন্দা জানিয়েছেন হবিগঞ্জের সন্তান, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এসিস্ট্যান্ট এটর্নি জেনারেল শেখ মোহাম্মদ মাজু মিয়া..।
তিনি বলেছেন এই সিদ্ধান্ত সারা বাংলাদেশের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ কি-না? বলতে চাই রাজধানীসহ ও অন্যান্য জেলাশহরগুলোতে প্রয়োগ করা হয়েছে কি-না? যদি না হয়ে থাকে তবে কেন আমরা হবিগঞ্জবাসি নিলাম, আতœঘাতী নয়তো?
জেলা সিপিবি সাধারণ সম্পাদক পীযূষ চক্রবর্তী, জেলা বাসদ সমন্বয়ক অ্যাডভোকেট জুনায়েদ আহমেদ এবং হবিগঞ্জ জেলা জাসদ সাধারণ সম্পাদক আবু হেনা মুস্তফা কামাল বলেন…
এই সিদ্ধান্ত কখনোই হবিগঞ্জবাসীর জন্য মংগল ভয়ে নিয়ে আসবেনা পক্ষান্তরে জেলার মানুষকে মৃত্যুর দিকে ধাবিত করা হবে। প্রশাসনের উচিত এখনই এরূপ সিদ্ধান্ত বাতিল করা।
হবিগঞ্জ জেলা, বাপা সাধারণ সম্পাদক, তোফাজ্জল সোহেল বলেন – যেখানে মফস্বলের মানুষেরা এমনিতে ঘরে বসে থাকতে চায় না তাদেরকে ভয়ভীতি দেখিয়ে ঘরে রাখতে হয় সেখানে হোটেল রেস্তোরা বাজার খোলে দিয়ে মানুষের অবাধ বিচরণের মাধ্যেমে করোনা বিস্তারের পথ আরোও সুগম হচ্ছে নিসন্দেহে বলেই ধরা যায়। এটি একটি আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত।
কবি ও সাহিত্যক তাহমিনা বেগম গিনি জেলা প্রশাসনের পেইজে মন্তব্য করেছেন..
এই সিদ্ধান্ত কতটুকু যুক্তিসঙ্গত হলো? এই মুহুর্তে ভাববার বিষয়। এমনিতে লক ডাউন মানেনা। আর একবার জেলাপ্রশাসক ভেবে দেখুন। হবিগঞ্জে করোনা রোগীর সংখ্যা বেড়েই চলেছে।
আমি ও বন্ধ রাখার পক্ষে। এই মুহূর্তেই ইফতার সামগ্রীর দোকান খোলা রাখা আত্মঘাতি সিদ্ধান্ত হবে।
দৈনিক আমার হবিগঞ্জ সম্পাদক ও প্রতিষ্টাতা, আমার এমপি সুশান্ত দাস গুপ্ত প্রতিবাদ জানিয়ে বলেছেন জেলা প্রশাসনের এই সিদ্ধান্ত বাতিল করাটাই যুক্তি হবে।
ব্যাংকার দিবাকর পাল বলেন..
হবিগঞ্জে জেলা প্রশাসন ইফতার সামগ্রীর দোকান ও মিস্টির দোকান খোলা রাখার রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে,
এই সিদ্ধান্তে আত্মঘাতী ছাড়া আর কিছুই নয় বলে মনে করছি। গত দুই দিনে হবিগঞ্জে আক্রান্তের সংখ্যা আশংকাজনকভাবে বাড়ছে
তাই প্রশাসনের এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
উন্নয়ন কর্মী এবং হবিগঞ্জ জেলা সংসদের ছাত্র ইউনিয়ন সাবেক সভাপতি মাহমুদা খাঁ নিন্দা জানিয়ে বলেন…
পৃথিবী ব্যাপী মানুষ যখন করোনার প্রকোপ থেকে বাঁচতে ঘরে বসা ঠিক তখন কি করে হবিগঞ্জ জেলা প্রশাসন শহরের মানুষকে মৃত্যুর দোয়ারে ঢেলে দিচ্ছেন? নারায়ণগঞ্জের পরেই হবিগঞ্জ করোনার তীর্থস্থান হতে যাচ্ছে এই মূহুর্তে এই সিদ্ধান্ত মোটেই কাম্য নয়।
সিনিয়র ডাক্তার প্রভাশ চন্দ দেব বলেন.. মানুষকে যেখানে ঘরে রাখার দরকার সেখানে বাহিরে আসার নিমন্ত্রন। এটা ঠিক না।
হবিগঞ্জের সন্তান ও সিলেট রাগীব আলি মেডিকেলে কর্মরত ডা.শামীমা আক্তার ও ডাক্তার আকিব আব্দুল্লাহ বলেন…
যেখানে করোনা মহামারী আকারে সারাদেশ সহ আমাদের জেলায় ও মহামারী আকারে ধারণ করেছে, যেখানে ডাক্তাররা চিকিৎসা সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন সেখানে এমন সিদ্ধান্তের জেলা প্রশাসন নিতে পারেন না!
আরোও যারা নিন্দা জানিয়েছেন….
সাংবাদিক ও সিপিবি নেতা ইমদাদ খান, আইনজীবী জসিম আহমেদ, আইনজীবী ফুয়াদ খান, প্রকৌশলি আহমেদ তারেক, সহকারী শিক্ষক মো, জুয়েল, সহকারী শিক্ষক আনাস আহমেদ, সারাহ সুওয়ার স্টোরের মালিক এম আর কে মারুফ, মাস্টারসের শিক্ষার্থী ইশরাত জেরিন শান্তা, শিক্ষার্থী প্রতীক রয়, ইমতিয়াজ জসিম, প্রান্ত নাগ রুদ্র, প্রসেনজিৎ দেব সুজন, আতিকুর রহমান পলাশ, শিপন আহমেদ, সুবর্ণা আহমেদ, তাহমিদা শান্তা, বিপ্রতীপ জনি, শারানা বিদ্যা, আব্দুল লতিফ, শিক্ষিকা তমশ্রী, নারী ব্যবসায়ী নিগার, শিক্ষক রুপা মোদক।
এদিকে জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ফেসবুক পেইজে ২শ’র অধিক নাগরিক নিন্দা জানিয়ে কমেন্ট করেছেন। নিন্দা জানিয়েছেন করোনা প্রতিরোধেহবিগঞ্জবাসী গ্রুপে আরোও ৬৯ জন নাগরিক।
তাদের সকলের দাবি অনতিবিলম্বে জেলা প্রশাসনের উচিত হবে এই সিদ্ধান্ত বাতিল করে জেলাকে পূর্ণ লক ডাউনের আওতায় নিয়ে আসা।
অন্যথায় প্রতিদিন আক্রান্তের সংখ্যা গণনার পাশাপাশি লাশের সংখ্যা গননা করতে আমাদের প্রস্তুত থাকতে হবে।
রমজান মাসে ইফতার সামগ্রীর দোহাই দিয়ে হোটেল রেস্টুরেন্ট মিষ্টির দোকান খোলা রাখতে হবে এগুলো কোন সিদ্ধান্তই হতে পারেনা।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ, বিভিন্ন ধরনের প্রচার-প্রচারণা, আহ্বান সহ নানান পদক্ষেপ গ্রহণ করে সেখানে মানুষকে ঘরে থাকার আহবান করছেন ঠিক সেই মুহুর্তে এই সিদ্ধান্ত নাগরিকদের জীবিনকে হুমকির দিকে ধাবিত করা নয় কি!!
মাহমুদা খাঁ।